অভিষেক হয়েছে ‘নতুন রোনালদো’ খ্যাত ভিতর রকির
অভিষেক হয়েছে ‘নতুন রোনালদো’ খ্যাত ভিতর রকির

‘নতুন রোনালদো’র অভিষেকের রাতে জয়ের ‘আনন্দ’ জাভির

লা লিগায় আগের তিন ম্যাচের দুটিতেই পয়েন্ট হারিয়েছিল বার্সেলোনা। গতকাল রাতেও একই পথে ছিল দলটি। লাস পালমাসের বিপক্ষে এই ম্যাচে পয়েন্ট হারালে শিরোপা লড়াই থেকে আরও দূরে সরে যেত বার্সা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পয়েন্ট হারিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ মুহূর্তের পেনাল্টি গোলে বার্সা জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। এই ম্যাচে বার্সার হয়ে অভিষেক হয়েছে ‘নতুন রোনালদো’ খ্যাত তরুণ ব্রাজিলিয়ান ভিতর রকির।

লাস পালমাসের মাঠে এদিন ম্যাচের ১২ মিনিটেই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে বার্সা। প্রথমার্ধে আর গোল শোধ করতে পারেনি দলটি। তবে প্রথমার্ধে বার্সা সেভাবে সুযোগও তৈরি করতে পারেনি। লাস পালমাসের মাঠে বেশ চাপেই ছিল জাভি হার্নান্দেজের দল। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে বার্সা। ৫৫ মিনিটে বার্সাকে সমতায় ফেরান তোরেস। সমতায় ফেরার পর বার্সা যেন ম্যাচের ছন্দও খুঁজে পায়। এ সময় আক্রমণের গতিও বাড়ায় তারা।

তবে সুযোগ তৈরি করেও এগিয়ে যাওয়া হচ্ছিল না কাতালান ক্লাবটির। এর মধ্যে ম্যাচের ৭৮ মিনিটে ফেরান তোরেসের বদলে প্রথমবারের মতো মাঠে নামেন ভিতর রকি। সাম্প্রতিক সময়ে বার্সায় আসা নিয়ে বেশ আলোচনায় ছিলেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ। গোল স্কোরিংয়ে দক্ষতার কারণে তাঁকে তুলনা করা হচ্ছে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিওর সঙ্গেও। মাঠে নেমে অভিষেকে গোল পাওয়ার সুযোগও এসেছিল রকির সামনে। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এই তরুণ। রকির অভিষেক ম্যাচটি একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল সমতাতেই শেষ হবে। কিন্তু নাটক জমে ওঠে ম্যাচের যোগ করা সময়ে।

গোলের পর গুন্দোয়ান

বক্সের ভেতর সুবিধাজনক জায়গায় থাকা বার্সা মিডফিল্ডার ইলকাই গুন্দোয়ানকে ফেলে দেওয়ায় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। এমনকি এই অপরাধে লাস পালমাসের ডালে সিংকগ্রাভেনকে লাল কার্ডও দেখানো হয়। স্পট কিক থেকে গোল করে বার্সাকে ২-১ গোলের দারুণ এক জয় এনে দেন গুন্দোয়ান। এ জয়ে ১৯ ম্যাচ শেষে বার্সার পয়েন্ট ৪১। সমান ম্যাচে শীর্ষ দুইয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ ও জিরোনার পয়েন্ট ৪৮। মূলত গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সবার ওপরে আছে রিয়াল।

ম্যাচ শেষে অবশ্য এই গোল নিয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন লাস পালমাস অধিনায়ক কিয়েরেন রদ্রিগেজ। বলেছেন, ‘আশা করি সব অডিও বেরিয়ে আসবে। এটা স্বাভাবিক ছিল না।’ বার্সা কোচ জাভির মত অবশ্য ভিন্ন, ‘উদ্বেগ ও স্নায়ুচাপ থাকেই। সবাই জিততে চায়। আপনারা যদি আমার সঙ্গে পেনাল্টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, তবে এটা আমার কাছে পরিষ্কার পেনাল্টি ছিল। আমরা শেষ মুহূর্তে পেনাল্টিতে জিতেছি। আমি কিয়েরেনের ব্যাপারটা বুঝতে পারি। কিন্তু এখানে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল এবং এটা পেনাল্টি ছিল।’

এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধে ভালো খেলতে না পারলেও দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ছন্দে ফিরে বার্সা। নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে জাভির মূল্যায়ন, ‘যে আগ্রাসন এবং গতিতে আমরা খেলেছি, আমি খুবই আনন্দিত। প্রথমার্ধে যদিও কঠিন ছিল এবং আমরা সে সময় যথেষ্ট ক্ষুরধার ছিলাম না। বিশেষ করে শেষ মুহূর্তে পাস দেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা যথেষ্ট ভালো খেলেছি। আমরা দারুণভাবে প্রেস করেছি, বল জিতেছি এবং ঠিকভাবে আক্রমণে গিয়েছি।’

দ্বিতীয়ার্ধে দলে আনা পরিবর্তনগুলো নিয়েও বেশ সন্তুষ্ট জাভি, ‘দ্বিতীয়ার্ধে আমি যেসব পরিবর্তন এনেছি, সেগুলো ঠিকভাবে প্রভাব রাখতে পেরেছে। ফাইনাল থার্ডে আমরা তখন বেশ ক্ষুরধার ছিলাম। এরপর ফারেনের গোলটাও আমাদের বেশ উজ্জীবিত করেছে, যা আমাদের প্রয়োজন ছিল।’