ইকুয়েডর ম্যাচের পর থেকেই তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। লিওনেল মেসি শেষ পর্যন্ত বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়েই ছিল যত কৌতূহল। ম্যাচের আগের দিনও এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি কোচ লিওনেল স্কালোনি। বলেছেন, শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করেই তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে শেষ পর্যন্ত স্কালোনির সিদ্ধান্ত হতাশই করেছে মেসি ভক্তদের।
মেসিকে স্কালোনি এদিন শুধু একাদশের বাইরেই রাখেননি, বরং স্কোয়াডেই রাখেননি। অর্থাৎ খেলা শুরু হওয়ার আগেই এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে এই ম্যাচে মেসির আর মাঠে নামা হবে না। মেসিকে ছাড়া অবশ্য বলিভিয়ার বিপক্ষে জয় পেতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা শেষ পর্যন্ত জিতেছে ৩-০ গোলে। দলের হয়ে গোল করছেন এনজো ফার্নান্দেজ, নিকোলাস তালিয়াফিকো এবং নিকোলাস গনসালেস। এ নিয়ে বিশ্বকাপের পর খেলা ৬ ম্যাচের প্রতিটিতে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচগুলোতে আর্জেন্টিনা ১৭ গোল করলেও হজম করেনি কোনো গোল।
লাপাজে প্রতিপক্ষ দল নয়, বরং মাঠটিই ছিল আর্জেন্টিনার বড় বাঁধা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ২২৫ মিটার ওপরে হওয়ায় বেশিরভাগ সময়ই অক্সিজেনের অভাবে নাভিশ্বাস উঠে খেলোয়াড়দের। এবারও অক্সিজেন মাস্ক সঙ্গে নিয়েই বলিভিয়া গেছে আর্জেন্টিনা দল। এমনকি এমিলিয়ানো মার্তিনেজ অক্সিজেনের অভাবে বিপাকে পড়ার কথাও জানান। মেসিকে বাইরে রাখার পেছনে এটিও একটি বড় কারণ ছিল।
এর আগে ইকুয়েডরের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে চোটের শঙ্কা নিয়ে মাঠ ছাড়েন মেসি। লাপাজের উচ্চতা, মেসির মানিয়ে নিতে না পারা, বয়স এবং চোট- সব মিলিয়ে মেসিকে বাইরে রাখাকেই উপযুক্ত সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়েছে স্কালোনির। তবে সে সিদ্ধান্ত নিয়ে কোচকে আক্ষেপে পুড়তে দেননি অন্যরা। লাপাজের উচ্চতা নিয়ে যে ভীতি ছিল সেটাকে জয় করেছে আর্জেন্টিনা।
এদিন শুরু থেকেই যথারীতি বলের দখল রেখে খেলায় মনোযোগ দেয় আর্জেন্টিনা। তবে প্রথম দিকে একটু সতর্কই মনে হচ্ছিল দলটিকে। হয়তো উচ্চতা নিয়ে আগে থেকে যে উদ্বেগ ছিল সেটা এবং মেসির না থাকা এতে ভূমিকা রেখেছে। এ সময় দূরপাল্লার শটে একাধিকবার বলিভিয়াকে চমকে দেওয়ার চেষ্টা করে আর্জেন্টিনা। অন্য দিকে বলিভিয়া চেষ্টা করেছে ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে এগিয়ে যেতে।
যদিও দ্রুত ম্যাচে ফিরে এসে বলিভিয়াকে সে সুযোগ দেয়নি আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে ১৩ মিনিটে এনজোর দুর্দান্ত এক শট আঙুল ছুঁয়ে ঠেকিয়ে দেন বলিভিয়ার গোলরক্ষক। তবে ৩১ মিনিটে ঠিকই গোল আদায় করে নেয় এনজো। হুলিয়ান আলভারেজের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে আনহেল দি মারিয়া সেটি পাঠান বক্সে। দারুণ ফিনিশিংয়ে দলকে এগিয়ে দেন চেলসি মিডফিল্ডার।
৩৯ মিনিটে বলিভিয়ার খেলোয়াড় রবার্তো ফার্নান্দেজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে আরও চাপ পড়ে দলটি। এরপরই দি মারিয়ার ফ্রি কিক থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করে দলকে এগিয়ে দেন তালিয়াফিকো। এই দুই গোল নিয়েই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। বিরতির পরও দাপট ছিল আর্জেন্টিনার। তবে দুই গোলে এগিয়ে থাকায় কিছুটা মন্থর হয়ে যায় খেলা। এরপরও তৃতীয় গোলটি ঠিকই আদায় করে নিয়েছে তারা। এই গোলটি আসে নিকোলাস গনসালেসের কাছ থেকে। আর শেষ পর্যন্ত বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনা মাঠ ছেড়েছে ৩-০ গোলের জয়ে। এর আগে বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচে মেসির গোলে ইকুয়েডরকে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা।