নদুই রকমের দুটি পরিসংখ্যান ছিল। একটি ঘরের মাঠে সাউদাম্পটনের বিপক্ষে খেলা প্রিমিয়ার লিগের ২৩ ম্যাচে কখনোই হারেনি আর্সেনাল। আরেকটি এ মৌসুমে আর্সেনাল যে কয়টি দলকে হারাতে পারেনি, তার একটি সাউদাম্পটন।
আজও সাউদাম্পটনকে হারাতে পারেনি আর্সেনাল। তবে এ ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট পেয়েও খুশিই হওয়ার কথা তাদের। অবনমন অঞ্চলের দল সাউদাম্পটনের কাছে হারতে হারতেও যে ২ মিনিটের এক ঝড় তুলে ৩–৩ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে ‘গানার’রা!
আগের ম্যাচে তাও সাউদাম্পটনের মাঠে ১–১ গোলে ড্র করেছিল, এবার তো হেরেই যাচ্ছিল। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ৩–১ গোলে পিছিয়ে ছিল আর্সেনাল। কিন্তু ৮৮ ও ৯০ মিনিটে মার্টিন ওডেগার্ড আর বুকায়ো সাকার গোলে শেষ পর্যন্ত একটি পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে তারা।
এ ম্যাচে আর্সনাল জিততে না পারায় শিরোপা লড়াইয়ে আরও সুবিধাজনক অবস্থায় চলে এসেছে ম্যানচেস্টার সিটি। সাউদাম্পটনের সঙ্গে ড্রয়ের পর ৩২ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আর্সেনাল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যান সিটির পয়েন্ট ৭০। এক দিক থেকে বলতে গেলে আর্সেনালের চেয়ে ভালো অবস্থানেই আছে ম্যান সিটি। ৭০ পয়েন্ট পেতে পেপ গার্দিওলার দল যে ম্যাচ খেলেছে দুটি কম।
সাউদাম্পটনের বিপক্ষে আজ আর্সেনাল পিছিয়ে পড়ে ২৭ সেকেন্ডই। গোলকিপার অ্যারন রামসডেলের শিশুতোষ ভুলে ম্যাচ শুরু না হতেই পিছিয়ে পড়ে আর্সেনাল। রামসডেল তাঁর সতীর্থকে পাস দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বক্সের ভেতর থেকে একটু সামনে তিনি দিলেন ভুল পাস। বল পেয়ে যান সাউদাম্পটনের আলকারাজ। এমন সুন্দর সুযোগ পেয়ে কোনো ভুল করেননি তিনি। একটু এগিয়ে বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া শটে রামসডেলের দেওয়া উপহার বরণ করে নেন তিনি!
গোল খেয়ে যেন মরিয়া হয়ে ওঠে আর্সেনাল। বাঁ প্রান্ত দিয়ে দুর্দান্ত সব আক্রমণে সাউদাম্পটনের রক্ষণ দিশেহারা করে ফেলেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার মার্তিনেল্লি। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে ১৪ মিনিটে গোল দিয়ে বসে সাউদাম্পটনই। ১৪ মিনিটে স্কোরলাইন ২–০ করা গোলটি করেন থিও ওয়ালকট। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে সতীর্থেরা যেন মনোবল হারিয়ে না ফেলেন, এ কারণেই হয়তো সবাইকে এক জায়গায় করে মাঠের মধ্যে ছোট্ট একটি ‘মিটিং’ করে ফেলেন জিনচেঙ্কো।
সেই মিটিংয়ে কাজও হয়। ২০ মিনিটে কিছুটা স্বস্তি ফেরে আর্সেনাল শিবিরে। সাকার পাস থেকে একটি গোল শোধ করেন মার্তিনেল্লি। এ গোলের পর আর্সেনালের আক্রমণের ধার যেন আরও বাড়ে। সাউদাম্পটনও মাঝেমধ্যেই প্রতিআক্রমণে উঠে আসছিল। কিন্তু প্রথমার্ধে আর গোল পায়নি কোনো দলই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আর্সেনালকে দেখে মনে হচ্ছিল, প্রথমার্ধের উদ্দীপনাটা ধরে রাখতে পারেনি তারা। এর খেসারতও দিতে হয় তাদের ৬৬ মিনিটে। কালেতা–কারের গোলে সাউদাম্পটন এগিয়ে যায় ৩–১ ব্যবধানে।
গোল খেয়ে আবার জেগে ওঠার চেষ্টা করে আর্সেনাল, ধার বাড়ায় আক্রমণের। কিন্তু গোল কিছুতেই আসছিল না। কখনো তাদের বঞ্চিত করছিল ভাগ্য, কখনো আবার গোলের সহজ সুযোগ পেয়ে গোল করতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন ফরোয়ার্ডরা। দেখতে দেখতে ম্যাচ চলে আসে অন্তিম মুহূর্তে। এমিরেটসের গ্যালারির একদিকে তখন আগাম জয়ের উৎসব করে দিয়েছিল সাউদাম্পটনের সমর্থকেরা।
ঠিক সেই সময়েই সর্বশক্তি নিয়ে সাউদাম্পটনের রক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়ে আর্সেনাল। যার ফসল ৮৮ মিনিটে ওডেগার্ড আর ৯০ মিনিটে সাকার গোল। এরপরও দু–তিনটি সুযোগ পেয়েছিল আর্সেনাল। কিন্তু গোল আর পায়নি তারা।