ইংল্যান্ডকে তৃতীয় গোল এনে দেন অ্যালেসিয়া রুশো
ইংল্যান্ডকে তৃতীয় গোল এনে দেন অ্যালেসিয়া রুশো

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে ইংল্যান্ড

২০১৫-এর পর ২০১৯—পরপর দুটি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে টানা তৃতীয় সেমিফাইনালে আর আক্ষেপের গল্প নয়, ইংল্যান্ডের মেয়েরা লিখলেন প্রাপ্তির গল্প। যে গল্প প্রথমবার ফিফা নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার।

আজ সিডনির অলিম্পিক স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। আগামী রোববার বিশ্বকাপ শিরোপার লড়াইয়ে ইংলিশদের প্রতিপক্ষ আরেক ইউরোপীয় দেশ স্পেন।

ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের ৪ নম্বরে থাকা ইংল্যান্ড তিনবারের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালিস্টের পাশাপাশি ইউরোপীয় ফুটবলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও। তুলনায় ১০ নম্বর র‍্যাঙ্কিংয়ের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জায়গা করেছিল এবারই প্রথম। তবে আজকের ম্যাচে স্যাম কারদের জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে ছিল গ্যালারির বিপুলসংখ্যক দর্শক উপস্থিতি।

ইংল্যান্ডের সঙ্গে পেরে ওঠেনি অস্ট্রেলিয়া

ম্যাচে গোলের প্রথম ভালো সম্ভাবনাও তৈরি করে অস্ট্রেলিয়াই। পুরো ফিট না থাকায় আগের ম্যাচগুলোয় অধিনায়ক কার নেমেছিলেন বদলি হিসেবে। সেমিফাইনালে শুরুর একাদশে নেমে সপ্তম মিনিটেই গোলের কাছাকাছি পৌঁছে যান চেলসিতে খেলা এই ফরোয়ার্ড। পা বাড়িয়ে তাঁর শট রুখে দেন ইংল্যান্ড গোলরক্ষক ম্যারি আর্পস।

কিছুক্ষণ পর অস্ট্রেলিয়াও গোল হজম থেকে বাঁচে গোলরক্ষকের দৃঢ়তায়। ইংল্যান্ডের জর্জিয়া স্টানওয়ে অস্ট্রেলিয়ান গোলরক্ষক ম্যাকেঞ্জি আরনল্ডকে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি।

দুই গোলরক্ষকের দারুণ দুটি সেভের ম্যাচটি অবশ্য পরের দিকে দেখেছে এক এক করে চার গোল। যার প্রথমটি ৩৬ মিনিটে, ইংল্যান্ডের। বল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান রক্ষণে বাইলাইন থেকে পেছনে বাড়ান অ্যালেসিয়া রুশো, ভালো জায়গায় পেয়ে বুঝেশুনে দূরের পোস্টের ডান কোনা দিয়ে বল জালে পাঠান এলা টুন।

প্রথমার্ধে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন এলা টুন

এই এক গোল নিয়ে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড। এবারের বিশ্বকাপে যে তিনটি ম্যাচে ইংল্যান্ড প্রথমার্ধে ছিল, তার কোনোটিই হারেনি। এবার সেমিফাইনালেও এগিয়ে যাওয়ার পর রক্ষণ দৃঢ়তায় আবারও ফাইনাল দেখছিল ইংলিশরা।

তবে দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যেই গোল হজম করে ফেলে তারা। ৬৩ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া জোরালো শটে অস্ট্রেলিয়াকে ১-১ সমতায় ফেরান কার। সিডনি অলিম্পিক স্টেডিয়ামের গ্যালারি জেগে ওঠে আরও একবার।

অস্ট্রেলিয়াকে সমতায় ফেরান অধিনায়ক স্যাম কার

এর ৮ মিনিট পরই অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার উজ্জীবিত গ্যালারিকে স্তব্ধ করেন লরেন হেম্প। এই গোলে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার এলি কার্পেন্টারেরই দায় বেশি। ইংলিশ ডিফেন্ডার মিলি ব্রাইট লম্বা করে বল বাড়ান হেম্পের দিকে, তবে বল নাগালে নেওয়ার সুযোগ ছিল পাহারায় থাকা কার্পেন্টারের। তিনি বিপদ মুক্ত করতে না পারলে বল নিয়ন্ত্রণে নেন হেম্প, এরপর দূরের পোস্ট লক্ষ্য করে যে শট নেন, তা গোলরক্ষকের হাতে লাগলেও দিক পাল্টায়নি। বল যায় জালে।

ম্যাচে দ্বিতীয়বার পিছিয়ে পড়ার পর অস্ট্রেলিয়া মনোযোগ বাড়ায় আক্রমণে। আর সেটি করতে গিয়ে ইংল্যান্ডের প্রতি-আক্রমণ আরও ধারালো হয়ে ওঠে। তেমনই এক আক্রমণে ৮৬ মিনিটে ইংল্যান্ডকে তৃতীয় গোল এনে দেন রুশো।

প্রথমবার ফাইনালে ওঠার আনন্দ ইংল্যান্ডের মেয়েদের

যোগ করা ৬ মিনিটসহ ম্যাচের বাকি ১০ মিনিটে আর দুই গোলের ব্যবধান কমাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। তাদের প্রথম ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন মাড়িয়ে ফাইনালে ওঠার আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে ইংল্যান্ড।