২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কাল উরুগুয়ের কাছে ব্রাজিলের হারের ম্যাচে চোট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন নেইমার। তখনই বোঝা গিয়েছিল, বড় দুঃসংবাদ আসতে পারে। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো।
হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে নেইমারের। আবারও অস্ত্রোপচার করাতে হবে ৩১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেইমার নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ও তাঁর ক্লাব আল হিলাল আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
আর স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেটা ব্রাজিল সমর্থকদের মন খারাপ করিয়ে দিতে বাধ্য। নেইমারের এবারের চোট এতটাই ভয়ংকর যে অস্ত্রোপচার করানোর পর পুরোপুরি সেরে উঠতে ৭ থেকে ৮ মাস সময় লাগবে বলে দাবি করেছে মার্কা। সেটা হলে আগামী বছর কোপা আমেরিকায় তাঁর খেলার সম্ভাবনা কম। যুক্তরাষ্ট্রে কোপা আমেরিকা শুরু আগামী ২০ জুন। এখন থেকে ঠিক ৮ মাস পর।
উরুগুয়ের রাজধানী মন্তেভিদেওর এস্তাদিও সেন্তেনারিওতে কাল ম্যাচের ৪৪ মিনিট চলছিল। উরুগুইয়ান মিডফিল্ডার নিকোলাস দে লা ক্রুজের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে তাঁর ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান নেইমার। প্রথমে মাঠেই নেইমারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে চোটের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে পরে তাঁকে মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হয়। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়ার সময় কাঁদছিলেন নেইমার।
হাঁটুর স্ক্যান রিপোর্ট হাতে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুঃসংবাদ দিয়েছেন নেইমার, ‘এটা খুবই বেদনার মুহূর্ত, সবচেয়ে বাজে। আমি জানি আমি শক্তিশালী। কিন্তু এবার আমার পরিবার এবং বন্ধুদের বড্ড প্রয়োজন। চোট ও অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে যাওয়া সহজ ব্যাপার নয়। একবার কল্পনা করুন, সেরে উঠতে ৪ মাস সময় লাগার পর আবার এটির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তবে আমার বিশ্বাস আছে। সবকিছু ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দিচ্ছি, যাতে তিনি আমাকে নতুন জীবন দান করতে পারেন। আমাকে সমর্থন জানিয়ে এবং সুস্থতা কামনায় বার্তা পাঠানোয় ধন্যবাদ।’
নেইমারের সেই পোস্ট শেয়ার করে দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছ তাঁর ক্লাব আল হিলাল। আর ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমাদের স্ট্রাইকারের (নেইমার) অস্ত্রোপচার করাতে হবে। তবে দিন-তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। ব্রাজিল জাতীয় দল ও আল হিলালের চিকিৎসা বিভাগ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং তাঁকে সেরে তুলতে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’
নেইমার আর চোট যে নিত্যসঙ্গী, সেটা সবার জানা। এ নিয়ে গত ১০ বছরে ৩৪ বার চোটে পড়লেন নেইমার। এবারের চোট হিসাবে ধরলে সব মিলিয়ে মাঠের বাইরে থাকতে হবে ১ হাজার ২০০ দিনেরও বেশি। কাল উরুগুয়ের বিপক্ষে চোটে পড়ার আগে সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে আঘাত পেয়েছিলেন। সে সময় তিনি ছিলেন পিএসজির খেলোয়াড়।
অ্যাঙ্কেলের সেই চোট থেকে সেরে উঠতে গত মার্চে কাতারে অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন নেইমার। ৭ মাস পর গত সেপ্টেম্বরে মাঠে ফিরেছিলেন। কিন্তু কয়েক ম্যাচ খেলতে না খেলতেই আবার লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে যেতে হলো।