বাংলাদেশ ফুটবল বলের প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা
বাংলাদেশ ফুটবল বলের প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা

জাতীয় দল থেকে তপু-আনিসুরদের বাদই দিলেন কাবরেরা

শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাময়িকভাবে পাঁচ ফুটবলারকে নিষিদ্ধ করেছে বসুন্ধরা কিংস। বাফুফেকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠিও দিয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের টানা চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। এখানেই শেষ নয়, অভিযুক্ত ফুটবলারদের যে তিনজন জাতীয় দলে খেলে আসছিলেন, তাঁদের এবার জাতীয় দল থেকে বাদ দিয়েছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। ১২ ও ১৭ অক্টোবর মালদ্বীপের সঙ্গে ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রাক্‌–বাছাইয়ের দুটি ম্যাচের জন্য আজ রাত সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় ধাপে যে ১২ জনের নাম ঘোষণা করেছেন কোচ, তাতে নেই মদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত ফুটবলাররা।

কিংসের অভিযুক্ত পাঁচ ফুটবলার হলেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ, রিমন হোসেন, গোলকিপার আনিসুর রহমান, ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ ও শেখ মোরছালিন। এর মধ্যে আনিসুর, তপু বর্মণ ও শেখ মোরছালিন নিয়মিত জাতীয় দলের একাদশের খেলোয়াড়। ১৮ বছরের তরুণ শেখ মোরছালিন গত জুনে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নজর কেড়েছেন। আফগানিস্তানের সঙ্গে সর্বশেষ দুটি ম্যাচেও খেলেছেন। এখন তিনি জাতীয় দলে নিয়মিত মুখ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গোল করেছেন। জাতীয় দলে ৭ ম্যাচ খেলে ৩ গোল করেছেন। রিমন কিছুদিন আগে জাতীয় দলে নিয়মিত খেললেও এখন নিয়মিত নন। তৌহিদুর রহমান জাতীয় দলে নেই বেশ কয়েক বছর। কিংসের হয়েও তিনি নিয়মিত নন।

বাদ পড়লেন তপু বর্মণ

কোচ মালদ্বীপ ম্যাচের জন্য প্রথম ধাপের ১৫ জনকে ডেকেছিলেন ক্যাম্পে। ২ অক্টোবর এএফসি কাপের ম্যাচ থাকায় তখন ডাকা হয়নি কিংসের খেলোয়াড়দের। পরে জামাল ভূঁইয়া আর্জেন্টিনা থেকে এসে যোগ দেন। অবশেষে আজ বাকি খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে ডেকেছেন কোচ। তাতে কিংসের খেলোয়াড় যেখানে অন্তত ১০ জন থাকার কথা, সেখানে আছেন ৭ জন। তাঁরা হলেন বিশ্বনাথ ঘোষ, তারিক কাজী, সাদ উদ্দিন, সোহেল রানা, সোহেল রানা (জুনিয়র), রাকিব হোসেন ও মতিন মিয়া। এ ছাড়া ডাক পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণ, স্ট্রাইকার আমিনুর রহমান সজীব, ফর্টিস এএফসি মিডফিল্ডার মজিবর রহমান জনি, ফরোয়ার্ড রফিকুল ইসলাম ও শেখ রাসেলের ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহিম। হাতে তেমন সময় নেই। ২৩ জনের দল নিয়ে ১০ অক্টোবর বাংলাদেশ দলের মালে যাওয়ার কথা।

বাংলাদেশ দলের গোলকিপার আনিসুর রহমান

এর আগে আজ বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘ওই খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা কঠিন। কারণ, আমি মনে করি শৃঙ্খলাজনিত শাস্তি সবার জন্যই হওয়া উচিত। আমার যেটা মনে হয়, কোচ সম্ভবত তাদের জাতীয় দলে নেবে না। যখন একটা ক্লাব শৃঙ্খলাজনিত ব্যবস্থা নেয়, বাফুফেকে একটা চিঠি দিয়ে ফেলে, তখন আমার মনে হয় না তারা জাতীয় দলের জন্য বিবেচনায় আসবে। ক্লাব যখন শৃঙ্খলাজনিত কারণে ব্যবস্থা নেয়, বাফুফের দায়িত্ব হয়ে যায় বিষয়টি দেখা। আমরা সেটা দেখছি। তদন্ত করতে দিয়েছি।’

মদ–কাণ্ডে বাদ নজর কাড়া মোরছালিন

জানা গেছে, আজ বাফুফে সভাপতির সঙ্গে দেখা করেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তখনই তিনি বাফুফে সভাপতিতে জানিয়ে দিয়েছেন যে ওই খেলোয়াড়দের দলে নেবেন না। শেষ পর্যন্ত সেটিই হলো।

অভিযোগ আছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর এএফসি কাপে মালদ্বীপের মাজিয়া ক্লাবের বিপক্ষে মালেতে ৩-১ গোলে অপ্রত্যাশিত হারের পরদিন দেশে ফেরার সময় ওই পাঁচ ফুটবলার অবৈধ মদ এনেছিলেন। হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা তাঁদের কাছে ৬৪ বোতল বিদেশি মদ পেয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। তবে অনেকের সন্দেহ, ১০০ বোতলের কাছাকাছি ছিল মদ। বিমানবন্দর কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, দুটি ব্যাগে আসা মদের পরিমাণ ১০০ লিটারের বেশি।