তেই সাভানিঁয়ে, মাত্তিয়া জাক্কানি, ইসি পালাজোন, আইজ্যাক সাকসেস, মুনাইম এল ইদ্রিসি...এখানেই থামা যাক!
প্রশ্ন হচ্ছে, ওপরের নামগুলো যাঁদের, তাঁদের কি চেনেন? ভোটাভুটি হলে কমপক্ষে ৯০% মানুষের উত্তর হতো ‘না’। ধ্যানমগ্ন ঋষির মতো কেউ ইউরোপীয় ফুটবলে ডুবে থাকলেও তাঁর পক্ষে এই খেলোয়াড়দের চেনা কঠিন। যাঁরা টুকটাক খোঁজখবর রাখেন, তাঁদেরও চেনার কথা নয়। কারণ, বেশির ভাগ ফুটবলপ্রেমীর আগ্রহের জায়গা পরাশক্তি ক্লাবগুলো। সাভানিঁয়ে, পালাজোন, সাকসেস, ইদ্রিসিদের কেউ যে সে রকম বড় ক্লাবে খেলেন না!
তবে ফুটবলের পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘এফবিরেফ’ বলছে, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের এবারের মৌসুমে ‘অচেনা’ এই নামগুলোই সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হয়েছে। প্রতিপক্ষের বাধার মুখে পড়াদের তালিকায় যিনি সবার ওপরে আছেন, তাঁকে অবশ্য সবাই চেনেন—ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। বর্ণবাদী আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়া এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে এ মৌসুমে রেকর্ড ৯৪ বার ফাউল করা হয়েছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার বিপক্ষে গত রাতে ২–১ ব্যবধানে হারের ম্যাচেও দুবার ফাউলের শিকার হয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা।
এ মৌসুমে ফাউলের শিকার হওয়া খেলোয়াড়দের তালিকায় যৌথভাবে দুইয়ে আছেন ফরাসি ক্লাব মঁপেলিয়ের সাভানিঁয়ে ও ইতালিয়ান ক্লাব লাৎসিওর জাক্কানি। এই দুই মিডফিল্ডারকে ৭১ বার করে ফাউল করেছেন প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা।
গত চার মৌসুমে লিগ আঁ–তে ২০০ বার সফলভাবে ড্রিবল করেছেন সাভানিঁয়ে। ফ্রি–কিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত এই মিডফিল্ডার বেশ কয়েকটি দর্শনীয় গোল করেছেন। আর সিরি ‘আ’–তে চমক দেখিয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে আসা লাৎসিওকে টানছেন জাক্কানি। গত রাতে তাঁর গোলেই জোসে মরিনিওর এএস রোমাকে হারিয়েছে লাৎসিও।
সাভানিঁয়ে–জাক্কানির পরেই আছেন ইসি পালাজোন। স্প্যানিশ লা লিগার ক্লাব রায়ো ভায়েকানোর এই উইঙ্গারকে বর্তমান মৌসুমে ৬৯ বার ফাউল করা হয়েছে। তালিকায় এরপর আছেন ইতালিয়ান ক্লাব উদিনেসের ফরোয়ার্ড আইজাক সাকসেস। নামের শেষাংশের বাংলা অর্থ ‘সাফল্য’ হলেও বল নিয়ে ৬৮ বার প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা বাধা দিয়ে তাঁর প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হওয়াদের তালিকায় একই ক্লাবের একাধিক খেলোয়াড়ও আছেন। তাঁরা হলেন ক্রিস্টাল প্যালেসের উলফ্রাইড জাহা ও জর্ডান আইয়ু। জাহাকে ফাউল করা হয়েছে ৬৬ বার, তাঁর আক্রমণভাগের সঙ্গী আইয়ুকে ৬০ বার। ম্যানচেস্টার সিটি তারকা জ্যাক গ্রিলিশও ৬০ বার ফাউলের শিকার হয়েছেন। বেশ কয়েকটি ম্যাচে পেপ গার্দিওলা গ্রিলিশকে বদলি নামিয়েছেন, আবার কখনো শুরুর একাদশে রাখলেও পুরো ৯০ মিনিট খেলাননি। নয়তো আরও বেশি ফাউলের শিকার হতে পারতেন গ্রিলিশ।
ফাউলের প্রসঙ্গ এলেই সবার আগে ব্যথায় কাতর নেইমার জুনিয়রের ছবি চোখে ভেসে ওঠে। মাঠে নেইমারের পড়ে যাওয়া কিংবা গড়াগড়ি খাওয়াকে কেউ কেউ অভিনয়ও বলে থাকেন। তবে পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকা যে আক্ষরিক অর্থেই অতিমাত্রায় ফাউলের শিকার হন, সেটা তো এফবিরেফ–এর তথ্যই বলে দিচ্ছে।
গত এক দশকে রেকর্ড ৩৩ বার চোটে পড়া নেইমার এ মৌসুমে ৬৫ বার ফাউলের শিকার হয়েছেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি লিগ আঁ–এর ম্যাচে লিলের বিপক্ষে চোটে পড়ে মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে তাঁর। এক মাসে আরও পাঁচবার মাঠে নেমেছে পিএসজি। যে হারে ফাউলের শিকার হচ্ছিলেন, তাতে চোটে না পড়লে নেইমার নিশ্চয় ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ ভিনিসিয়ুসের পাশেই থাকতেন।