হার্ভি রেনারের কি সেই সময়ের কথা মনে আছে?
যে সময়ে সারা রাত ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করে আবার সূর্য উঠতেই ছুটে যেতেন ফুটবল নিয়ে, স্বপ্ন পূরণ করতে। যে স্বপ্নের খোঁজে সেই দিনগুলোয় ছুটে বেড়াতেন, আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে সে স্বপ্ন কি পূরণ হয়েছে? উত্তরটা রেনারই ভালো দিতে পারবেন। তবে তাঁর স্বপ্ন পূরণ হোক না হোক, তাঁর হাত ধরেই সৌদি আরব পেয়েছে স্বপ্নের মতো সাফল্য, সেটা নিশ্চিত।
বিশ্বকাপে সৌদি আরব এর আগে হারিয়েছিল মরক্কো, বেলজিয়াম, মিসরকে। দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে তারা পেয়েছে বিশ্বকাপ ইতিহাসের চতুর্থ জয়। বিশ্বকাপে এটাই যে তাদের সেরা সাফল্য, সেটা না বললেও চলছে।
কোচিং ক্যারিয়ারে এমন সাফল্য রেনারের জন্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। এর আগে একমাত্র কোচ হিসেবে দুটি ভিন্ন দেশের হয়ে আফ্রিকা কাপ অব নেশনস জিতেছিলেন এই ফরাসি কোচ। রেনারের কোচিং ক্যারিয়ারও শুরু ফ্রান্সের ক্লাব দ্রাগিনিয়াঁর হয়ে।
এরপর নিজ দেশ ছেড়ে চলে যান ইংল্যান্ডে। দায়িত্ব নেন ইংল্যান্ডের চতুর্থ স্তরের লিগের দল ক্যামব্রিজ ইউনাইটেডের। সে সময়টা একেবারেই ভালো যায়নি রেনারের। পুরো মৌসুমে দলকে জেতাতে পেরেছিলেন মাত্র পাঁচ ম্যাচে। তাঁর দল হেরেছিল ১৪টিতে আর ড্র করে ২৬ ম্যাচ।
মাঠের পারফরম্যান্সে রেনারের কৌশলের প্রভাব না পড়লেও ড্রেসিংরুমে তাঁর ‘ম্যান ম্যানেজমেন্ট’ দক্ষতা তখনই আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল। তাঁর সম্পর্কে বলতে গিয়ে সাবেক এভারটন ও নরউইচ গোলকিপার জন রুডি বলেছিলেন, ‘রেনার শুধু মুখেই বলেন না, নিজেও ফুটবলারদের কাজটা করে দেখান, বিশেষ করে জিমে।’
রেনার আসল চমকটা দেখান জাম্বিয়ার কোচ হয়ে। নিজের দ্বিতীয় মৌসুমেই কাপ অব নেশনসের ফাইনালে আইভরিকোস্টকে হারিয়ে শিরোপা জেতে জাম্বিয়া। এরপর আইভরিকোস্টের হয়েও একই শিরোপা জেতেন রেনার। আইভরিকোস্ট থেকে তিনি পাড়ি জমান লিগ আঁ-র ক্লাব লিলে। তবে সেখানে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
আবারও ফেরেন জাতীয় দলের দায়িত্বে, এবার মরক্কোর কোচ হয়ে। দায়িত্ব নিয়েই মরক্কোকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে নিয়ে যান এই কোচ। ২০ বছরের আক্ষেপ দূর করে ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলে মরক্কো। ২০১৯ সালে সৌদি আরবের দায়িত্ব নেন মরক্কো-অধ্যায় শেষ করে।
মূলত রেনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বাছাইপর্ব পার করে সৌদি আবরকে বিশ্বকাপের টিকিট এনে দেওয়ার। সেটা তো রেনারই করেছেনই, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই যা করেছে তাঁর দল, সেটা তো এখন জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়ই।