নির্ঘুম রাত কাটিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন বায়ার্ন কোচ টুখেল
নির্ঘুম রাত কাটিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন বায়ার্ন কোচ টুখেল

গার্দিওলার সিটিকে থামাতে সেরা প্রস্তুতি ‘ঘুম’টাই হচ্ছে না টুখেলের

২০১৬ সালে বায়ার্ন মিউনিখ ছেড়ে ম্যানচেস্টার সিটির দায়িত্ব নেন পেপ গার্দিওলা। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন, তার পুরোটা কি পূরণ করতে পেরেছেন? প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, লিগ কাপ (কারাবাও কাপ), এফএ কমিউনিটি শিল্ড—ইংলিশ ফুটবলে ৪ ঘরোয়া ট্রফিই জিতিয়েছেন। কিন্তু সিটির প্রকল্পের মূল লক্ষ্য চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা এখনো এনে দিতে পারেননি।

২০২১ সালে লক্ষ্যের খুব কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু চেলসির কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরে হৃদয়ভঙ্গ হয়েছিল। পোর্তোয় অল ইংলিশ ফাইনালে হারের দায় এখনো গার্দিওলার ওপর বর্তায়। তাঁর ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার না খেলানোর খেসারত দিতে হয়েছে সিটিকে। চেলসিকে ইউরোপ–সেরার স্বীকৃতি এনে দেওয়া গোলটা কাই হাভার্টজের পা থেকে এলেও পুরো মাঠ চষে বেড়িয়েছেন এনগোলো কান্তে। গার্দিওলার অতি চালাকি ধরতে পেরে সে রাতে তাঁর গলায় যিনি দড়ি বেঁধেছিলেন, সেই টমাস টুখেলের সঙ্গেই আজ রাতে লড়তে হচ্ছে তাঁকে।

চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস জেতানো টুখেল এখন বায়ার্নের দায়িত্বে। সাত বছর পর আজ চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে সিটির ডাগআউটে দাঁড়িয়ে পুরোনো দলের বিপক্ষে রণকৌশল সাজাবেন গার্দিওলা। সময়ের অন্যতম সেরা দুই কোচ এর আগে ১০ বার মুখোমুখি হয়েছেন। পোর্তোর সেই ফাইনালে টুখেলের কৌশলের কাছে মার খেলেও গার্দিওলার সাফল্যের পাল্লাই ভারী। সব মিলিয়ে গার্দিওলাকে টুখেল হারাতে পেরেছেন তিনবার।

ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আজ আরেকটি ধ্রুপদি লড়াইয়ের আগে তাই গার্দিওলার সিটিকে নিয়ে থামানোর ছক কষতে ব্যস্ত টুখেল। ব্যস্ততা এতটাই যে গত কয়েক দিন নির্ঘুম রাত কেটেছে তাঁর। ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলেন জার্মান কোচ বলেছেন, ‘এই ম্যাচের আগে সবচেয়ে ভালো প্রস্তুতি হতে পারত ঘুম। কিন্তু ম্যাচ নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমানোর সময়ই পাইনি। নির্ঘুম রাত কাটিয়ে সকাল সকাল দলকে নিয়ে ট্রেনিং গ্রাউন্ডে যেতে হয়েছে।’

ফল যা-ই হোক, সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে ঘুমাতে চান টুখেল, ‘ম্যাচ শেষে যত দ্রুত সম্ভব বিছানায় যেতে চাই। আশা করি, আমি ঘুমাতে পারব।’

ম্যানচেস্টারে পৌঁছে গেছেন সাদিও মানে–সার্জ নাব্রিরা

গত বছর চেলসি থেকে ছাঁটাই হওয়ার আগে প্রিমিয়ার লিগে গার্দিওলার সিটির কাছে দুই লেগেই হেরেছেন টুখেল। সিটিজেনদের সাম্প্রতিক ফর্মও তাঁর ভয়ের কারণ হতে পারে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বশেষ ৮ ম্যাচেই জিতেছে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। সর্বশেষ ৪ ম্যাচে আর্লিং হলান্ড, ফিল ফোডেন, জ্যাক গ্রিলিশ, হুলিয়ান আলভারেজরা করেছেন ২১ গোল! তাঁদের গোলক্ষুধাও বায়ার্নের আতঙ্কের কারণ হতে পারে।

বিপরীতে ইউলিয়ান নাগলসমানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে অম্লমধুর অভিজ্ঞতা হয়েছে টুখেলের। বায়ার্নের কোচ হিসেবে ৩ ম্যাচের ২টিতে জিতেছেন, হেরেছেন অন্যটিতে। জার্মান কাপ থেকে ছিটকে পড়ায় হারটা একটু বেশিই পুড়িয়েছে তাঁকে।

সিটির অনুশীলনে ফুরফুরে মেজাজে আর্লিং হলান্ড ও বের্নার্দো সিলভা

তবে গার্দিওলা বা তাঁর দলের কাছ থেকে শেখার কিছু নেই বলেই মত টুখেলের, ‘পেপ (গার্দিওলা) যা করে, তা অনন্য। কিন্তু ওর কাছ থেকে কিছু শেখার আছে বলে মনে করি না। আমাদের নিখুঁত ম্যাচ খেলতে হবে। এটা অন্যতম বড় পরীক্ষা। সিটিকে সমস্যায় ফেলতে আমরা সমাধানের পথ খুঁজে বের করব।’