তিন দিন আগে সিঙ্গাপুরকে প্রথম প্রীতি ম্যাচে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের ব্যবধান বেড়ে হয়েছে প্রায় তিন গুণ। গোল উৎসব করেই বছরটা শেষ করেছেন সাবিনা খাতুনরা, সিঙ্গাপুরকে আজ ৮–০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েদের জাতীয় দল।
গত বছর সেপ্টেম্বরে সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এ বছর জুলাইয়ে ঘরের মাঠে নেপালের সঙ্গে দুটি প্রীতি ম্যাচ ড্র করে বাংলাদেশ। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এশিয়ান গেমসে জাপান ও ভিয়েতনামের কাছে হার, নেপালের সঙ্গে আবার ড্র। বছরের শেষে এসে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচেই প্রথম জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচে ১১ গোল হজম করে দেশে ফিরছেন সিঙ্গাপুরের মেয়েরা।
আজ দুটি করে গোল করেছেন স্ট্রাইকার তহুরা খাতুন ও ঋতুপর্ণা চাকমা। একটি করে গোল সানজিদা আক্তার, অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, মাতসুশিমা সুমাইয়া ও শামসুন্নাহার জুনিয়রের।
একতরফা ম্যাচে শুরু থেকেই সিঙ্গাপুরকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। আসি আসি করছিল গোলও। সাবিনা খাতুন গোলরক্ষককে একা পেয়েও পারেননি গোল করতে। সতীর্থদের দিয়ে গোল করাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়েছেন একাধিকবার।
১৬ মিনিটে হয়েছে ১-০। সাবিনার ফ্রি–কিক আসে বক্সে। ডিফেন্ডার আফিদা খাতুন বল তোলেন ওপরে। মাসুরা হেড করেন। সেই বল হেডে জালে পাঠান তহুরা। পরের মিনিটেই সাবিনার কর্নার থেকে ঋতুপর্ণা চাকমার আলতো টোকায় ২-০। ২৪ মিনিটে সানজিদার লম্বা বলে ঋতুপর্ণার শট। সিঙ্গাপুরের গোলকিপার তান লির হাত থেকে বল বেরিয়ে যায়। ফিরতি বল টোকা দিয়ে জালে পাঠান তহুরা।
এরপর সানজিদা বল জালে পাঠালেও অফসাইডে সেটি গোল হয়নি। তবে ৫৭ মিনিটে তিনি গোল পেয়েছেন। ৫৭ মিনিটে তহুরার হ্যাটট্রিক হতে হতে হয়নি, বল গোলকিপার ক্লিয়ার করতে পারেননি। ফিরতি বলে বাঁ পায়ের গড়ানো প্লেসিংয়ে ৪-০ করেন সানজিদা। ৬২ মিনিটে ঋতুপর্ণা বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে করেন ৫-০।
৭০ মিনিটে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আবারও হ্যাটট্রিক–বঞ্চিত তহুরা। তবে বদলি নেমেই ষষ্ঠ গোলটি করিয়েছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। তাঁর পাস থেকে সাবিনা খাতুনের প্লেসিংয়ের হয়েছে ৬-০। এরপর গোল পেয়েছেন সাবিনা। শেষ দিকে গোলদাতার তালিকায় নাম তুলেছেন জাপানে জন্ম ও বেড়ে ওঠা মাতসুশিমা সুমাইয়া। অতিরিক্ত সময়ে শামসুন্নাহার জুনিয়র করেছেন দলের অষ্টম গোল।
প্রথম ম্যাচে তবু কিছুটা ওপরে আসতে পেরেছে সিঙ্গাপুর। দ্বিতীয় ম্যাচে সেটাও পারেনি। প্রায় পুরো ম্যাচ তাদের খেলতে হয়েছে নিজেদের অর্ধেই। একের পর এক আটকাতে হয়েছে বাংলাদেশের আক্রমণ। প্রথম ১৩ মিনিটে তারা প্রথম আক্রমণে আসতে পেরেছে। পুরো ৯০ মিনিটেই মনে হয়েছে, র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বরের সঙ্গে এক শর খেলা হচ্ছে। অথচ র্যাঙ্কিংয়ে সিঙ্গাপুর ১২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে। র্যাঙ্কিংকে নিছক কাগুজে হিসাব বানিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এতটাই একতরফা খেলেছেন যে ১০-১২টি গোল হলেও অবাক হওয়ার থাকত না।
সিঙ্গাপুরের জার্সিতে এ ম্যাচ খেলেছেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের স্ট্রাইকার দানিলে তান লি। কিন্তু দল সারাক্ষণ রক্ষণেই ব্যস্ত থাকায় পেছন থেকে বল খুব একটা পাননি তিনি। যে দু–একবার পেয়েছেন, তাতে পায়ের ঝলক দেখাতে পারলেও গোলের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেননি। গোটা সিঙ্গাপুর দলটাই আসলে কিছু করতে পারেনি। তবে তাদের এক খেলোয়াড়ের সঙ্গে সংঘর্ষে শেষ দিকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশ গোলকিপার রুপনা চাকমাকে।