হ্যাটট্রিক করা দিয়াজ যেন আকাশে উড়তে চাইলেন
হ্যাটট্রিক করা দিয়াজ যেন আকাশে উড়তে চাইলেন

চ্যাম্পিয়নস লিগ

ম্যান সিটির উড়ে যাওয়ার রাতে দিয়াজের হ্যাটট্রিকে লিভারপুলের জয়

স্পোর্তিং লিসবন ৪: ১ ম্যান সিটি

লিভারপুল ৪: ০ লেভারকুসেন

সময় খারাপ হলে বুঝি এমনই হয়! একের পর চোটে বিপর্যস্ত ম্যানচেস্টার সিটি এখন মাঠেও পড়েছে বড় ধরনের বিপর্যয়ে। কারাবাও কাপে বিদায় নেওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে বোর্নমাউথের বিপক্ষে হার। আজ সুযোগ ছিল স্পোর্টিং লিসবনের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জয়ের ফেরার।

কিন্তু এই ম্যাচেও সিটির ভাগ্যে জুটল না জয়ের স্বাদ। উল্টো চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচটিতে স্পোর্তিং লিসবনের বিপক্ষে ৪–১ গোলে হেরেছে তারা। হঠাৎ করে দেখলে এই ফল যে কারও অবিশ্বাস্য লাগতে পারে।

২০১৬ সালের অক্টোবরের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এবারই প্রথম চার গোল হজম করেছে ক্লাবটি। পাশাপাশি ২০১৮ সালের এপ্রিলের পর এবারই প্রথম টানা তিন ম্যাচে হারল সিটি।

এদিন হারের যন্ত্রণা আরও বেড়েছে আর্লিং হলান্ড পেনাল্টি মিস করায়। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁর নেওয়া পেনাল্টি শট ওপরের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। পাশাপাশি সিটিকে উড়িয়ে লিসবনের কাছ থেকে বিদায়ও নিয়ে নিলেন দলটির কোচ রুবেন আমোরিম, যা পেপ গার্দিওলাসহ প্রিমিয়ার লিগের অন্য কোচদের জন্য সতর্কবার্তাও হয়ে থাকল। আমোরিমের পরবর্তী গন্তব্য প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

অন্যদিকে সিটির বিধ্বস্ত হওয়ার রাতে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে লিভারপুল। ঘরের মাঠে লুইস দিয়াজের হ্যাটট্রিকে বায়ার লেভারকুসেনকে ৪–০ গোলে হারিয়েছে তারা।

লিসবনের হয়ে হ্যাটট্রিক করা গয়োকেরেস

লিসবনের মাঠে আজ ৪ মিনিটে ফিল ফোডেনের গোলে শুরুটা দারুণভাবেই করেছিল সিটি। কিন্তু অইটুকুই! এরপর শুধুই লিসবনের নতুন ইতিহাস লেখার গল্প। প্রথমার্ধে অবশ্য সমতা ফিরিয়েই সন্তুষ্ট ছিল লিসবন। তবে গল্পটা তারা বদলে দেয় ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। নিয়মিত বিরতিতে গোল পেতে থাকে পর্তুগালের ক্লাবটি। এই অর্ধে তিন গোল আদায় করেছে তারা। যার মধ্য দিয়ে নিজের হ্যাটট্রিকও পূরণ করেছেন লিসবনের ভিক্তর গয়োকেরেস। হারের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গার্দিওলা বলেছেন, ‘৪–১ গােলে হারের পর বেশি কিছু বলার নাই। স্পোর্তিং লিসবনকে অভিনন্দন।’

একই রাতে অ্যানফিল্ডে ম্যাচের আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন লেভারকুসেন কোচ জাবি আলোনসো। একসময় লিভারপুলের অন্যতম সেরা তারকাদের একজন ছিলেন আলোনসো। দলটির হয়ে ২০০৫ সালে ‘মিরাকল অব ইস্তাম্বুল’র জন্ম দিয়ে ইউরোপ–সেরা হওয়ার অন্যতম নায়কদের একজন ছিলেন আলোনসো।

ফলে তাঁর ভিন্ন ভূমিকায় অ্যানফিল্ডে ফেরা নিয়ে আগ্রহ ছিল ফুটবলপ্রেমীদের। ম্যাচে অবশ্য লিভারপুলের বিপক্ষে শুরু থেকে সংগ্রাম করেছে লেভারকুসেন। প্রথম মিনিট থেকেই লেভারকুসেনের বক্সের আশপাশে ছিল বল। জার্মান ক্লাবটিকে এ সময় প্রতি–আক্রমণেই বেশি নির্ভর করতে হচ্ছিল।

যদিও শুরুতে প্রতিপক্ষ রক্ষণে খুব কমই ঘেঁষতে পেরেছে তারা। অন্যদিকে লিভারপুল আক্রমণগুলো গুছিয়ে করলেও লেভারকুসেন বক্সের আশপাশে গিয়ে খেই হারাচ্ছিল বারবার। এমনকি ফ্রি–কিক থেকেও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত কোনো গোল ছাড়াই বিরতিতে যেতে হয় দুদলকে।  

প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও সেই একই চিত্র। লিভারপুলের একের পর এক আক্রমণের বিপরীতে লেভারকুসেনের সুদৃঢ় রক্ষণ। পাশাপাশি প্রতি–আক্রমণগুলোকেও পাখির চোখ করছিল তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ম্যাচের ৬১ মিনিটে ভাঙে লেভারকুসেনের রক্ষণ দুর্গ।

কার্টিস জোন্সের দুর্দান্ত এক থ্রু পাস ধরে গোল করেন লুইস দিয়াজ। এই গোলই যেন বদলের ম্যাচের চিত্র। গোলটির রেশ কাটার আগেই ২ মিনিট পর অসাধারণ এক হেডে লিভারপুলের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কোডি গাকপো। এরপর আরও দুই গোল করে নিজের হ্যাটট্রিকও পূরণ করে নেন দিয়াজ। আর লিভারপুল পায় ৪–০ গোলের দারুণ এক জয়।