সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফুটবল মাঠে দৌড়ানোর কথা সেলিন হায়দারের। কিন্তু লেবাননের ১৯ বছর বয়সী নারী ফুটবলারের ঘুমই যে ভাঙছে না! ভাঙবেই–বা কীভাবে? তাঁকে যে কড়া ডোজের ওষুধ প্রয়োগে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে, চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় যেটাকে বলে ‘ইনডিউসড কোমা’। শনিবার ইসরায়েলের বিমান হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হওয়া সেলিনের জীবন বাঁচাতেই এ পদক্ষেপ।
গত বছর ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলার শুরুর পর সেই যুদ্ধকে এখন নিয়ে গেছে লেবাননেও। লেবাননে প্রতিনিয়তই বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। সেই বিমান হামলাতেই রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণের উপশহর চিয়াহতে শার্পনেলের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন লেবানন অনূর্ধ্ব-২০ দলের ফুটবলার সেলিন।
সেলিনের দল বৈরুত ফুটবল একাডেমি (বিএফএ) তাঁর সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছিল মঙ্গলবার রাতে। সেই বিবৃতিতে আশার কথাই অবশ্য শুনিয়েছিল ক্লাবটি, ‘তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডাক্তার আমাদের ক্লাবকে জানিয়েছেন, সেলিনের অবস্থা স্থিতিশীল। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণও নিয়ন্ত্রণে আছে।’
গত বছর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিন ও লেবাননের অনেক ফুটবলারই হতাহত হয়েছেন। খেলোয়াড়দের হতাহতের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরে ফুটবলের দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ও উয়েফাকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার দাবি করেছেন অনেকেই। তবে ফিফা এক বিবৃতিতে শুধু যুদ্ধ বন্ধের আহ্বানই জানিয়েছে।
লেবানন অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে দুবার ওয়েস্ট এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা সেলিনের জন্য প্রার্থনা করছেন সবাই। তাঁর সাবেক সতীর্থ ও এখন সাংবাদিকতায় নাম লেখানো আসিলে তুফাইলিই যেন সবার হয়ে কথা বললেন, ‘অন্য সব তরুণ ফুটবলারের মতোই সেলিন প্রিয় খেলা ফুটবলে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখত। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়েই তাঁকে এ পর্যন্ত আসতে হয়েছে, সে অনেক ট্রফিও জিতেছে। আমি ওর জন্য অপেক্ষা করছি, আমরা সবাই ওর জন্য অপেক্ষা করছি।’