বাংলাদেশকে শিরোপা জেতানোর পর জাতীয় পতাকা হাতে উচ্ছ্বসিত ইয়ারজান বেগম। আজ নেপালের ললিতপুরে
বাংলাদেশকে শিরোপা জেতানোর পর জাতীয় পতাকা হাতে উচ্ছ্বসিত ইয়ারজান বেগম। আজ নেপালের ললিতপুরে

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল

দেশকে চ্যাম্পিয়ন করে আপ্লুত ইয়ারজান

এই প্রথম বিদেশযাত্রা, এই প্রথম দেশের হয়ে খেলা। আর আবির্ভাবেই নিজেকে চেনাল ইয়ারজান বেগম। বাংলাদেশের মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৬ দল সাফের শিরোপা জিতেছে গোলকিপার ইয়ারজানের বীরত্বেই। টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপারের ট্রফিটাও নিজের করে নিয়েছে পঞ্চগড়ের এই কিশোরী।

এবারের অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে খেলতে যাওয়ার আগে ইয়ারজান নামটা খুব একটা পরিচিত ছিল না ফুটবল অঙ্গনে। দলটির সাতজন ছিল বাফুফের ক্যাম্পের, ছয়জন বিকেএসপির। বাকিরা সবাই এসেছিল সারা দেশ থেকে বাছাইপ্রক্রিয়া পেরিয়ে।

ইয়ারজানও দলে এসেছিল সেই প্রক্রিয়াতেই। টুর্নামেন্টে আগাগোড়াই চমৎকার খেলেছে সে। বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচটিতে ইয়ারজান যেন প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় ফরোয়ার্ডদের সামনে। আজ ফাইনালেও ছিল আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হয়েই।

গোলকিপার কোচ আরিফুর রহমান পান্নুর সঙ্গে বাংলাদেশের তিন গোলকিপার (বাঁ থেকে) ইয়ারজান বেগম, মেঘলা রানী রায় আর স্বপ্না আক্তার ঝিলি

কিন্তু আসল খেলাটি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের গোলকিপার দেখিয়েছে টাইব্রেকারে। ভারতের তিনটি শট ঠেকিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশের সাফল্যের মধ্যমণিও ইয়ারজান। টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপারের ট্রফিটাও দেওয়ার জন্য তার চেয়ে ভালো কাউকে পায়নি আয়োজকেরা।

ম্যাচের পর এ নিয়ে কথা কলতে গিয়ে আপ্লুতই ছিল ইয়ারজান, ‘জীবনে প্রথম বিদেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছি। আর সেরা গোলকিপার হলাম। এ অনুভূতি দুর্দান্ত।’

ফাইনালে তিন পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেশকে শিরোপা জেতানোর পর আবেগেই ভাসছিল ইয়ারজান। চোখে আনন্দাশ্রু নিয়ে বাবার কথাই বলল সে, ‘আমার এই সাফল্যে সব কৃতিত্ব কোচ আবু তালেব আর আমার বাবার। আমি আমার বাবা ও কোচকে এই সাফল্য উৎসর্গ করলাম।’

টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপার হয়েছেন ইয়ারজান বেগম

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ মরিয়মের গোলে সমতায় ফেরে ৭১ মিনিটে। এর পরের সময়টা পুরোপুরি ইয়ারজানের। অথচ টাইব্রেকারে সুরভী আকন্দ প্রথম শটটি মিস করার পর প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে দেশের হয়ে খেলতে নামা ইয়ারজানের স্নায়ুর চাপে বিবশ হওয়াই ছিল স্বাভাবিক।

কিন্তু ইয়ারজান স্নায়ু ধরে রেখে ভারতের আলিনা, বনিফিলিয়া ও দেবযানীর তিনটি শট ঠেকিয়ে দেশকে এনে দিল মেয়েদের ফুটবলে আরও একটি সাফল্য।