ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো হয়তো একটু আফসোসই করছেন! সেদিন হলুদ কার্ড দেখে নিষিদ্ধ না হলে আজ নিশ্চয়ই গোলবন্যায় নাম লেখাতেন নিজেও। লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে রোনালদোর রেকর্ডও বেশ দুর্দান্ত। এই দলের বিপক্ষে তিনি ১১ ম্যাচে করেছেন ১১ গোলে। সবশেষ খেলা ম্যাচটিতেও করেছিলেন জোড়া গোল। কিন্তু টানা দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখে নিষেধাজ্ঞা থাকায় খেলতে পারেননি ‘সিআর সেভেন’।
তবে রোনালদো না থাকার পরও লুক্সেমবার্গকে উড়িয়ে দিতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি পর্তুগালকে। গনসালো রামোস-দিয়েগো জোতারা একে একে বল জড়িয়েছেন ৯ বার, যা পর্তুগালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়ও বটে। রামোস, জোতা ও ইনাসিও করেছেন ২টি করে গোল। আর রিকার্ডো হোর্তা, ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও জোয়াও ফেলিক্স করেছেন ১টি করে গোল। ফার্নান্দেজ অবশ্য অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিক করেছেন এদিন।
রোনালদোর বিপক্ষে বারবার নাস্তানাবুদ হওয়া লুক্সেমবার্গ হয়তো এদিন একটু স্বস্তি নিয়েই নেমেছিল। কে জানে, ভেবেছিল রোনালদোবিহীন পর্তুগাল হয়তো অতটা ধারালো হবে না। তবে সে ধারণা ভুল প্রমাণ করতে পর্তুগালের সময় লাগে ১৭ মিনিট। এর মধ্যেই যে ইনাসিও আর রামোসের লক্ষ্যভেদে গোলে এগিয়ে যায় পর্তুগাল।
প্রথমে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ইনাসিও, এরপর নিখুঁত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান বাড়ান রামোস। এরপর ৩৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় গোলটি করেন রামোস। রাফায়েল লিয়াওয়ের অ্যাসিস্টে করা এই গোলও হয়েছে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে। বিরতির আগমুহূর্তে যোগ করা সময়ে করা গোলটি ছিল প্রথম গোলের পুনরাবৃত্তি। ফার্নান্দেজের ক্রসে ইনাসিওর হেডে ব্যবধান ৪-০ করে পর্তুগাল।
বিরতির পর লিড ৫-০ করতে পর্তুগালের সময় লাগে ৫৭ মিনিট। দুর্দান্ত এক দলীয় প্রদর্শনীতে তৈরি হওয়া আক্রমণ থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন জোতা। ১০ মিনিট পর লক্ষ্যভেদ করেন হোর্তা। জোতার পাস থেকে ওয়ান টাচ ফিনিশিংয়ে ব্যবধান ৬-০ করেন ক্লাব ব্রুগা তারকা। ৭৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের সপ্তম গোলটি করেন জোতা। এরপর স্কোরশিটে নাম লেখান ৩ অ্যাসিস্ট করা ফার্নান্দেজও। সেটি ছিল পর্তুগালের ৮ম গোল। এটুকুতেও যেন তুষ্ট হতে পারেনি পর্তুগিজরা। ৮৮ মিনিটে ফেলিক্সের চোখধাঁধানো এক গোলে লিড ৯-০ করে তারা।
এই জয়ে ইউরো ২০২৪–এর বাছাইপর্বে অপরাজিতই থাকল পর্তুগাল। শুধু তাই নয়, এখন পর্যন্ত পর্তুগাল প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ২৪ বার। বিপরীতে হজম করেনি এক গোলও। এখন পরের ম্যাচ দিয়েই জার্মানিতে অনুষ্ঠিতব্য ইউরোর টিকিট নিশ্চিত করে ফেলতে পারে পর্তুগাল। তিন ম্যাচ হাতে রেখে ইউরোর টিকিট পেতে হলে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে জিততে হবে পর্তুগালকে আর সে সঙ্গে প্রার্থনা করতে হবে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে লুক্সেমবার্গ যেন জয় না পায়। তবে এই সমীকরণ না মিললেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। পর্তুগাল যে ছন্দে এগোচ্ছে, ইউরোর টিকিট পাওয়াটা এখন শুধুই সময়ের ব্যাপার।
এই ম্যাচ শেষে পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ বলেন, ‘গনসালো রামোস দেখিয়েছে সে কী করতে পারে। দিয়েগো জোতাও একই কাজ করেছে। আমাদের এমন খেলোয়াড় প্রয়োজন, যারা ম্যাচ জেতাতে পারে। এই দল বিশেষ। তাদের নিয়ে তুলনা করার দরকার নেই। ক্রিস্টিয়ানো গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একইভাবে তাঁকে ছাড়াও আমাদের দল জিততে প্রস্তুত।’