তারকাদের সবকিছু অনুকরণ করতে নেই। কারণ, প্রায় অসম্ভব ও অবিশ্বাস্য সেসব কাজ তাঁরা পারেন বলেই তারকা কিংবা কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কথাই ধরুন। ৩৮ বছর বয়স হলেও এখনো কী দুর্দান্ত ফিটনেস! খাদ্যাভ্যাসকে নিয়মের মধ্যে বেঁধে ও শরীরের যত্ন নিয়ে এই বয়সেও পেশাদার ফুটবলে আলো ছড়াচ্ছেন রোনালদো। এমন ফিটনেস দেখে কার লোভ হবে না! ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাসের মিডফিল্ডার গ্যাব্রিয়েল মেনিনোকে তাই পুরোপুরি দোষও দেওয়া যায় না।
বেচারা শখ করেছিলেন রোনালদোর মতো ফিটনেস অর্জন করবেন। পর্তুগিজ তারকার খাদ্যাভ্যাসের সূচি তাই অনুসরণ করেছিলেন। আর তাতেই বেধেছে বিপত্তি। এই সূচি মানতে গিয়ে মেনিনোর মনে হয়েছিল, তিনি মারা যাচ্ছেন! ব্রাজিলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘পালমেইরাস কাস্ট’-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় এ কথা বলেছেন মেনিনো।
পালমেইরাসের বয়সভিত্তিক দলে বেড়ে ওঠা ২২ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার ২০১৯ সাল থেকে খেলছেন ক্লাবটির মূল দলে। ২০২০-২১ মৌসুমে পালমেইরাসের পর্তুগিজ কোচ আবেল ফেরেইরার তৃতীয় পছন্দ ছিলেন মেনিনো। অর্থাৎ দলে তাঁর পজিশনে কোচের তৃতীয় পছন্দের খেলোয়াড়। এ অবস্থায় কোচের প্রথম পছন্দের খেলোয়াড় হতে রোনালদোর মতো হতে চেয়েছিলেন মেনিনো।
আর তাই শুরু করেছিলেন রোনালদোর মতো খাদ্যাভ্যাস। সকালে একটি ডিম ও সাপ্লিমেন্টস, বিকেলে অনুশীলনের আগে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও সাপ্লিমেন্টস। দুপুরে ও রাতে গ্রিলড মাছ কিংবা মাংস এবং সালাদ—এভাবে খাদ্যাভ্যাস শুরু করেছিলেন মেনিনো।
ফলটা শুনুন তাঁর মুখেই, ‘আমার ওজন ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু আমি নিজেকে বদলাতে চেয়েছিলাম। আমি পালমেইরাসের পুষ্টিবিদ মিরটেসকে বলি আমার জন্য ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো করে খাদ্যতালিকা বানিয়ে দিতে। আমি রোনালদোর মতো হতে চেয়েছিলাম।’
রোনালদোর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করতে গিয়ে কী পরিণতি হলো তা জানাতে গিয়ে মেনিনো বলেছেন, ‘আমি ওয়ার্মআপ করতাম এবং কোনোভাবে আর দৌড়াতে পারতাম না। আমার শুধু মনে হতো, আমি মরে যাব। ম্যাচের পাঁচ মিনিট পরই আমি মাঠে আর দৌড়াতে পারতাম না। আমার পরিবর্তে বিকল্প খেলোয়াড় নামানোর প্রয়োজন হতো। সে (মিরেটস) বুঝতে পেরেছিল আমি ভালো ছিলাম না।’
অবশ্য এই নিয়ম মেনে মেনিনো মরতে বসলেও রোনালদো ৩৮ বছর বয়সেও দারুণভাবে ফিটনেস ধরে রেখে পারফরম্যান্স দেখিয়ে যাচ্ছেন। সৌদি প্রো লিগে ৫ ম্যাচে ৮ গোল করে হয়েছেন ফেব্রুয়ারি মাসের সেরা খেলোয়াড়।