ফিফার টাকায় ক্রয়সংক্রান্ত অনিয়মের কারণে বাফুফের অর্থ কমিটির প্রধান হিসেবে সালাম মুর্শেদীও ঝামেলায় পড়েছেন। ১৩ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীর। এ নিয়ে সালাম মুর্শেদী গতকালই প্রথম আলোকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। আজ এ ব্যাপারে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত বলেছেন।
গতকাল রাতে প্রথম আলোকে সালাম তাঁর জরিমানার ব্যাপারে বলেছিলেন, ‘ক্রয়সংক্রান্ত অনেক কাগজপত্রে আমাকে সই করতে হয়। বাফুফের কর্মচারীরা যা দেয়, সেটার ওপরই কাজ করি। অনেক সময় স্ক্যান করা সইও ব্যবহৃত হয়। যদি দায়িত্বে অবহেলা হয়, জরিমানা দিয়ে দেব। তবে এর মানে এই নয় যে সেটা ইচ্ছাকৃত হয়েছে।’
আজ এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছেন সালাম মুর্শেদী। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফিফার নৈতিকতাসংক্রান্ত অ্যাডজুডিকেটরি কমিটি যে শুনানির আয়োজন করেছিল, সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে যে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছিল, তার দুটিই খারিজ হয়ে গেছে। সেখানে নিজস্ব আইনজীবীদের মাধ্যমে যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন সালাম। তবে অর্থ কমিটির প্রধান হিসেবে তাঁকে ন্যূনতম আর্থিক জরিমানা গুনতে হচ্ছে।
বাফুফের প্যাডে পাঠানো বিবৃতিতে সালাম বলেছেন, ‘ফিফার নৈতিকতা কমিটির অ্যাডজুডিকেটরি চেম্বার কর্তৃক অধিকতর তদন্তের পর আমার বিপক্ষে আনা মোট তিনটি অভিযোগের মধ্যে অনৈতিক কার্যক্রম এবং জালিয়াতি বা মিথ্যাচারের মতো গুরুতর দুটি অভিযোগের কোনো ভিত্তি পায়নি ফিফা। ক্রয়প্রক্রিয়ায় চারজনের সই ছিল, তার মধ্যে দুজনকে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। যেহেতু আমি অর্থ কমিটির প্রধান, তাই আমাকে জরিমানা গুনতে হচ্ছে।’
ফিফার তহবিলের অপব্যবহার ও বিভিন্ন ক্রয়ে অনিয়ম করে সে ব্যাপারে ভুয়া দলিল উপস্থাপনের অভিযোগে গত বছরই সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য ফুটবল-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা তাদের প্রতিনিধি বাংলাদেশে পাঠিয়ে এ ব্যাপারে তদন্ত করেই আবু নাঈম সোহাগকে শাস্তি দিয়েছিল। আরও অধিকতর তদন্ত করে সোহাগের শাস্তির মেয়াদ এক বছর বেড়েছে। তাঁর জরিমানার পরিমাণ প্রায় ২৬ লাখ টাকা।
একই সঙ্গে বাফুফের সাবেক প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেন ও সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ করে জরিমানার সঙ্গে ২ বছরের জন্য ফুটবল–সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বাফুফের ক্রয় ও স্টোর কর্মকর্তা ইমরুল হাসান শরীফকে অবশ্য নিষেধাজ্ঞা বা আর্থিক জরিমানা করা হয়নি। তাঁকে এ ব্যাপারে ফিফার তত্ত্বাবধানে এ–সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইমরুল হাসান যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত না করেন, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।