জাতীয় দলের হয়ে বেশিরভাগ ম্যাচে তাঁকে নামানো হয় বদলি হিসেবে। গোলগুলোও করেন এমন মুহূর্তে, যা অনেক ক্ষেত্রেই ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়। নেদারল্যান্ডস সমর্থকদের কাছে ভাউট ভেঘোর্স্ট তাই ‘ক্রাইসিস ম্যান’ বা সংকটকালের সৈনিক হয়ে উঠেছেন।
পোল্যান্ডের বিপক্ষে আজও বদলি নেমেছেন ভেঘোর্স্ট। ৮১ মিনিটে নেমে ৮৩ মিনিটেই গোল! তাঁর এই গোলটা ম্যাচের ভাগ্যও গড়ে দিয়েছে। হামবুর্গের ফোক্সপার্কস্টাডিয়নে পোল্যান্ডের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ২–১ গোলের জয়ে ইউরো অভিযান শুরু করেছে নেদারল্যান্ডস।
এই ভেঘোর্স্টই কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জোড়া গোল করে মেসি–দি মারিয়াদের ক্ষণিকের জন্য ভড়কে দিয়েছিলেন।
গত সোমবার তুরস্কর বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ঊরুতে চোট পেয়েছিলেন পোল্যান্ড অধিনায়ক ও দলটির সর্বোচ্চ গোলদাতা রবার্ট লেভানডফস্কি। চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আজ খেলতে পারেননি লেভা। তাঁর অভাব হাড়ে হাড়েই টের পেয়েছে পোলিশরা।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে পোল্যান্ডের চেয়ে ২১ ধাপ এগিয়ে থাকা নেদারল্যান্ডস শক্তিমত্তা–সামর্থ্যেও অনেক এগিয়ে ছিল। ম্যাচের শুরুতেই বেশ কয়েকটি গোছাল আক্রমণ করে সেটির ছাপও রাখে ডাচরা।
কিন্তু ম্যাচের ১৫ মিনিটে অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে গোল পেয়ে যায় পোল্যান্ড। কর্নার থেকে পিওতর জিয়েলিনস্কির নেওয়া শটে দারুণ হেডে বল জালে জড়ান অ্যাডাম বুকসা। এই গোলেও মিশে আছেন লেভানডফস্কি। কীভাবে? লেভার অনুপস্থিতিতে পোল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছেন জিয়েলিনস্কি আর লেভার জায়গায় একাদশে সুযোগ পেয়েছেন বুকসা।
আজ পোল্যান্ডকে শুধু নেতৃত্ব দেওয়াই নয়, পুরো মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন জিয়েলিনস্কি। নাপোলির এই মিডফিল্ডার ওপরে উঠে গিয়ে গোলের সুযোগ যেমন সৃষ্টি করেছেন, তেমনি নিচে নেমে এসে রক্ষণও সামলেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলকে হার থেকে রক্ষা করতে পারেননি।
পিছিয়ে পড়ার পর নেদারল্যান্ডস যে গোলের জন্য হন্যে হয়ে উঠবে, তা অনুমিতই ছিল। সমতা ফেরাতে খুব বেশি সময়ও নেয়নি ডাচরা। ২৯ মিনিটে ডাচদের ম্যাচে ফেরান লিভারপুল তারকা কোডি গাকপো। ম্যানচেস্টার সিটির লেফট ব্যাক নাথান আকের পাস থেকে বক্সে বল পেয়েই শট নেন গাকপো। তাঁর শট পোল্যান্ডের ডিফেন্ডার বারতোশ সালামোনের গায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে আশ্রয় নেয়।
বিরতির পর জয়সূচক গোলটি পেতে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে নেদারল্যান্ডস। দলটি আজ গোলের উদ্দেশে ২১টি শট নিয়েছে, যা ২০১২ ইউরোয় ডেনমার্কের বিপক্ষে ম্যাচের (৩২টি) পর সবচেয়ে বেশি। কিন্তু মেম্ফিস ডিপাই–জাভি সিমন্সের মিসের মহড়া দিতে শুরু করতে হতাশ হতে হয়।
জয়সূচক গোলটি পেতে নেদারল্যান্ডস কোচ রোনাল্ড কোমান তাই বড় চালটি চালেন। ৮১ মিনিটে ডিপাইকে তুলে নিয়ে নামান ‘ক্রাইসিস ম্যান’ ভেঘোর্স্টকে। ২ মিনিট পর তিনিই নেদারল্যান্ডকে আনন্দে ভাসান।