এসি মিলান ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চারবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন কার্লো আনচেলত্তি
এসি মিলান ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চারবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন কার্লো আনচেলত্তি

চ্যাম্পিয়নস লিগ

বার্নাব্যুতে আজ মুখোমুখি আনচেলত্তির অতীত ও বর্তমান

‘আজ দুজনের দুটি পথ’—প্রতিপক্ষ যখন রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলানের ভক্তরা এমন গান গাইতেই পারেন।

নিজেদের ক্লাবের অতীত গৌরবের কথা মনে করেই এমন কিছু গাইতে পারেন এসি মিলানের সমর্থকেরা। একটা সময় ইউরোপে রিয়াল মাদ্রিদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তো মিলানের লাল-কালো জার্সির ক্লাবটিই ছিল।

২০০৭ সালে মিলান যখন সপ্তমবার ইউরোপের সেরা হলো, ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি জয়ে রিয়াল এগিয়ে ছিল মাত্র দুই ধাপ। ১৭ বছর পর আজ যখন সেই দুই দল মুখোমুখি চ্যাম্পিয়নস লিগের লিগ পর্বে, এসি মিলান শিরোপা সংখ্যা সেই সাতটাই, অন্যদিকে রিয়াল সংখ্যাটাকে ১৫ বানিয়ে ফেলেছে।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আজ যখন আবার সেই পুরোনো ‘শত্রু’রা মুখোমুখি, দুই দলের অতীত-বর্তমানের সেতু-বন্ধন রচনা করবেন কার্লো আনচেলত্তি। সেই আনচেলত্তি, যাঁর কোচিংয়েই ২০০৭ সালে সর্বশেষবার ইউরোপ-সেরা হয়েছিল মিলান। আনচেলত্তির তারকাখচিত দল ফাইনালে হারিয়েছিল লিভারপুলকে, প্রতিশোধ নিয়েছিল দুবছর আগের ইস্তাম্বুলে লিভারপুলের কাছে অবিশ্বাস্য সেই হারের।

এসি মিলান সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির কোচিংয়েই

পাওলো মালদিনি, কাকা, ফিলিপো ইনজাগির সেই মিলানের সঙ্গে আজকের এই মিলানের আকাশপাতাল পার্থক্য। পথ হারিয়ে সান সিরোর ক্লাবটি আজ সাবেক কালের বড় মানুষীর ভগ্নদশা হয়ে আছে।

শুধু কী ২০০৭, চার বছর আগে ২০০৩ সালেও আনচেলত্তির অধীনেই চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল মিলান। স্বদেশি ক্লাব জুভেন্টাসকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ষষ্ঠ শিরোপা জিতেছিল দলটি।

এর আগে খেলোয়াড় হিসেবেও এসি মিলানের হয়ে দুবার ইউরোপসেরা হওয়া আনচেলত্তি এবারের রিয়াল-মিলান দ্বৈরথকে সামনে রেখে পুরোনো স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন। সোমবার ইতালির স্কাইয়ের সঙ্গে কথা বলকে গিয়ে পুরোনো দলকে শুভকামনা জানালেন, ‘আমার অতীত বিবেচনায় এই ম্যাচটিতে বিশেষ বলতেই হবে। আশা করছি ভালো একটি ম্যাচই হবে। মিলান হয়তো (মৌসুমে) ভালো শুরু করতে পারেনি তবে দলটিতে তো মেধার কোনো ঘাটতি নেই।’

রিয়ালকেও দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি

২০০৭ সালে সর্বশেষ ইউরোপসেরা হওয়ার পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এসি মিলানের সেরা সাফল্য ২০২-২৩ মৌসুমে সেমিফাইনাল খেলা। নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টারের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল তারা।

তবে আনচেলত্তির সময়ে মিলান কেমন দল ছিল সেটির প্রমাণ হতে পারে ১৯৮৯ সালে ইউরোপিয়ান কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ। সান সিরোতে রিয়াল মাদ্রিদে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল মিলান। সেই ম্যাচে মিলানের প্রথম গোলটি করেছিলেন মিডফিল্ডে খেলা আনচেলত্তিই। এরপর ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড, মার্কো ফন বাস্তেন, রুড খুলিত ও রবার্তো ডোনাডুনি গোলের খাতায় যোগ করেন আরও চারটি সংখ্যা।

এরপর ধীরে ধীরে পথ হারায় মিলান। সিলভিও বেরলুসকোনির কাড়ি কাড়ি টাকাও লাইনে রাখতে পারেনি মিলানকে।

বাংলাদেশ সময় আজ রাত ২টায় শুরু হবে রিয়াল মাদ্রিদ–এসি মিলান ম্যাচ।

সেই মিলান আজ বার্নাব্যুতে মুখোমুখি হচ্ছে সেই রিয়ালের, যারা কিনা নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে বার্সেলোনার কাছে হেরেছে ৪-০ গোলে। রিয়ালের সেই এল ক্লাসিকো ক্ষতটাকে মিলান আজ আরেকটু রক্তাক্ত করতে পারবে কি? কাজটা কঠিন। এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের পয়েন্ট তালিকাও পক্ষে কথা বলছে না মিলানের। তিন ম্যাচের একটি হারলেও ৬ পয়েন্ট নিয়ে ৩৬ দলের লিগে রিয়াল আছে ১২ নম্বরে। অন্যদিকে প্রথম তিন ম্যাচে দুটিতেই হারা মিলান ৩ পয়েন্ট নিয়েছে আছে ২৫ নম্বরে।

পাওলো ফনসেকার  মিলানকে আজ বার্নাব্যু থেকে মাথা উঁচু করে বের হতে ভিনিসিয়ুসদের বিপক্ষে অবিশ্বাস্যই কিছু করতে হবে।