চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে রিয়াল মাদ্রিদের মতো পরাশক্তির কাছে ৫-২ গোলের হার। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় লেগে প্রতিপক্ষ দলটিকে নিয়ে খোদ সে দলের ভক্তরাও হয়তো বাজি ধরতে চাইবেন না। কিন্তু দলটির নাম যদি হয় লিভারপুল, তাহলে যে দ্বিতীয়বার ভাবতেই হবে।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে ঘুরে দাঁড়ানোর রাজাদের কথা বললে ওপরের সারিতেই উচ্চারিত হয় ‘অল রেড’দের নাম। এমনকি ফুটবল ইতিহাসে ঘুরে দাঁড়ানোর অন্যতম সেরা গল্পটির সঙ্গেও জড়িয়ে আছে লিভারপুলের নাম। তাই হয়তো দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরও ইয়ুর্গেন ক্লপ বলতে পারেন, ‘যদি ১ শতাংশ সম্ভাবনাও থাকে, আমি চেষ্টা করতে চাইব।’
ফুটবলে ঘুরে দাঁড়ানোর রূপকথার কথা বললে বেশ ওপরের দিকে আসে ‘মিরাকল অব ইস্তাম্বুল’–এর কথা। ২০০৫ সালের সেই ম্যাচকে (ফাইনাল) অনেকেই চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের সেরা ম্যাচের মর্যাদা দিয়ে থাকেন।
সেদিন এসি মিলানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩-৩ গোলে ড্র করে লিভারপুল। পরে সেই টাইব্রেকারে জিতে শিরোপাও হাতে তোলে অ্যানফিল্ডের দলটি। তবে লিভারপুলের ঘুরে দাঁড়ানোর সেটিই একমাত্র উদাহরণ নয়।
২০১৮-১৯ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পথে সেমিফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষেও ঘুরে দাঁড়ানোর স্মরণীয় এক গল্প লিখেছিল লিভারপুল। সেবার ক্যাম্প ন্যুতে প্রথম লেগে বার্সার কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল লিভারপুল। ম্যাচ শেষে লিভারপুলের শেষ দেখে ফেলেছিলেন অনেকে। কিন্তু ক্লপরা অ্যানফিল্ডে নেমেছিলেন ভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনায়। ঘরের মাঠে একে একে চারবার বার্সার জালে বল জড়ায় লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত ৪-০ গোলে জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করে ক্লপের দল।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আজ রাতে আরেকবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চান লিভারপুল কোচ। স্পেনের রাজধানীতে নেমে তিনি বলেছেন, ‘আমরা শক্তিশালী এক দলের বিপক্ষে খেলার জন্য এসেছি। চেষ্টা করব ম্যাচটা জিততে। কাজটা এতটাই কঠিন যে মনে হবে ‘‘সম্ভব নয়’’। কিন্তু এটা সম্ভব। সে জন্য আমরা এখানে এসেছি। দেখি কত দূর যাওয়া যায়।’
প্রথম লেগে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও বড় হার দেখেছিল লিভারপুল। তবে গল্পটা বদলানোর সুযোগটা এবার নিতে চান লিভারপুল বস। ক্লপ বলেছেন, ‘আমরা যদি নেতিবাচকভাবে নিজেদের বিস্ময় উপহার দিতে পারি, তবে আমাদের ইতিবাচকভাবেও বিস্ময় উপহার দেওয়া উচিত।’
দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া লিভারপুল যে কী করতে পারে, সে কথা রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তির চেয়ে আর কে ভালো জানেন। ইস্তাম্বুলে লিভারপুল ইতিহাস গড়ার সেই রাতে মিলানের ডাগআউটে যে তিনিই ছিলেন। আজ রাতে মাঠে নামার আগে সে দিনের কথা নিশ্চয় মনে পড়বে আনচেলত্তির। ম্যাচ নিয়ে সতর্ক থাকার কথাও বলেছেন এই ইতালিয়ান কোচ, ‘আমার মনে হয় ম্যাচটা উন্মুক্ত। লিভারপুল এখানে আসবে পরিস্থিতি বদলে দিতে।’