সবকিছুরই প্রথম আছে।
কিংসলি কোমানের জন্যও এমন কিছু এবারই প্রথম। মজার ব্যাপার, কোমানের জন্য যা এবার প্রথমবার, তাঁর ক্লাব–সতীর্থ হ্যারি কেইনের জন্য সেটাই যেন নিয়তি!
ব্যাপারটা খুলে বলার আগে কোমানের কথায় আসা যাক। বায়ার্ন মিউনিখের এই ফরাসি উইঙ্গারকে চাইলে বিশ্বের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান ফুটবলারও বলতে পারেন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিএসজির হয়ে কোমানের পেশাদার ফুটবলে অভিষেক। এরপর গত ১১ মৌসুমের প্রতিটিতেই জিতেছেন লিগ শিরোপা। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য অ্যাথলেটিক’ জানিয়েছে, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে এটা সর্বকালের সেরা রেকর্ড।
শুধু কি তা–ই? ২০১৫-১৬ মৌসুমে কোমান দুটি লিগ শিরোপা জিতেছেন। কীভাবে? সে মৌসুমে জুভেন্টাসের হয়ে একটি ম্যাচ খেলে দুই বছরের জন্য ধারে বায়ার্নে যোগ দিয়েছিলেন। জুভেন্টাস ও বায়ার্ন ২০১৫-১৬ মৌসুমে লিগ জেতায় কোমানের নামের পাশেও এ দুটি শিরোপা যোগ হয়।
অর্থাৎ, ১১ মৌসুমে ১২ লিগ শিরোপা জিতে এবারের মৌসুম শুরু করেছিলেন ২৭ বছর বয়সী এই তারকা। কিন্তু এবারের মৌসুমে আর লিগ জেতা হলো না কোমানের, যা তাঁর ক্যারিয়ারেই প্রথম অভিজ্ঞতা!
বুন্দেসলিগায় বায়ার্নের আধিপত্য ভেঙে এবার নিজেদের ১২০ বছরের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লিগ জিততে যাচ্ছে বায়ার লেভারকুসেন। ৫ ম্যাচ হাতে রেখে লিগ টেবিলে দ্বিতীয় বায়ার্নের সঙ্গে ১৬ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে জাবি আলোনসোর দল। গতকাল ভেরডার ব্রেমেনকে ৫-০ গোলে হারিয়ে লিগ শিরোপা জয় নিশ্চিত করে ক্লাবটি। এতে বায়ার্ন উইঙ্গার কোমানের ফি মৌসুম লিগ জয়ের রেকর্ডটাও আর অক্ষত রইল না।
পিএসজিতে ২০১২-১৩ মৌসুমে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু কোমানের। ক্লাবটির হয়ে সে মৌসুম এবং ২০১৩-১৪ মৌসুমেও লিগ শিরোপা জিতেছেন তিনি। এরপর ২০১৪ সালে জুভেন্টাসে যোগ দিয়ে তিনি লিগ জেতেন অভিষেক মৌসুমেই। ২০১৫ সালে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার পর গত ৮ মৌসুমেই ক্লাবটির হয়ে লিগ শিরোপা জিতেছেন কোমান।
এবার আসা যাক তাঁর সতীর্থ হ্যারি কেইনের ব্যাপারে।
বুন্দেসলিগার এবারের মৌসুমে কেইন এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা (২৯ ম্যাচে ৩২ গোল)। কিন্তু দল শিরোপা জিততে না পারলে এসব ব্যক্তিগত সাফল্যে কী আসে–যায়! কেইন অবশ্য হতাশায় আগ বাড়িয়ে বলতেই পারেন, যতই গোল করি, কোনো লাভ নেই! কারণ? ওই তো শিরোপাখরা।
প্রায় ১৪ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে কেইনের যে দলগত কোনো ট্রফি নেই। কেইন ২০১০ সালে জুলাইয়ে তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম পেশাদার চুক্তি করেন টটেনহামের সঙ্গে। এরপর ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ মৌসুমে ধারে খেলেন লেটন ওরিয়েন্ট ও মিলওয়ালের হয়ে। এ দুটি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে কোনো ম্যাচ খেলেননি। ২০১২-১৩ মৌসুম থেকে টটেনহামের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে মোট ১১ মৌসুম খেলেও ট্রফিশূন্য কেইন।
ভাগ্য পাল্টাতে এবারের মৌসুম শুরুর আগে যোগ দিয়েছিলেন বায়ার্ন মিউনিখে। কিন্তু তা কি পাল্টানো গেল? কেইনকে এবারও লিগ শিরোপাশূন্য থাকতে হচ্ছে, এমনকি অন্য সব প্রতিযোগিতা মিলিয়েও তাঁর দলগত কোনো ট্রফি নেই। ব্যাপারটাকে নিয়তির নির্মম পরিহাস ছাড়া আর কীই-বা বলবেন!
অর্থাৎ কেইনের জন্য যেটা অনেকটাই নিয়তি, কোমানের জন্য সেটাই এবার প্রথম অভিজ্ঞতা।