মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌসুম শেষ করেছেন লিওনেল মেসি। প্লে অফের আগপর্যন্ত ১৯ ম্যাচ খেলে ২০ গোলের পাশাপাশি ১০টি সহায়তাও করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। মেসির এমন পারফরম্যান্সেই আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপে শীর্ষে থেকে শেষ করেছে ইন্টার মায়ামি।
মেসির এমন পারফরম্যান্স শুধু ইন্টার মায়ামিকেই শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছে তা নয়, এর ফলে অর্থনৈতিকভাবেও এমএলএস ব্যাপকভাবে লাভজনক খাত হয়ে উঠেছে। যাকে এখন ইউরোপীয় এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে ‘মেসি ইফেক্ট’।
জানা গেছে, এমএলএস এবার উপস্থিতি এবং স্পনসরশিপ থেকে রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছে। এমনকি এখন তারা উত্তর আমেরিকায় আইস হকি লিগকে (এনএইচএল) ছাড়িয়ে যাওয়ার পথেও আছে। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইইজির দেওয়া হিসাব অনুযায়ী দুই মৌসুম আগে ফুটবলে আয় ছিল ৬৮ কোটি ডলার। যেখানে আইস হকি লিগের আয় ছিল ৭৫ কোটি ডলার। তবে মেসি আসার পর এই চিত্র পুরোপুরি বদলে যাচ্ছে।
বর্তমানে মেসির প্রভাবে প্রতিটি খাতেই এমএলএসের আয় তরতর করে বেড়ে চলেছে। ২০২৩ সালে অ্যাপল ও এমএলএসের প্রায় ১০ বছরের জন্য আড়াই বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়। সেই চুক্তির সুফল এখন দারুণভাবে ভোগ করছে অ্যাপল। সিএনএনের তথ্যমতে, মেসির প্রথম ম্যাচের দিন অ্যাপল একসঙ্গে ১ লাখ ১০ হাজার সাবস্ক্রাইব লাভ করে। এরপর থেকে এই সংখ্যা ক্রমেই বেড়েছে।
শুধু অ্যাপলে খেলার ক্ষেত্রেই নয়, মাঠে এসে খেলা দেখার দিক থেকেও ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা গেছে। এমএলএসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে লিগ ম্যাচে মাঠে এসে খেলা দেখেছেন ১ কোটি ১০ লাখ দর্শক।
এমনকি এ সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনুসারীর সংখ্যা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। যেমন টিকটকে অনুসারীর সংখ্যা বেড়েছে ২৬ শতাংশ, ইউটিউবে ২১ শতাংশ এবং ইনস্টাগ্রামে ১০ শতাংশ। বলা হচ্ছে, এই সংখ্যা উত্তর আমেরিকার যেকোনো খেলার মধ্যে সর্বোচ্চ। যার ফলাফলস্বরূপ এই বছর এমএলএস নতুন পার্টনার পেয়েছে ১৮টি এবং স্পনসরশিপ থেকে আয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
গত ফেব্রুয়ারিতে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার জনপ্রিয় অ্যাথলেটদের মধ্যে সবার ওপরে জায়গা করে নিয়েছেন মেসি। এ যাত্রায় তিনি পেছনে ফেলেছেন মাইকেল জর্দান ওটম বার্ডির মতো শীর্ষ তারকাকে। ইন্টার মায়ামির ওপর মেসির অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপণনবিশেষজ্ঞ এবং অধ্যাপক লুক ডুপোন্ট বলেছেন, ‘মেসি আসার পর ক্লাবের আয় বেড়েছে চার গুণ।’ এখন সামনের দিনগুলোতে মেসি ইফেক্টে এই আয় কোথায় গিয়ে থামে, সেটাই দেখার অপেক্ষা।