লিডস ইউনাইটেড ৩-০ চেলসি!
স্কোরলাইনটি থমকে দেওয়ার মতোই। অন্তত, যাঁরা আজ প্রিমিয়ার লিগের এ ম্যাচ দেখেননি, তাঁদের জন্য। না, তাঁরা ঠিকই দেখেছেন। ঘরের মাঠ এল্যান্ড রোডে অবিশ্বাস্যভাবে চেলসিকে উড়িয়ে দিয়েছে লিডস ইউনাইটেড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চেলসির বিপক্ষে লিডসের এই জয় এসেছে ২০ বছর পর।
সর্বশেষ ২০০২ সালে নিজেদের ঘরের মাঠেই চেলসিকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল লিডস। এর পরে আটবার চেলসির মুখোমুখি হলেও একটিতেও জয় পায়নি লিডস। অবশেষে সেই চেলসি–গেরো খুলল তারা। অবশ্য এখানে একটি তথ্য যোগ করতেই হবে। ২০০৪ সালে প্রিমিয়ার লিগ থেকে নেমে গিয়েছিল লিডস। ১৬ বছর পর ২০২০ সালে আবার ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলে ফিরে এসেছে তারা। ফিরে আসার পর আজকের জয়টি তাদের এগিয়ে দিল আরেক ধাপ।
ম্যাচের শুরু থেকেই বলের দখলে এগিয়ে ছিল চেলসি। কিন্তু চেলসির সেই এগিয়ে থাকাটা ছিল নিজেদের অর্ধেই। প্রতিপক্ষ অর্ধে বল থাকলে লিডসের কীই–বা আসে যায়! বরং বলের দখল পেয়ে প্রতি আক্রমণে দ্রুত গতিতে ভয়ংকর হয়ে উঠছিল লিডস। প্রেসিংয়েও দলটার মধ্যে একটা শৃঙ্খলা আছে। প্রথম গোলটি তো সেই দলগতভাবে দুর্দান্ত প্রেসিংয়েরই ফল।
৩৩ মিনিটে গোলের খাতা খোলেন আমেরিকান মিডফিল্ডার ব্রেন্ডেন অ্যারানসন। গোলটিতে চেলসি গোলকিপার এদুয়ার্দো মেন্দির দায় অনেক বেশি। একেবারে নিচ থেকে বিল্ডআপ ফুটবল খেলার খেসারত দিতে হয়েছে চেলসিকে। সেন্টারব্যাক থিয়াগো সিলভা বক্সের মধ্যে ব্যাক পাস করেছিলেন মেন্দিকে। দ্রুতগতিতে দৌড়ে এসে মেন্দির ওপর চাপ সৃষ্টি করেন অ্যারনসন। কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে নাটমেগ করতে চেয়েছিলেন মেন্দি। কিন্তু তাতে সফল হননি। গোলমুখে বল পেয়ে যান অ্যারানসন। দেখে–শুনে জালে জড়িয়ে দেন ২১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।
সাধারণত গোল খেয়ে গেলে তেড়েফুড়েই ওঠে বড় দলগুলো। গোল পরিশোধ করাই বড় দলগুলোর বৈশিষ্ট্য। কিন্তু চেলসি আজ ঠিক বড়দলের মতো খেলতে পারেনি। ৩৭ মিনিটে দ্বিতীয় গোল খেয়ে যায় তারা। ২-০ করেছেন রদ্রিগো মোরেনো। বাঁ প্রান্ত থেকে ড্যান জেমসের ক্রসে হেডে গোলটি করেছেন স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকার। এই গোলটি করে লিডসের জার্সিতে ছোট একটি ইতিহাসেও ঢুকে গেলেন রদ্রিগো। লিডসের ইতিহাসে রদ্রিগো চতুর্থ খেলোয়াড়, যিনি প্রিমিয়ার লিগে লিডসের হয়ে শুরুর তিন ম্যাচেই গোল করেছেন।
আজকের ম্যাচটি ছিল চেলসির ডাগআউটে টুখেলের ৬০তম ম্যাচ। প্রথম ৩০ ম্যাচে মাত্র ১৭ গোল খেয়েছিল টুখেলের দল। কিন্তু পরের ৩০ ম্যাচে এসে গোল খেয়েছে দ্বিগুণ। অর্থাৎ ৩৪টি। এতেই স্পষ্ট চেলসির রক্ষণভাগের বর্তমান দুরবস্থা। আজ ৬৯ মিনিটে ৩-০ করেছেন জ্যাক হ্যারিসন। ড্যান জেমসের ক্রসে গোলমুখ থেকে হেড করেছিলেন রদ্রিগো। সেই বলে গোলমুখ থেকে টোকা দিয়ে জালে জড়িয়েছেন হ্যারিসন। শেষের দিকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে চেলসির কুলিবালি।
প্রিমিয়ার লিগে এই নিয়ে তৃতীয় ম্যাচ খেলল চেলসি। এটি তাদের প্রথম হার। এই জয়ে ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট লিডসের। সমানসংখ্যক ম্যাচে চেলসির ৪ পয়েন্ট।