জামাল ভূঁইয়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক, অথচ দেশের ঘরোয়া শীর্ষ প্রতিযোগিতার সামনে আসরে খেলতে পারবেন কি না, সেটি এখনো অনিশ্চিত। ৩৪ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার এখন বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগে খেলতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) দিকে তাকিয়ে আছেন।
এবারের দলবদলে আবাহনী ছাড়া কোনো ক্লাবই জামালের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। কিন্তু সেই আবাহনীতেও তাঁর খেলা হচ্ছে না। জামালের দাবি, আবাহনী শেষ মুহূর্তে কম টাকায় খেলতে বলায় তিনি নিজেই ‘না’ করে দিয়েছেন। তারপরও আগামী প্রিমিয়ার লিগে কোনো না কোনো দলে খেলার প্রবল ইচ্ছা তাঁর। গত পরশু আবাহনীর সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ঝামেলার বিষয়ে জানিয়ে বাফুফেকে একটা চিঠি দিয়েছেন জামাল।
যেহেতু আবাহনীর কম টাকায় খেলার ব্যাপারে রাজি হননি, জামাল চাচ্ছেন আবাহনী যেন তাঁকে ধারে অন্য কোনো ক্লাবে খেলতে পাঠায়, ‘আমি পরশু বাফুফেকে চিঠি দিয়েছি। আবাহনী আমাকে প্রথমে ৩০ শতাংশ কম টাকায় খেলতে বলেছিল। আমি রাজি ছিলাম। তারা চুক্তির কাগজপত্রও পাঠিয়েছিল। কিন্তু দলবদলের শেষ মুহূর্তে আমাকে বলে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি যেন বেতন আরও ৬০ শতাংশ কমাই। মানে আমাকে ৯০ শতাংশ কম টাকায় খেলতে বলেছিল। আমি রাজি হইনি। আমি এখন চাই, বাফুফে যেন আমাকে ধারে অন্য কোনো ক্লাবে পাঠাতে আবাহনীকে রাজি করায়।’
আগামী মাসে ২০২৪-২৫ মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
আবাহনীতে নাম লেখানোর আগে জামাল ছিলেন আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল সোল দে মায়োতে। কিন্তু সেখানে তাঁর অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না। চার ম্যাচ খেলেই চলে এসেছেন। আর্জেন্টাইন ক্লাবের কাছ থেকে বেতন না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন জামাল। পরে ফিফায় নালিশ দিয়ে পেয়েছেন ক্ষতিপূরণ। কিন্তু আর্জেন্টিনা থেকে গত মৌসুমের দ্বিতীয় পর্বে আবাহনীতে যোগ দেওয়ার পর মাঠে নামতে পেরেছেন মাত্র ৫ ম্যাচ।
জামালের সময়টা ভালো যাচ্ছে না জাতীয় দলেও। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোর একটিতেও তাঁকে পুরো সময় খেলাননি কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। কয়েকটি ম্যাচে তো একাদশেই ছিলেন না। ভুটানের বিপক্ষে থিম্পুতে বাংলাদেশের সর্বশেষ দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে খেলেছেন মোটে ৩২ মিনিট (যথাক্রমে ১৭ ও ১৫ মিনিট)।
যেটুকু খেলেছেন, তাতেও বিশেষ কিছু করতে দেখা যায়নি। ২০২৩ সালের মার্চে সিলেটে সেশেলসের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়েন প্রথমবারের মতো। এরপর আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপ বাছাই মিলিয়ে বাংলাদেশ যে ১৭টি ম্যাচ খেলেছে, এর তিনটিতে একাদশে ছিলেন না। মাত্র ২টি ম্যাচে খেলেছেন ৯০ মিনিট। প্রথম একাদশে অনিয়মিত হয়ে পড়ার পর ভুটানের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই ম্যাচেই সবচেয়ে কম সময় মাঠে ছিলেন জামাল।
লাল-সবুজের জার্সিতে ১১ বছরে রেকর্ড ৮২ ম্যাচ খেলা জামাল নিজেই বুঝতে পারছেন না, কেন খেলার সুযোগ কমে যাচ্ছে তাঁর, ‘আমি কেন একাদশ থেকে বাদ পড়ছি, কেন বেশি সময় খেলতে পারছি না, সেটা আমি জানি না। কোচই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি মনে করি, পারফরম্যান্স দিয়েই ১১ বছর দেশের হয়ে খেলেছি। এখনো দেশকে কিছু দেওয়ার আছে আমার।’