বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু

জাকারিয়া পিন্টু: তিনি থাকবেন স্বাধীনতার ইতিহাসে, ফুটবলে, মানুষের মনে

জীবনের শেষ কটা দিন ফুটবল অঙ্গনে তাঁকে আর দেখা যায়নি। মুঠোফোনেও পাওয়া যেত না। কথা বলতে পারতেন না সেভাবে। কোনো প্রয়োজন হলে ছেলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে হতো। ‘বাবার শরীরটা ভালো না’, ফোন তুলেই বলতেন ছেলে। তবে বাবাকে জানাতেন কখন কে ফোন করছেন, খোঁজ নিচ্ছেন। সেই খোঁজ আর নেওয়ার দরকার হবে না। চিরদিনের জন্যই যে মানুষটা চলে গেলেন অন্যলোকে।

জাকারিয়া পিন্টু আজ দুপুর ১২টার দিকে ৮১ বছর বয়সে এই পৃথিবীর মায়া ছেড়েছেন। খবরটা আসতেই ভেসে ওঠে তাঁর সেই মুখ, সেই হাসি। আর সেই বিখ্যাত কথা, ‘তোমরা আমাকে সাবেক অধিনায়ক বলবে না। আমি কখনো সাবেক হব না। স্বাধীন বাংলা দল কখনো সাবেক হবে না। আমার মতো অধিনায়ক এই পৃথিবীতে আর একটাও পাইবা না।’

কথাটা এক শ ভাগ ঠিক। তাঁর মতো অধিনায়ক এই পৃথিবীতে আর জন্ম নেয়নি। জন্ম নেওয়ার দরকারও হয়নি। পৃথিবীতে আর কোনো জাতির স্বাধীনতা আন্দোলনে একটা ফুটবল দল তৈরি হয়নি। স্বাধীনতার জন্য যারা ভিনদেশে গিয়ে ফুটবল খেলে অর্থ জোগাড় করেছে। কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সেটি হয়েছে। সেটিরই নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁর অমর হয়ে থাকার জন্য এটুকুই ছিল যথেষ্ট।

কিন্তু তাঁর ব্যাপ্তি আরও বড়। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক পরিচয় তো একটা অলংকার মাত্র। ফুটবলার জাকারিয়া পিন্টু কম কিসে! তাঁর জীবনের খেরোখাতা খুলে বসে কোনটার আগে কোনটা লেখা উচিত, তাই নিয়ে বিভ্রান্ত হতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ঘরোয়া ফুটলে অধিনায়কত্ব করেছেন। ১৯৬৮-৭৫ পর্যন্ত টানা আট বছর ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক ছিলেন, যা কিনা রেকর্ড। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় দলের অধিনায়কের নামও জাকারিয়া পিন্টু।

২০১৪ সালে প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা জানানো হয় জাকারিয়া পিন্টুকে

এতেই শেষ নয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি একাদশের বিপক্ষে মুজিবনগর একাদশের অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। ওই বছরই একই মাঠে কলকাতার মোহনবাগানের বিপক্ষে প্রদর্শনী ম্যাচে বাংলাদেশের নির্বাচিত একাদশের অধিনায়ক। আসামের গুয়াহাটিতে সর্বভারতীয় লোকপ্রিয় বরদুলই কাপে ঢাকা একাদশেরও অধিনায়ক।

জীবনে কত ম্যাচে যে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরেছেন, সেই হিসাব নিজের কাছেও ছিল না। ১৯৫৭–এর দিকে যখন জগন্নাথ কলেজে কলেজে পড়েন, তখনো দুই বছর কলেজটির অধিনায়ক ছিলেন। তাঁকে ‘আজন্ম অধিনায়ক’ বলাই যায়।

খেলতেন স্টপার পজিশনে। তাঁর কড়া মার্কিং পেরিয়ে স্ট্রাইকাররা বেরিয়ে যেতে পারতেন কমই। একটা ম্যাচের কথা নিজেই খুব বলতেন। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে প্রথম বিভাগ লিগে আবাহনীকে ৪ গোলে উড়িয়ে দেয় মোহামেডান। তখন পর্যন্ত আকাশি নীলের বিপক্ষে সাদা–কালোদের সেটিই ছিল সবচেয়ে বড় জয়। ম্যাচের আগে মোহামেডান সমর্থকেরা জাকারিয়া পিন্টুর কাছে আবদার করেন, ‘সালাহউদ্দিন যেন গোল করতে না পারে। করলে আপনার ঠ্যাং ভেঙে দেব।’ পিন্টু সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘ঠিক আছে, শুধু সালাহউদ্দিনকে আটকানোর কাজটাই করব।’ সেদিন সেটাই করেছিলেন পিন্টু।

ওই ম্যাচের স্মৃতি নিয়ে পরে এ প্রতিবেদককে জাকারিয়া পিন্টু বলেছিলেন, ‘ম্যাচের শেষ দিকে সালাহউদ্দিন আমাকে বলল, “পিন্টু ভাই, ছেড়ে দেন, একট গোল করি। বুঝতেই পারছেন আমারও সাপোর্টার আছে।” আমি ওকে বলেছিলাম, তোমাকে ছাড়তে পারব না।’ সালাহউদ্দিনও অনেকবার এ প্রতিবেদককে বলেছেন, ডিফেন্ডারদের মধ্যে তাঁকে যে দুজন বেশি ভুগিয়েছেন, একজন জুনিয়র নাজির, অন্যজন জাকারিয়া পিন্টু। পিন্টু ভাই ‘অন্য জাতের ডিফেন্ডার’ বলেছেন সালাহউদ্দিন।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার অনুষ্ঠানে জাকারিয়া পিন্টু (বাঁয়ে)। পাশে বিপ্লব ভট্টাচার্য ও প্রতাপ শংকর হাজরা

খেলেছেন পাকিস্তান জাতীয় দলেও

খেলোয়াড়ি জীবনের মাঝপথেই সুযোগ পেয়েছিলেন পাকিস্তান জাতীয় দলে। ১৯৬৮ সালে তুরস্কের আরসিডি কাপে পাকিস্তানের জার্সিতে খেলেছেন। স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত খেলেন ইরানের ফ্রেন্ডশিপ টুর্নামেন্ট, নেপালের রাজা মাহেন্দ্র কাপসহ আরও কিছু আসরে। পাকিস্তান জাতীয় দল আলোকিত করেন মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ (অব.), প্রতাপ শংকর হাজরা গোলাম সারোয়ার টিপুরা। তবে তাঁরা সবাই স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলেননি। যাঁরা পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দুটি জাতীয় দলেই খেলেছেন, তাঁদের অন্যতম জাকারিয়া পিন্টু। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের গোড়াপত্তনে তাঁর নামটি সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে।

কাজী সালাহউদ্দিন হতে পারেন বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় তারকা। এনায়েতুর রহমান হতে পারেন কারও কারও মতে ফুটবলীয় দক্ষতায় সর্বকালের সেরা ফুটবলার। কিন্তু জাকারিয়া পিন্টু একটা প্যাকেজ, যাঁর মধ্যে সবই ছিল। পাকিস্তান আমলে তিনি এক জীবন্ত ডায়েরি ছিলেন।

গল্পে গল্পে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান দলে বাঙালিদের ডাক পড়লে লাহোর, করাচিতে খেলতে যেতে হতো। ওখানে বাঙালিদের নানাভাবে তিরস্কার করা হতো। ওরা আমাদের ব্যঙ্গ করে বলত, “তুম লোক চাউল খাতা হ্যায়। কেয়া ফুটবল খেলে গা।” পশ্চিম পাকিস্তানিদের সেই দম্ভ উপক্ষা করেই জাকারিয়া পিন্টুরা তৎকালীন জাতীয় দলে খেলে গেছেন। সবাইকে ছাপিয়ে জাকারিয়া পিন্টু নিজেকে নিয়ে যান অন্য উচ্চতায়।

শুধু ফুটবলার নন, ১৯৭৭ ও ১৯৮৭ সালে কিছুদিন মোহামেডানকে কোচিংও করান জাকারিয়া পিন্টু। ১৯৭৯ সালে ঢাকা সফরে আসা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লাব দলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। ১৯৮০ সালে কুয়েতে সপ্তম এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে ছিলেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার। বর্ণময় এক ফুটবল ক্যারিয়ারই। যার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৫ সালে পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৭৮ সালে।

এসব নিয়ে তাঁর ছিল অনেক গর্ব। সবার কাছ থেকে পেতেন আলাদা সম্মান। সবার কাছে ছিলেন ‘পিন্টু ভাই’, বাংলাদেশের ফুটবলে অবিস্মরণীয় এক চরিত্র। যিনি ফুটবলের টানে নিজের বাসর ছেড়ে রাজশাহীতে খেলতে চলে গিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দলের অধিনায়ক তখন প্রখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক কামরুজ্জামান। আন্তবিশ্ববিদ্যালয় খেলা চলছিল রাজশাহীতে। নববধূকে ফেলেই জাকারিয়া পিন্টু খেলতে চলে যান। এসব নিয়ে গল্পে বলতেন, ‘আমার তিন ছেলে-মেয়ের কোনোটিরই জন্মের সময় স্ত্রীর পাশে ছিলাম না। খেলার জন্য বাইরে ছিলাম।’

২৪ এপ্রিল, ১৯৭১। নদীয়ার কৃষ্ণনগরে স্বাধীন বাংলা দলের প্রথম ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়কের সঙ্গে পতাকা বিনিময় করছেন জাকারিয়া পিন্টু

দেখা হলেই ফিরে যেতেন অতীতে। বেশি উঠে আসত স্বাধীন বাংলা দলের স্মৃতি। ভারতে ঘুরে ঘুরে ম্যাচ খেলার ভালো-মন্দ কতশত ঘটনা! ট্রেনে তাঁরা বিহারের সিয়ন গেলেন খেলতে। ৩০ জনের রিজার্ভ বগি। রাত তিনটার দিকে এক জায়গায় ট্রেন থামল। স্থানীয় একদল লোক ওই বগিতে ঢুকে যায়। ৫০-৬০ জনের সেই দলটি ‘ইনকিলার জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেয়। স্বাধীন বাংলা দলের সদস্যরা ভয়ে কাঁপছিলেন।

সেসব দিনে ফিরে জাকারিয়া পিন্টু বলেছিলেন, ‘ওরা যাওয়ার পর দেখা গেল সালাহউদ্দিনের স্যান্ডেল হাওয়া!’ বিহার–যাত্রায় আরেকটি ঘটনাও খুব বলতেন ‘পিন্টু ভাই’। সেখানে হোটেল গিয়ে মশা, ছারপোকার অত্যাচারে পড়েন।  
জাকারিয়া পিন্টুর কোনো খারাপ অভ্যাস ছিল না। ধূমপান করতেন না। তাস পেটাতেন না। তিনিও চাইতেন না সতীর্থরা এসব করুক। কিন্তু ‘দুষ্ট’ সতীর্থরা তা কি আর মানত!

১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় দল মারদেকা কাপে খেলতে গেলে কুয়ালালামপুরের ইয়ুথ হোটেলে রাখা হলো। অধিনায়ক পিন্টু রাত ৯টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েন। প্রতাপ, কায়কোবাদ, নান্নু, সালাহউদ্দিন একসঙ্গে ব্রিজ খেলছিলেন সালাহউদ্দিনের রুমে। কোনো কারণে পিন্টুর ঘুমে ভেঙে যায়। তিনি উঠে দেখেন প্রতাপ রুমে নেই। সালাহউদ্দিনের রুমের জানালা ফাঁক করে দেখেন ধুমছে ব্রিজ খেলা চলছে। পিন্টু দরজায় টোকা দিলেন। ‘পিটু ভাই এসেছেন’ টের পেয়ে প্রতাপ আর কায়কোবাদ নাকি আলমারির ভেতর লুকিয়ে পড়েন! সতীর্থ ও স্বাধীন বাংলা দলের সহকারী অধিনায়ক প্রতাপ শঙ্কর হাজরা এ নিয়ে মজা করে বলছিলেন, ‘উনি ছিলেন একটা বাচ্চা ছেলের মতো। তাঁকে আমরা কোনোভাবে ডিস্টার্ব করতাম না।’

১৯৭৩ সালের মারদেকা কাপের বাংলাদেশ দল। সবার বাঁয়ে দাঁড়ানো অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু

‘হু ইজ দিস ফুটবলার?’

১৯৫৭ সালে ইস্টএন্ড দিয়ে ঢাকার শীর্ষ ফুটবলে শুরু। পরের বছরও একই দলে খেলেন। ১৯৫৯-৬০ কাটান ওয়ান্ডারার্সে। ১৯৬১-৭৫ পর্যন্ত সময় মোহামেডানে। লম্বা এই ফুটবল ভ্রমণে একটা ম্যাচের কথা আলাদা করে মনে পড়ত তাঁর। সেটি ষাটের শুরুতে। ঢাকায় কলকাতা মোহামেডান ছয় গোলে উড়িয়ে দিল ঢাকা মোহামেডানকে। সাদা–কালোর জন্য বিব্রতকর অবস্থা। কলকাতা মোহামেডানের পরের ম্যাচ ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের সঙ্গে। জাকারিয়া পিন্টু তখন ওয়ান্ডারার্সে।

ক্লাব থেকে তখন পিন্টুকে বলা হলো, ঢাকা মোহামেডানের সঙ্গে হ্যাটট্রিক করা কলকাতা মোহামেডানের রহমতউল্লাহকে আটকাতে হবে। চ্যালেঞ্জটা নিলেন পিন্টু এবং আটকে দিলেন রহমতউল্লাহকে। মাঠে নাকি রহমতউল্লাহ পিন্টুকে বলেছিলেন, ‘ক্যায়া ভাই, কেয়া হামারা পাছ আতায়া হ্যায়।’ সেদিন ওয়ান্ডারার্স জিতেছিল ২-১ গোলে। ম্যাচের পর অতিথি দলের কোচ ওয়ান্ডারার্সের কোচকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘হু ইজ দিস ফুটবলার?’

বাবা চেয়েছিলেন ছেলে চিকিৎসক হবে

১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি নওগাঁয় তাঁর জন্ম। বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন, চিকিৎসকও। পিন্টু তাঁর বড় ছেলে। বাবা চাইছিলেন ছেলে চিকিৎসক হবে। কিন্তু ছেলের পড়াশোনায় মন বসত না। বাবার কাছে স্কুলশিক্ষকদের নালিশ, ‘আপনার ছেলে ক্লাস রেখে খেলার মাঠে চলে যায়।’ বাবা ভাবলেন ছেলে বুঝি বখে যাচ্ছে। একদিন নিজেই মাঠে গিয়ে হাতেনাতে ধরে আনেন ‘আসামি’। বাড়ি এনে ছেলের হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন। কিশোর পিন্টু ওই অবস্থায় ঘুমিয়ে যান। হঠাৎ পিন্টু স্বপ্নে দেখেন, বল শট করে জালে পাঠালেন। জেগে উঠেও তা–ই করলেন। বল গিয়ে পড়ে বাবার পেটে। বাবার উপলব্ধি হলো, এই ছেলেকে ফুটবল থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা যাবে না। সেদিন হয়তো বাবা বুঝতে পারেননি ছেলে একদিন বাংলাদেশের ফুটবলে কিংবদন্তির আসনে বসবেন।

জাকারিয়া পিন্টুর ভাই মোহাম্মদ মঈনউদ্দীনও মোহামেডানের জার্সি পরেছেন। দুই ভাই একসঙ্গে খেলছেন সাদা–কালোয়। ছোট ভাই মাঠে গোলমাল পাকালে বড় ভাই পিন্টুকে তা সামাল দিতে হতো। ভাইয়ের নেতৃত্বগুণ ছিল অসাধারণ। রোজা রেখে তাঁর ফুটবল খেলা, মাঠে আঘাত পেয়ে দাঁত পড়ে যাওয়া, ইস্তাম্বুলে আরডিসি কাপে তুরস্কের কাছে পাকিস্তানের ৪-২ গোলে হারা ম্যাচে পাকিস্তানের গোল দুটি তাঁর পাস থেকে হওয়া...কত কী ঘটেছে এক ফুটবল জীবনে! সেপ ব্ল্যাটার, বেকেনবাওয়ার, হোলগার ওবারম্যানদের সঙ্গে ছিল যাঁর পরিচয়।

জীবনের সংগ্রহশালায় দেড় হাজারের বেশি মাঠ ও মাঠের বাইরের ছবি রেখে গেছেন। ঢাকার ফার্মগেটে ইন্দিরা রোডের বাসায় শোকেসে থরে থরে ট্রফি-ছবি সাজিয়ে রেখে চিরবিদায় নিলেন ‘পিন্টু ভাই’। কিন্তু তিনি থাকবেন। দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে, ফুটবলে, বাঙালির মনে।