ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বর্তমান স্কোয়াড বিশ্বের সবচেয়ে দামি
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বর্তমান স্কোয়াড বিশ্বের সবচেয়ে দামি

স্কোয়াড গড়তে ১০০ কোটি ইউরো খরচ করেছে যেসব ক্লাব

সেপ্টেম্বরের প্রথম দিনেই ইউরোপীয় ফুটবলে দলবদলের দরজা বন্ধ হয়ে গেলেও গত ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খোলা ছিল সৌদি আরবের। অনেকের ধারণা ছিল, প্রো লিগকে নক্ষত্রপুঞ্জ বানাতে সৌদি ক্লাবগুলো যেভাবে টাকা ঢালছে, তাতে হয়তো এবার ইউরোপকে ছাড়িয়ে যাবে।

তবে তেমনটা হয়নি। চমক দেখালেও স্কোয়াড সাজানোর খরচে শীর্ষ ১৫ তেও নেই সৌদির কোনো ক্লাব। উল্টো দলবদলের সময়সীমার শেষ ভাগে এসে খরচের খেল দেখিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সদ্য সমাপ্ত গ্রীষ্মকালীন দলবদল শেষে ইউনাইটেডের যে স্কোয়াড, তার দাম ১১৫ কোটি ১০ লাখ ইউরো।

বর্তমান স্কোয়াড গড়তে শত কোটি ইউরো ব্যয় করেছে আরও ৩টি ক্লাব—চেলসি, ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজি। ফুটবল পরিসংখ্যানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্পোর্টস স্টাডিজ (সিআইইএস) তাদের সাপ্তাহিক সংকলনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

৪৩০তম সংস্করণ গতকাল নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে সিআইইএস। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান স্কোয়াড পর্যালোচনার পর দলবদলের খরচে (বোনাস, ভাতা ও ক্লাবের লক্ষ্য পূরণ সাপেক্ষে অন্যান্য আর্থিক পুরস্কারসহ) বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি ক্লাবের তালিকা প্রকাশ করেছে; যেখানে শীর্ষ দশের আটটিই ইংলিশ ক্লাব।

ইংল্যান্ডের আটটি ক্লাব হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি, ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনাল, টটেনহাম হটস্পার, লিভারপুল, নিউক্যাসল ইউনাইটেড ও ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেড।

এদের মধ্যে নিউক্যাসলকে বড় চমকই বলা যায়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মালিকানায় আসার পর ক্লাবটি দেদারসে টাকা ঢালতে শুরু করেছে। তাদের বর্তমান স্কোয়াডের মূল্য ৬৬ কোটি ১০ লাখ ইউরো। ইংল্যান্ডের বাইরে শীর্ষ দশে থাকা দুটি ক্লাব হলো ফ্রান্সের পিএসজি ও স্পেনের রিয়াল মাদ্রিদ।

সৌদি মালিকানায় আসার পর নিউক্যাসল খরচের খেল দেখাতে শুরু করেছে

আর্থিক সংকটে থাকা বার্সেলোনা আছে ১৯ নম্বরে। কাতালান ক্লাবটির বর্তমান স্কোয়াডের দাম ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরো। শীর্ষে থাকা ইউনাইটেড শুধু ডিফেন্ডার কিনতেই বার্সার পুরো স্কোয়াডের চেয়ে বেশি খরচ করেছে। এমনকি নেইমারকে কিনে চমক দেখানো সৌদির আল হিলালেরও (১৮তম) এক ধাপ নিচে আছে জাভি হার্নান্দেজের দল। ইউরোপের বাইরে শীর্ষ বিশে থাকা একমাত্র  ক্লাবও আল হিলাল (৩৮ কোটি ২০ লাখ ইউরো)। লিওনেল মেসির পর সের্হিও বুসকেতস, জর্দি আলবার মতো তারকাদের কিনলেও শীর্ষ ১০০ ক্লাবের মধ্যে নেই ইন্টার মায়ামি।

খেলোয়াড়দের পজিশন বিবেচনায় নিলে গোলকিপার কেনার খরচে এগিয়ে আছে লিভারপুল (৭ কোটি ৩০ লাখ ইউরো), ডিফেন্ডার কেনায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (৩৮ কোটি ৩০ লাখ ইউরো), মিডফিল্ডারে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ (৪৪ কোটি ৭০ লাখ ইউরো) আর ফরোয়ার্ডে পিএসজি (৫৫ কোটি ৭০ লাখ ইউরো)।

মিডফিল্ডার কিনতে সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে রিয়াল মাদ্রিদ

বিশ্বের ১৯টি লিগের ক্লাব শীর্ষ ১০০ তে জায়গা করে নিয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৯টি ক্লাব ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের। তালিকায় জায়গা হয়নি শুধু নবাগত লুটন টাউনের। এরপরেই আছে ইতালিয়ান সিরি ‘আ’ (১৫টি ক্লাব) ও স্প্যানিশ লা লিগা (১২টি ক্লাব)। ফ্রেঞ্চ লিগ আঁ ও জার্মান বুন্দেসলিগা আছে যৌথভাবে চারে। দুই লিগেরই ১১টি করে ক্লাব সিআইইএসের শীর্ষ ১০০ তে জায়গা পেয়েছে।

অ–ইউরোপীয় ক্লাবগুলোর মধ্যে প্রথমবার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে সৌদির ৪টি—নেইমারের আল হিলালের সঙ্গে ফিরমিনো–মাহরেজদের আর আহলি, রোনালদো–মানেদের আল নাসর ও বেনজেমা–কান্তেদের আল ইত্তিহাদ। এ ছাড়া মেক্সিকোর লিগা এমএক্সের ৩টি ও ব্রাজিলের সিরি ‘আ’–এর দুটি ক্লাব আছে।