ইউরো শুরুর আগে যে নামগুলোর জন্য ইংল্যান্ডকে ফেবারিট ধরা হচ্ছিল, ফিল ফোডেন ছিলেন তাঁদের অন্যতম। প্রিমিয়ার লিগের মৌসুম-সেরা খেলোয়াড়ের ওপর ইংলিশদের বাড়তি প্রত্যাশা থাকাটা অস্বাভাবিকও ছিল না।
ম্যানচেস্টার সিটিকে টানা চতুর্থ লিগ শিরোপা জেতাতে বড় অবদান রেখেছেন ফোডেন। গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৩ ম্যাচে ২৭ গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১২টি। তাঁকে নিয়ে সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা বলেছিলেন, ‘সে অতীতে ছোট মানুষ ছিল, এখন সে শীর্ষ খেলোয়াড়।’
বছর শুরুর আগে ফোডেনও যে সেরাদের একজন হতে চেয়েছিলেন, তা তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন, ‘বছরের শুরুতে আমি বলেছিলাম, লিগের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হতে চাই। আমি জানতাম যে আমাকে এগিয়ে আসতে হবে।’
তবে সিটির হয়ে দায়িত্ব নিয়ে ‘এগিয়ে আসা’ ফোডেন ইংল্যান্ডের জার্সিতে এখনো ম্লান। বিশেষ করে ইউরোয় ৬ ম্যাচে মাঠে নেমে একটি গোলেও অবদান রাখতে না পারার বিষয়টি ফোডেনের নামের সঙ্গে বড্ড বেমানান। প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারায় ৬ ম্যাচের ৫টিতেই তাঁকে তুলে নিয়ে বদলি নামিয়েছেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে তাঁর ওপর ভরসা রাখতে পারেননি তিনি।
স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটাই ধরা যাক। ম্যাচের যোগ করা সময়ে ইংল্যান্ড যখন ১–০ গোলে পিছিয়ে, ফোডেনকে তুলে নেন সাউথগেট। সিটির এই ফরোয়ার্ডের মাঠ ছাড়ার পরই গোল করে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান জুড বেলিংহাম। সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও ম্যাচ যখন সমতায়, তখন তাঁকে বদলি করেন সাউথগেট।
বোঝাই যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারছে না দল। এ জন্য অবশ্য ইংলিশ কোচকে দায় দেওয়ার সুযোগও সামান্য। ফোডেনের পারফরম্যান্সই সাউথগেটকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে।
নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে ফোডেন নিজেও বেশ হতাশ। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘মিথ্যা বলব না, আমি বেশ হতাশ। আমি গোল করার চেষ্টা করছি এবং ইংল্যান্ডের হয়ে ভালো কিছু করতে চাচ্ছি।’ হতাশ ফোডেন তখন আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে আমি একটু একটু করে ভালো করছি। প্রতি ম্যাচে উন্নতি হচ্ছে।’
সেই প্রমাণ অবশ্য সেমিফাইনালে পাওয়া গেছে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেই ম্যাচের প্রথমার্ধে ফোডেন দারুণ খেলেছেন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে পেয়ে যেতেন নিজের প্রথম গোলটিও। কোবি মাইনুর পাস থেকে বল পেয়ে ফোডেনের নেওয়া শট গোললাইন থেকে ফেরান ডেনজেল ডামফ্রিস।
এখন পর্যন্ত সেরা ছন্দে দেখা না গেলেও ফোডেনের সামনে এখনো একটি সুযোগ আছে। ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে ইংল্যান্ডকে দারুণ কিছু করতে হলে জ্বলে উঠতে হবে ফোডেনকে। অ্যাটাকিং থার্ডে নিজের দিনে যেকোনো প্রতিপক্ষকে একাই গুঁড়িয়ে দিতে পারেন তিনি। বার্লিনে রোববারের ফাইনালে সেই ফোডেনকে দেখার অপেক্ষায় থাকবেন ‘থ্রি লায়ন’ সমর্থকেরা।