জুড বেলিংহাম ও হ্যারি কেইন
জুড বেলিংহাম ও হ্যারি কেইন

ইউরো

কেইন-বেলিংহামদের মুখ খোলা নিষেধ

২০২০ ইউরোর ফাইনালে ইতালির কাছে ইংল্যান্ড কীভাবে হেরেছিল মনে পড়ে?
১-১ সমতার ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ানোর পর পাঁচ শটের তিনটিই মিস করে বসেন মার্কাস রাশফোর্ড, জ্যাডন সানচো ও বুকায়ো সাকারা। সেই ইংল্যান্ডই এবারের ইউরোয় কোয়ার্টার ফাইনালের টাইব্রেকারে ছিল প্রায় নিখুঁত!

সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ সমতার পর টাইব্রেকারে পাঁচ শটের সব কটিই জালে জড়ান ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা। সব শটই ছিল সুইস গোলকিপারের নাগালের বাইরে। আবার ইংল্যান্ডের গোলপোস্টে জর্ডান পিকফোর্ডও ছিলেন দুর্দান্ত। সেভ করেন একটি শট। শেষ পর্যন্ত ৫-৩ ব্যবধানে টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ড। এমন একটি জয়ের পর পেনাল্টি শট নিয়ে কোনো কথা বলেননি ইংল্যান্ড দলের কেউ। কারণ, গ্যারেথ সাউথগেটের নিষেধাজ্ঞা। পেনাল্টি শট নিয়ে হ্যারি কেইন-জুড বেলিংহামদের কথা বলা নিষিদ্ধ করেছেন ইংল্যান্ড কোচ।

যুক্তরাজ্যের দ্য মিররের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের ইউরোয় পেনাল্টি শুটআউট কোনো কথা বলছেন না ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় বা কোচিং স্টাফের কেউ। টুর্নামেন্টের বিভিন্ন সময়ে পিকফোর্ড, মার্ক গিয়েহি ও এজরি কনসাদের পেনাল্টি নিয়ে কথা বলা আটকে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ইংল্যান্ড কোচ দলের সদস্যদের পেনাল্টি কৌশল নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছেন।

সম্প্রতি ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) এক সাবেক সদস্য দলটি স্পট-কিকের পুরোনো ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে কী কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে, সে সব এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যে এনেছেন। এ নিয়ে এফএ এবং সাউথগেট বিরক্ত। এফএ’র সাবেক ‘গেম ইনসাইট’ প্রধান ক্রিস মার্কহাম নরওয়েজিয়ান অধ্যাপক গিয়ে জর্ডেটের একটি বইয়ের জন্য সাক্ষাৎকারে ইংল্যান্ড দলের পেনাল্টি-সম্পর্কিত মনস্তাত্ত্বিক ও কৌশল নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। জানান, ২০১৭ সাল থেকে সাউথগেট কীভাবে ইংল্যান্ড দলের পেনাল্টি শুটআউট নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন।

সাউথগেট ২০১৬ সালে কোচের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ১৯৯০, ১৯৯৬, ১৯৯৮, ২০০৪, ২০০৬ ও ২০১২ সালে বড় টুর্নামেন্টগুলোতে শুটআউটে হেরেছিল ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ১৯৯৬ ইউরোর সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে সাউথগেট নিজেও পেনাল্টি মিস করেছিলেন।

সুইজারল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নেওয়ার পর সাউথগেট তাই বিশেষভাবেই পেনাল্টি শুটআউট নিয়ে কাজ শুরু করেন। ২০২০ ইউরোয় ব্যর্থতার পর যা আরও বেড়েছে। পেনাল্টিতে ভালো করতে মনোবিদ, অ্যানালিস্টও যুক্ত করেছেন দলের সঙ্গে। বাড়তি হিসেবে যোগ হয়েছে পেনাল্টি কৌশল বা অনুশীলন নিয়ে কোথাও কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা। সাউথগেট নিজেও ইংল্যান্ডের পেনাল্টি নিয়ে কথা বলেন না। শেষ ষোলোয় স্লোভাকিয়া ম্যাচের আগে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘অন্যরা বছরের পর বছর ধরে যা করেছে, তাই করছি। আমরা আমাদের প্রস্তুত রাখব এবং যতটা সম্ভব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কাজ করার চেষ্টা করব।’

কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের হয়ে টাইব্রেকার শট নেন কোল পালমার, বেলিংহাম, সাকা, ইভান টনি ও ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড। প্রত্যেকের শটই ছিল জোরালো এবং লক্ষ্যভেদী। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এফএর গবেষণায় দেখা গেছে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা আগে তাড়াহুড়া করে পেনাল্টি নিতেন। কিক নেওয়ার আগে কোথায় দাঁড়াতে হবে এবং কোথায় লক্ষ্যভেদ করতে হবে—এ সব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।