ফুটবল ছেড়ে অনেক আগেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। তবে মানুষ তাঁকে মনে রেখেছে ফুটবলের কারণেই। তিনি যে খেলাটির সর্বকালের সেরাদের একজন—রোমারিও। ব্রাজিলের হয়ে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জেতা স্ট্রাইকার রাজনীতির পাশাপাশি ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন।
সম্প্রতি রিও ডি জেনিরোর ক্লাব আমেরিকা আরজের সভাপতি হয়েছেন রোমারিও। ২০০৯ সালে এই ক্লাবের হয়েই পেশাদার ক্যারিয়ারে নিজের শেষ ম্যাচটি খেলেছিলেন। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে ২৪ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিজ শহরের ক্লাব আমেরিকা আরজের হয়ে বিদায়ী ম্যাচ খেলতে নামার আগে বিশ্বের আরও চারটি মহাদেশের ৯টি ক্লাবের জার্সিতে তাঁকে দেখা গেছে। কিছু ক্লাবের সঙ্গে চুক্তির সময় একটি অদ্ভুত শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন রোমারিও। কী সেই শর্ত—সম্প্রতি ক্রীড়াবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্লেয়ার্স ট্রিবিউন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন।
খেলোয়াড়ি জীবনে রাতের বেলা বাইরে ঘোরাঘুরি করতে ভীষণ পছন্দ করতেন রোমারিও। ক্লাব কর্তৃপক্ষ যেন তাঁকে সেই সুযোগ প্রদানে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেই শর্তেই চুক্তি করতেন। তবে রাতে ঘুরতে বেরোলেও কখনো অনুশীলন মিস করেননি রোমারিও। ক্যারিয়ারে হাজার গোল করা এই কিংবদন্তি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, এটা সত্যি যে কিছু ক্লাবে আমি এই শর্তে চুক্তি করতাম, রাতের বেলা আমাকে বাইরে বেরোনোর অনুমতি দিতে হবে। তবে আমি কখনো অনুশীলন মিস করিনি। বিষয়টি আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই। যখন আমি ব্রাজিলে ফিরে এলাম, ক্লাব সভাপতিদের সেই শর্তের কথা বলেছিলাম।’
বাইরে আড্ডা দিয়ে অনেক রাত করে ক্লাবে ফেরায় সকাল সকাল অনুশীলনে যেতে অসুবিধা হতো রোমারিওর। সে কারণে তিনি বেশির ভাগ দিন বিকেলে অনুশীলন করতেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠতে আমার সমস্যা হতো। তাই আমি বিকেলে অনুশীলন করতে যেতাম। এ নিয়ে মানুষ অনেক আজেবাজে কথা বলত। “আহ, রোমারিও রাতে ঘুমায় না। সে অনেক দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে। সে অনুশীলন করে না।” অনুশীলনে আমি ঠিকই যেতাম। তবে সকাল ৯টায় নয়। নেতারা (ক্লাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা) এটা জানতেন। তাঁরা কোচদের এ ব্যাপারে জানিয়ে দিলে এ নিয়ে আমাকে আর সমস্যায় পড়তে হতো না।’
রাতে বাইরে ঘুরতে বেরোলেও সেটা তাঁর ক্যারিয়ারে কোনো ক্ষতি করেনি বলেও সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন ৫৮ বছর বয়সী রোমারিও। কখনো নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করেননি বলেও দাবি তাঁর, ‘ম্যাচের আগের রাতে আমি কখনো বাইরে যাইনি। ধরুন, রোববার খেলা থাকলে আমি শুক্রবার যেতাম (শনিবারে নয়)। অবশ্য কয়েকবার এ রকম হয়েছে (শনিবারে গেছি)। কিন্তু সর্বোচ্চ রাত ১০টার মধ্যে আমি ফিরে এসেছি। আমি কখনো ধূমপান করিনি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ আমি কখনো মাদক সেবন করিনি। এমনকি একটি ফোঁটাও নয়। কে বলেছে, মজা করতে হলে মাতাল হতে হবে?’