এই হার বেদনাদায়ক। তবে এর মধ্য দিয়েই একটি চক্র শেষ হচ্ছে।
৯ ডিসেম্বর ক্রোয়েশিয়ার কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন তিতে। বিশ্বকাপের পর আর ব্রাজিলের কোচের দায়িত্বে থাকবেন না, এই আভাস আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। সেদিনের হারের পর তিনি নিশ্চিত করে দেন, ব্রাজিল কোচ হিসেবে তাঁর অধ্যায় শেষ।
২০১৬ সালের জুনে কার্লোস দুঙ্গার উত্তরসূরি হিসেবে ব্রাজিলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিতে। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর যাত্রা। ২০১৮ বিশ্বকাপেও ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়েছিল বেলজিয়ামের কাছে ২-১ গোলে হেরে। এরপরও তাঁর ওপর আস্থা রেখেছিল কনফেডারেশন অব ব্রাজিল ফুটবল (সিবিএফ)।
এবার বিশ্বকাপে ব্রাজিল পেয়েছিল স্বপ্নের মতো এক দল। শিরোপার দৌড়ে তারা ছিল হট ফেবারিট। কিন্তু এবারও সেই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হলো। সব মিলিয়ে তিতের অধীনে ৮১ ম্যাচ খেলে ব্রাজিলের জয় ৬১টি, হার ৭টি, বাকিগুলো ড্র।
এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসছে, তিতের পর কে হচ্ছেন ব্রাজিলের নতুন কোচ? ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমে বেশ কিছু নাম এসেছে এরই মধ্যে। ধারণা করা হচ্ছে, এঁদের একজনই হয়তো হবেন তিতের উত্তরসূরি। চলুন দেখা যাক সেই নামগুলো—
৪৮ বছর বয়সী দিনিজকে বলা হয় ‘ব্রাজিলের গার্দিওলা’। আপাতত ফ্লুমিনেন্সের কোচ। তিকি-তাকা স্টাইলে খেলাতে পছন্দ করেন দলকে, বল ধরে রেখে খেলে তাঁর দল।
কোচিং ক্যারিয়ারে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭টি ব্রাজিলিয়ান ক্লাবের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁর অধীনে সাও পাওলো টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডও গড়েছে। ঝুলিতে খুব বেশি ট্রফি নেই। তবে তাঁর আক্রমণাত্মক ফুটবল ব্রাজিলের সঙ্গে মানানসই, সমর্থকদের পছন্দেও তিনি এক নম্বরে।
এই মুহূর্তে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসের কোচ। তবে আবেল ফেরেইরা ব্রাজিলিয়ান নন, পর্তুগিজ। ব্রাজিল বিদেশি কোচ পছন্দ করে না, এটা একটা বাধা তাঁর জন্য।
তবে পালমেইরাসকে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের প্রায় সব শিরোপা এবং কোপা লিবার্তাদোরেস জেতানো ফেরেইরার সাফল্য নজর কেড়েছে সিবিএফের। ভাষা যেহেতু পর্তুগিজ, সেটা সমস্যা হওয়ার কথা না।
ব্রাজিলের ক্লাব গ্রেমিওর কোচ। প্রায় ২৬ বছরের কোচিং ক্যারিয়ার। আক্রমণাত্মক ফুটবল দর্শন তাঁর। গ্রেমিওকে একাধিক মহাদেশীয় শিরোপা জিতিয়েছেন।
ভালো ব্যবস্থাপক হিসেবে খ্যাতি আছে তাঁর। যেসব দলে কোচিং করিয়েছেন, খেলোয়াড়েরা তাঁর প্রশংসাই করেছেন।
২০ বছরের কোচিং ক্যারিয়ার। সর্বশেষ ছিলেন ফ্ল্যামেঙ্গোর দায়িত্বে। ব্রাজিলিয়ান মহাতারকা নেইমার সান্তোসে তাঁর অধীনেই পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। তবে নেইমারের সঙ্গে ঝামেলাতেই আবার সান্তোস তাঁকে বরখাস্ত করেছিল ২০১০ সালে। সেই দরিভাল যদি আবার ব্রাজিলের কোচ হন, নেইমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা কেমন থাকে, দেখার অপেক্ষা করতে হবে।
এর বাইরেও আরও কয়েকজন বিদেশি কোচের নাম শোনা যাচ্ছে। যার মধ্যে আছেন ম্যানচেস্টার সিটির বর্তমান কোচ পেপ গার্দিওলা, সাবেক কোচ চিলিয়ান ম্যানুয়াল পেল্লেগ্রিনি, জার্মানির সাবেক কোচ ইওয়াখিম ল্যুভ। তবে ব্রাজিল বিদেশি কোচ খুব একটা পছন্দ করে না, বলে তাঁদের নামগুলো স্রেফ গুঞ্জন বলেই মনে হচ্ছে।