বয়স তাঁর ৩৭ বছর। তেমন কোনো চোট নেই। এত দিনও ছিল না। চাইলেই খেলা চালিয়ে যেতে পারেন আরও কিছুদিন। এমনকি একটি ক্লাবের তাঁকে পাওয়ার আগ্রহও আছে। খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সব রকমের অনুকূল পরিবেশ থাকলেও দিয়েগো গদিনের ভাবনা ভিন্ন।
আতলেতিকো মাদ্রিদ ও উরুগুয়ের এই তারকা ডিফেন্ডার সুস্থ-সবল থাকতেই বুটজোড়া তুলে রাখতে চেয়েছিলেন, আর সেটাই করেছেন এবার। দুই দশকের পেশাদার ক্যারিয়ারকে আজ বিদায় বলে দিয়েছেন গদিন।
৯ মৌসুম আতলেতিকোয় কাটানো গদিন শেষবেলায় খেলেছেন আর্জেন্টাইন ক্লাব ভেলেস সার্সফিল্ডে। আজ হুরাকানের বিপক্ষে ভেলেসের ১–০ হারের ম্যাচ খেলে অবসর নেন গদিন। ক্লাব ফুটবলে আতলেতিকো এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে উরুগুয়েকে নেতৃত্ব দেওয়া গদিন পেশাদার ক্যারিয়ারে মোট ৮৮২টি ম্যাচ খেলেছেন।
জিতেছেন একটি কোপা আমেরিকা, দুটি ইউরোপা লিগ, তিনটি উয়েফা সুপার কাপ, একটি লা লিগাসহ মোট ১৫টি ট্রফি। ডিফেন্ডার হিসেবে খেললেও ৫২টি গোল আছে গদিনের, যার মধ্যে আছে ২০১৩–১৪ মৌসুমের লা লিগার শেষ দিনে বার্সেলোনার বিপক্ষে আতলেতিকোর সমতাসূচক গোল। সেবার বার্সার চেয়ে তিন পয়েন্ট এগিয়ে থেকে লিগ জেতে গদিনের দল।
ওই এক ম্যাচই শুধু নয়, আতলেতিকো গদিনকে মনে রেখেছে আরও বেশি কিছু স্মরণীয় মুহূর্তের জন্যও। ২০১০ পরবর্তী সময়ে দিয়েগো সিমিওনের দল ইউরোপীয় ফুটবলে যে শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল, সেটির ভরকেন্দ্রে ছিলেন গদিন।
আজ ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে ম্যাচ শেষে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন গদিন। আর্জেন্টিনার একটি টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অবশ্য নিজের সন্তুষ্টির কথাও বলেন, ‘অবসরের সিদ্ধান্তটা আমি এভাবেই নিতে চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম সুস্থ থেকে বিদায় নিতে। অনেকের কাছে অবাক লাগতে পারে। তবে কিছুদিন ধরেই এটা নিয়ে আমি ভাবছিলাম।’
ফুটবল ছেড়ে সামনের দিনে পরিবারকে সময় দেবেন জানিয়ে গদিন বলেন, ‘আমার এখনকার প্রাধান্য হচ্ছে উরুগুয়েতে পরিবারকে সময় দেওয়া। আমি সম্প্রতি বাবা হয়েছি। আমি বিশ্রাম নিতে চাই, ফুটবলের বাইরে অন্যান্য দিক উপভোগ করতে চাই। আমার চেষ্টা ছিল, মাঠ থেকে যেন ভালো ভাবমূর্তি নিয়ে বিদায় নিতে পারি।’
এর আগে রয়টার্স জানিয়েছিল, উরুগুয়ের ক্লাব নাসিওনাল গদিনকে দলে নেওয়ার চিন্তা করছে।
৯ মৌসুম আতলেতিকোয় কাটানো গদিন স্প্যানিশ ক্লাবটি ছেড়েছিলেন ২০১৯ সালে। এরপর এক বছর ইন্টার মিলান, দুই বছর কালিয়ারি এবং ছয় মাস ব্রাজিলিয়ান ক্লাব আতলেতিকো মিনেইরোতে ছিলেন। আর উরুগুয়ের হয়ে ৪টি বিশ্বকাপ খেলার পথে ছিলেন ২০১১ কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন এবং ২০১০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট দলের সদস্য।