কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে পর্তুগাল বিদায় নেওয়ার পর ভেজা চোখে মাঠ ছেড়ে গেছেন রোনালদো
কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে পর্তুগাল বিদায় নেওয়ার পর ভেজা চোখে মাঠ ছেড়ে গেছেন রোনালদো

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দাবি, ‘রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা’র শিকার রোনালদো

এমন বাজে বছর ক্যারিয়ারে আগে কখনো কাটিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো? মনে হয় না। ২০২২ যেকোনো বিচারেই পর্তুগিজ তারকার সবচেয়ে খারাপ বছর। গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কোচ এরিক টেন হাগের সঙ্গে তাঁর বনেনি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আগের মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ চারে থাকতে পারেনি, তাই চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলা হয়নি তাদের। রোনালদোর ব্যাপারটা ভালো লাগেনি। তিনি ইউরোপা লিগে খেলতে চাননি। গ্রীষ্মকালে হন্যে হয়ে খুঁজেছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলা কোনো ক্লাব। কিন্তু পাননি। অগত্যা তাঁকে থেকে যেতে হয় ওল্ডট্রাফোর্ডেই।

বিশ্বকাপের আগে দিয়ে তো রীতিমতো বোমাই ফাটিয়েছেন। পিয়ার্স মরগানের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ টেন হাগকে সরাসরি অভিযুক্ত করেছিলেন, করেছিলেন কিছু বিতর্কিত মন্তব্য। ফলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাঁকে আর রাখেনি। বিশ্বকাপ চলার সময়ই ইউনাইটেডের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর।

রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান

বিশ্বকাপটাও ভালো যায়নি। ১টি গোল করেছেন। কিন্তু ঠিক ‘রোনালদোসুলভ’ ছিলেন না গ্রুপ পর্বে। দ্বিতীয় রাউন্ডের শুরুতে তো কোচের সঙ্গে ঝামেলাতেই জড়িয়ে পড়লেন। পর্তুগাল কোচ তাঁকে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠেই নামাননি। তাঁর বদলে গনসালো রামোসকে নামালে তিনি হ্যাটট্রিকই করে বসলেন। পর্তুগাল রোনালদোর প্রভাব ছাড়াই জিতল ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে। কোয়ার্টার ফাইনালে অবশ্য মরক্কোর বিপক্ষে তাদের হারতে হলো ১-০ গোলে। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপটা এতটা বাজে কাটাতে চাননি রোনালদো। মরক্কোর বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের রোনালদোর কাঁদতে কাঁদতে মাঠের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া যেন ছিল ফুটবল–ইতিহাসের একটি অধ্যায়েরই পরিসমাপ্তি।

রোনালদোর এমন অবস্থায় মন খারাপ রোনালদো-ভক্তদের। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান রোনালদোর কড়া ভক্ত। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক কারণেই রোনালদোর এমন পরিণতি। পর্তুগিজ তারকা রাজনীতির শিকার।

২০২২ রোনালদোর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে বছর

সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এরদোয়ানের দাবি, ‘ওরা রোনালদোকে নষ্ট করেছে। এটা দুর্ভাগ্যের। ওর ওপর রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রোনালদোর মতো ফুটবলারকে বসিয়ে রাখা, ম্যাচের ৩০ মিনিট বাকি থাকতে নামানো অপমানের শামিল। এটা করাই হয়েছে রোনালদোকে মানসিক ধাক্কা দিতে। ওর শক্তিই কার্যত কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট অবশ্য রোনালদোর ওপর সেই ‘রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা’র কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

আপাতত ক্লাবহীন রোনালদো। বিশ্বকাপের পর থেকে তিনি একেবারেই চুপ। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, তিনি বিরাট অর্থে যেতে পারেন সৌদি আরবের ক্লাব আল-নাসরে। সেটি নাকি মোটামুটি পাকাই। তবে এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু শোনা যায়নি।