আল-হিলালের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচটা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ভুলে যেতে চাইবেন। ২-০ গোলে হেরেছে তাঁর ক্লাব আল–নাসর। নিজে তো ভালো খেলেননি, উল্টো নানাভাবে বিতর্কে জড়িয়েছেন। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের মাথার ওপর লাফিয়ে হেড করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে উল্টো তাঁকেই গলা ঝাপটে ধরে ফেলে দিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে সাইডলাইনে সাজিয়ে রাখা পানির বোতলে লাথি মেরেছেন, গ্যালারিতে ‘মেসি, মেসি’ স্লোগান ওঠায় মেজাজ হারিয়ে অশোভন অঙ্গভঙ্গিও করেছেন। আর রোনালদোর এই ‘অঙ্গভঙ্গি’ ভালোভাবে নিচ্ছেন না সৌদি আরবের ফুটবলভক্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পর্তুগিজ তারকাকে সৌদি আরব থেকে বের করে দেওয়ার দাবি উঠেছে।
ম্যাচের পর খেলোয়াড়েরা যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, তখন গ্যালারিতে দর্শকেরা রোনালদোর উদ্দেশে ‘মেসি, মেসি’ বলে স্লোগান তুলেছিল। ঠিক সে সময় গ্যালারির দিকে না তাকিয়েই রোনালদো অশোভন ভঙ্গি করেন। যেটিকে সৌদি ফুটবল দর্শকেরা ‘প্রকাশ্যে সাধারণের সঙ্গে অশালীন আচরণের’ অপরাধ হিসেবে দেখছেন।
সৌদি আরবের একজন আইনজীবী নউফ বিন আহমেদ টুইটারে লিখেছেন, ‘তিনি সৌদি আরবের পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে রোনালদোর বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে অভিযোগ দাখিল করবেন। নউফ মনে করেন, রোনালদো সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রকাশ্যে অশালীন আচরণ করেছেন, যেটি বড় অপরাধ।
নউফ লিখেছেন, ‘আমি রোনালদোর এ আচরণকে প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে অশালীন আচরণের অপরাধ হিসেবে দেখছি। তিনি এ আচরণের মধ্য দিয়ে মানুষকে অসম্মান করেছেন। এটা এমন একটি অপরাধ, যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারে। কোনো বিদেশি নাগরিক যদি এমনটা করে থাকেন, তাহলে তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো যেতে পারে।’
আল-হিলালের বিপক্ষে ম্যাচের পর রোনালদোর বাজে আচরণ সৌদি টেলিভিশনে প্রচারিত সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়াবিষয়ক অনুষ্ঠান ‘অ্যাকশন ইয়া দাওরি’তে দেখানো হয়েছে অনেকক্ষণ ধরে। তবে আল–নাসর কর্তৃপক্ষ অ্যাকশন ইয়া দাওরির সাংবাদিককে রোনালদোর আচরণের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে। ক্লাবটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘রোনালদোর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি সত্য নয়। তিনি যা করেছেন, সেটি কোনোভাবেই ইচ্ছাকৃত কিছু নয়।’
তবে আল–নাসরের এ ব্যাখ্যা মেনে নিচ্ছেন না সৌদি আরবের অন্যতম শীর্ষ ক্রীড়া সাংবাদিক ওসমান আবু বকর। তিনি বলছেন, ‘রোনালদো যে কাণ্ড করেছেন, সেটি জনসাধারণকে অসম্মান করার অপরাধ। এটা অনৈতিক এবং অভদ্র আচরণ। সৌদি ফুটবল ফেডারেশনের উচিত রোনালদোর চুক্তি বাতিলে ব্যবস্থা নেওয়া।’
মজার ব্যাপার, রোনালদো বিতর্ক ছড়ালেন আল-হিলাল ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচেই। গুঞ্জন আছে, এই আল-হিলালই আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে বিশাল অঙ্কের প্রস্তাব দিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য জানাচ্ছে, মেসিকে দেওয়া আল–হিলালের সেই প্রস্তাব নাকি রোনালদোর বেতনের দ্বিগুণ।