চীনা তাইপে মেয়েদের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ১০০ ধাপ। আজ কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ নারী দল চীনা তাইপের শক্তিমত্তাটা ভালোই টের পেয়েছে। সেই সঙ্গে বুঝতে পেরেছে নিজেদের অবস্থানও। চীনা তাইপের বিপক্ষে এ ম্যাচে হার ৪-০ গোলে।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের মাঝমাঠের প্রাণভোমরা মারিয়া মান্দা, সেটি অনেক দিন ধরেই। চোটের কারণে চীনা তাইপের বিপক্ষে ম্যাচে নেই তিনি। গতকালই অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেছিলেন, মারিয়াকে মিস করবেন তিনি। মারিয়া আর মনিকা চাকমার রসায়নের কথাও বলেছিলেন। আজ কিংস অ্যারেনায় সেই ব্যাপারটি চোখে পড়ল।
মারিয়া না থাকায় বাংলাদেশের মাঝমাঠ রইল নিষ্প্রভ হয়ে। সেই সঙ্গে মনিকা চাকমাও। প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকা দল দ্বিতীয়ার্ধে চীনা তাইপের সঙ্গে কিছুটা লড়ার চেষ্টা করেছে। বেশ কিছু আক্রমণও করেছে, কিন্তু গোলের সুযোগ তৈরি করা যেটিকে বলে, তা করতে পারেনি।
প্রথমার্ধে একবার তহুরা চীনা তাইপের এক ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে ডি বক্সের ডান দিক দিয়ে শট নিয়েছিলেন, তবে সেটি গেছে বাইরে দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে বাঁ প্রান্ত থেকে মনিকা চাকমার একটি ক্রস চীনা তাইপের বার ছুঁয়ে বাইরে চলে যায়।
আজকের ম্যাচে কাঠগড়ায় তোলা যায় বাংলাদেশের রক্ষণভাগকেই। চীনা তাইপের সবগুলো গোলের জন্যই রক্ষণকে দায়ী করা যায়। আফঈদা খন্দকার, মাসুরা পারভীন আর শিউলী আজিমদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল। ম্যাচের ১২ মিনিটে চীনা তাইপের প্রথম গোলটি আফঈদার ভুল থেকেই। তাঁর পা থেকে ছুটে যাওয়া বল ধরে খুব সহজেই গোল করেন সু-ইউ সুন। ১৪ মিনিটে রক্ষণের আরও একটি ভুলে সু-ইউ সুন গোল পেতে পারতেন, কিন্তু তাঁর শটটি পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ১৮ মিনিটে চীনা তাইপে ২-০ গোলে এগিয়ে যায়।
সু-ইউ সুনের কর্নার বাংলাদেশের বক্সে উড়ে এলে সেটি লাফিয়ে ক্লিয়ার করতে পারেননি কেউই। প্রায় বিনা বাধায় হেড করে গোল করেন সু-সিন ইউন। ২৬ মিনিটে চীনা তাইপের তৃতীয় গোলটি আরও হাস্যকর। সু-ই ইউনের ফ্রি কিক কেউই ক্লিয়ার করেননি। বিনা বাধাতেই বল গোলকিপার রুপনা চাকমাকে বোকা বানায়। বলটি সু-ইউ সুনে পা লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু গোলটি সু-ই ইউনকেই দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়ার্ধে সাবিনাকে তুলে নিয়ে নামানো হয় সানজিদা আক্তারকে। এরপর বাংলাদেশ কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়। কিন্তু সব আক্রমণই হয়েছে অগোছালো। অন্যদিকে চীনা তাইপে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ৫৬ মিনিটে রক্ষণের আরেকটি ভুলে চতুর্থ গোলটি হজম করে বাংলাদেশ। লি-ই ওয়েন বক্সের ঠিক বাইরে থেকে সরাসরি বাংলাদেশের পোস্টে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। সেই ফিরতি বলটাই কাট-ব্যাক করে পোস্টের ঠিক মুখে আফঈদার পায়ে লেগে চলে যায় সু-ইউ সুনের পায়ে। তিনি ওই জায়গা থেকে গোলে বল পাঠাতে কোনো ভুল করেননি।
৩ জুন দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ চীনা তাইপের বিপক্ষে, এই কিংস অ্যারেনাতেই। সেই ম্যাচের আগে কোচ পিটার বাটলারের অনেক কাজ বাকি। এই কদিনে আজকের ম্যাচের ভুলত্রুটি শুধরে দ্বিতীয় ম্যাচে সাবিনারা কতটুকু জ্বলে উঠতে পারেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।