আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে বন্ধুত্বের আবহ খুব একটা দেখা যায়নি। ম্যাচজুড়েই কথার লড়াই হয়েছে, দেখা গেছে দৈহিক শক্তির প্রদর্শনীও। ১-১ গোলে ড্র হওয়া এই ম্যাচে সবচেয়ে অপ্রীতিকর মুহূর্ত দেখা গেছে ১৭ মিনিটে। তখন একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দুই দলের ডাগআউট। উত্তেজনাকর কিছু বাক্যও বিনিময় হয় দুই দলের কোচিং স্টাফদের মধ্যে। উত্তেজনার মাত্রা একটু বেশিই ছিল আফগানিস্তানের কুয়েতি কোচ আবদুল্লাহ আল মুতেইরির। পরিণামে দেখেছেন লাল কার্ড। কিন্তু নেপালি রেফারি প্রাজওয়াল ছেত্রি মুতেইরির সঙ্গে লাল দেখান বাংলাদেশের সহকারী কোচ হাসান আল মামুনকেও।
আসলে কী ঘটেছিল ওই মুহূর্তে? বাংলাদেশের সহকারী কোচ ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাসান আল মামুন কিন্তু নিজের লাল কার্ড মেনে নিতে পারছেন না, ‘কুয়েতি কোচ কীভাবে আমাদের দিকে বারবার তেড়ে আসছিল, আপনারা সবাই দেখেছেন। মাঠের বাইরে আফগানিস্তানের এক খেলোয়াড় আমাদের বিশ্বনাথ ঘোষকে ফাউল করেছিল। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। এ ধরনের পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতেই পারে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন লাল কার্ড খেলাম? হয়তো আমাদের ডাগআউটে আমি একটু বেশিই প্রতিবাদী ছিলাম।’
আফগানিস্তানের কোচের সঙ্গে তখন কী কথা হয়েছিল হাসান আল মামুনের? বাংলাদেশের এই সহকারী কোচের মুখেই শুনুন, ‘মাঠের বাইরে বিশ্বনাথকে ফাউল করার পর আমরা রেফারির কাছে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলাম। এ সময় আফগানিস্তানের কুয়েতি কোচ আমাদের ডাগআউটের দিকে তেড়ে এসে চিৎকার করতে থাকে। কী বলেছে, আমি ওর কথা বুঝিনি। আমি কোচের দিকে এগিয়ে গিয়ে শুধু বলেছি, “তুমি তোমার খেলোয়াড়দের সামলাতে পারছ না কেন? ওরা কেন আমাদের খেলোয়াড়কে মাঠের বাইরে ফেলে দিল।” ব্যস, এ সময় রেফারি এসে আমাদের দুজনকেই লাল কার্ড দেখায়।’
বেঙ্গালুরুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সেমিফাইনালে কুয়েতের বিপক্ষে ম্যাচেও খেলার একেবারে শেষ দিকে লাল কার্ড দেখেছিলেন মামুন। সেটি মনে করিয়ে দিতে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কও স্মরণ করালেন, ‘সেদিন এই নেপালি রেফারিই ছিল মাঠে। কুয়েতের বিপক্ষে সে ম্যাচে রেফারিং নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম না। আমি মাঠে হয়তো একটু বেশিই প্রতিবাদী হয়ে উঠি। সেদিনও হয়েছিলাম। কিন্তু লাল কার্ডের মতো অপরাধ আমি সাফের সেমিফাইনালেও করিনি, কাল প্রীতি ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষেও করিনি।’
আফগানিস্তানের কোচ মুতেইরির আচরণে বেশ হতাশ হাসান আল মামুন, ‘আফগানিস্তান দলটি ১০ থেকে ১২ দিন ধরেই বাংলাদেশে আছে। ওদের কুয়েতি কোচ বেশ কয়েকটি সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেগুলো পত্রপত্রিকায় পড়ে ওর প্রতি একধরনের শ্রদ্ধাবোধ জন্মেছিল। কিন্তু কাল সে যা করেছে, সেটি সত্যিই হতাশার। আন্তর্জাতিক ম্যাচে এমনটা হওয়া উচিত নয়। তার আচরণ আফগান খেলোয়াড়দেরও উত্তেজিত করেছে। ওরাও মাঠে শক্তি প্রদর্শন করে খেলেছে। আমি সেই ১৯৯৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলেছি। এর আগে বয়সভিত্তিক দলে খেলেছি। খেলা ছাড়ার পর জাতীয় দলের সঙ্গেও কয়েক দফায় কাজ করছি। মুতেইরি কাল যা করেছে, এমনটা আমি দেখিনি বললেই চলে।’