এ–ও কি সম্ভব! নাপোলিকে শিরোপা হাতছাড়া করতে হলে হারতে হবে নিজেদের হাতে থাকা ৯ ম্যাচের সব কটি, পাশাপাশি দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাৎসিওকে জিততে হবে নিজেদের শেষ ১০ ম্যাচের অন্তত ৭টি।
সত্যি কথা হচ্ছে, কাগজে–কলমে জোর করে হারানো ছাড়া নাপোলিকে শিরোপাবঞ্চিত রাখা রীতিমতো অসম্ভব। সর্বশেষ গতকাল রাতে লেচ্চেকে ২-১ গোলে হারিয়ে ৩৩ বছর পর শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল নাপোলি।
১৯৯০ সালে ডিয়েগো ম্যারাডোনার জাদুতে জেগে উঠেছিল নাপোলি। আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকরের হাত ধরে সেবার শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতেছিল নেপলসবাসী। এরপর লম্বা সময়ের শীতনিদ্রা। নাপোলিকে আরেকবার সিরি ‘আ’ শিরোপা জিততে দেখার স্বাদ অপূর্ণ রেখে বিদায় নেন ম্যারাডোনাও। তবে শিরোপা–খরার সেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ম্যারাডোনাকে বুকে ধারণ করে এখন আরেকটি উৎসবে দ্বারপ্রান্তে নাপোলি।
আক্ষরিক অর্থে বললে শিরোপা উঁচিয়ে ধরা থেকে আর মাত্র ৪টি জয় দূরে এখন নাপোলি। হাতে থাকা ৯ ম্যাচ থেকে ১২ পয়েন্ট নিশ্চিত করতে পারলে কোনো সমীকরণ ছাড়াই শিরোপা জিততে পারবে নাপোলি।
কারণ, নাপোলি ৪ ম্যাচ জিতলে তখন সব মিলিয়ে তাদের ঝুলিতে পয়েন্ট হবে ৮৬। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাৎসিও ১০ ম্যাচের সব কটি জিতলেও ৮৫ পয়েন্টের বেশি পাবে না। আর তাতে চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুটটা উঠবে নাপোলির মাথায়।
গতকাল রাতে লেচ্চের বিপক্ষে নাপোলির জয়টা অবশ্য সহজ ছিল না। আগের ম্যাচে এসি মিলানের কাছে নিজেদের মাঠে ৪-০ গোলের বাজে অভিজ্ঞতা নিয়েই এ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল লুসিয়ানো স্পালেত্তির দল। এদিন অবশ্য প্রতিপক্ষের মাঠে ডি লরেনৎসোর গোলে এগিয়ে যায় নাপোলি। পরে ডি ফ্রান্সেসকোর গোলে সমতায় ফেরে লেচ্চে। কিন্তু ৬৪ মিনিটে নিজেদের অবিশ্বাস্য এক ভুলে আত্মঘাতী গোল হজম করে বসে লেচ্চে।
লেচ্চে ডিফেন্ডার আন্তোনিও গালো অবশ্য চেয়েছিলেন হেডে গোলরক্ষকের হাতে বল তুলে দিতে। কিন্তু গোলরক্ষক বল নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হলে সেটির ঠিকানা হয় জালে। পিছিয়ে পড়ার পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি স্বাগতিকেরা। এটি নাপোলিকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছে ১৯ পয়েন্টের বিশাল ব্যবধানে, যা এখন ক্লাবটিকে ইতিহাসের তৃতীয় লিগ শিরোপা জয়ের স্বপ্নের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
এদিন গোলের বেঞ্চে থাকা সতীর্থদের নিয়ে উদ্যাপন করেও আলোচনায় এসেছেন লরেনৎসো। এমন উদ্যাপনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লরেনৎসো বলেছেন, ‘নাপোলির এই দলের সত্যিকার অর্থে কোনো শক্তি যদি থাকে, তবে তা হলো এর একতা। সবাই এখানে অংশগ্রহণ করে, সেটা যে শুরু করে, যে বদলি হিসেবে নামে কিংবা যে বেঞ্চে থাকে, সবাই। এ গোল গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যা আমি আমার সতীর্থদের উৎসর্গ করেছি।’