গত বছরের ডিসম্বরে কাতার বিশ্বকাপে সর্বশেষ ব্রাজিলের জার্সিতে দেখা গিয়েছিল নেইমারকে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয় ব্রাজিল। বিশ্বকাপ শেষে ব্রাজিল তিনটি প্রীতি ম্যাচ খেললেও, সেই তিন ম্যাচে চোটের কারণে খেলতে পারেননি নেইমার।
নেইমারবিহীন সেই তিন ম্যাচে দুটিতেই হেরেছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ সামনে রেখে ঘোষিত দলে ফেরেন নেইমার। চোট নিয়ে এখনো শঙ্কা থাকলেও ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে এই ম্যাচ দিয়ে ফের ব্রাজিলের জার্সিতে মাঠে নামবেন নেইমার। আর বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটিতে নতুন এক মাইলফলক নিজের করে নেওয়ার সুযোগ আছে নেইমারের।
নেইমারের সামনে থাকা সুযোগটি হলো ফুটবলের রাজা পেলেকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটটি নিজের করে নেওয়ার। এর আগে গত বছরের কাতার বিশ্বকাপে গোল করে পেলেকে ছুঁয়েছিলেন নেইমার। শেষ আটে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে দুর্দান্ত এক গোলে ব্রাজিলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন নেইমারই।
এ গোলেই ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে পেলের করা ৭৭ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন নেইমার। সেদিন ম্যাচের ১০৫ মিনিটে প্রায় একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভেদ করেন ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। জাতীয় দলের জার্সিতে ১২৪ ম্যাচ খেলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন আল হিলাল তারকা। পেলের অবশ্য এই কীর্তি গড়তে লেগেছিল ৯২ ম্যাচ।
৭৫ গোল নিয়ে কাতারে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিলেন নেইমার। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ায় মাইলফলক স্পর্শ করার অপেক্ষাটা বেড়েছিল তাঁর। তবে শেষ ষোলোয় দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করে পেলের আরও কাছাকাছি আসেন নেইমার। আর ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পান মাইলফলক স্পর্শ করা গোলটিও। পেলেকে ছোঁয়ার কৃতিত্বটা সেভাবে উপভোগ করতে পারেননি এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। নেইমারের গোলে এগিয়ে গেলেও পরে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া এবং টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে লুকা মদরিচের দল।
বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর নেইমারকে বার্তাও দিয়েছিলেন পেলে। ফুটবলের রাজা বলেছিলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে দিনটি (ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচের দিনটি) আমাদের জন্য সুখকর ছিল না। তবে তুমি সব সময় আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। অনেকে তোমার মতো হতে চায়। ৫০ বছর আগে যে রেকর্ড গড়েছিলাম, একমাত্র তুমি ছাড়া আর কেউ এর পিছু তাড়া করতে পারোনি। তুমি করে দেখিয়েছ, প্রিয়।’
রেকর্ড স্পর্শ করলেও পেলের জীবদ্দশায় সেই রেকর্ডকে পেছনে ফেলতে পারেননি নেইমার। তাই দায়িত্ব যে শেষ হয়ে যায়নি, তা–ও নেইমারকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি, ‘(ব্রাজিলের হয়ে) তোমার দায়িত্ব এখনো শেষ হয়নি। আমাদের অনুপ্রাণিত করতে থাকো।’ আজ রেকর্ডটি ভাঙতে পারলে হয়তো সবার আগে নেইমার পেলেকেই স্মরণ করবেন।