কম ম্যাচ খেলে ৮০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি
কম ম্যাচ খেলে ৮০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি

মেসির ৮০০ গোলের ৮ গল্প

লিওনেল মেসির জন্য প্রায় প্রতিটি ম্যাচই এখন মাইলফলকময়। মাঠে নামলেই গোলে, গোল সহায়তায়, ম্যাচসংখ্যায় কিংবা অন্য কোনো মানদণ্ডে—কোনো না কোনো মাইলফলক স্পর্শ বা রেকর্ড গড়ছেনই।

আজ যেমন পানামার বিপক্ষে ম্যাচে পেশাদার ক্যারিয়ারের ৮০০তম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে করা এই ৮০০ গোলের যাত্রাপথে ছিল স্মরণীয় সব মুহূর্ত, দারুণ সব কীর্তির গল্প।

আট শ গোল পূর্ণ হওয়ার দিনে ফিরে দেখা যাক জানা–অজানা সেই সব গল্পকথা।

দ্রুততম ৮০০

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফুটবল হিস্টরি অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকসের (আইএফএফএইচএস) হিসাব অনুসারে, প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৮০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মাইলফলকটি স্পর্শ করার সময় রোনালদোর ম্যাচসংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৫।

তাঁর চেয়ে ৭৮ ম্যাচ কম খেলে একই মাইলফলকে পৌঁছেছেন মেসি। অর্থ্যাৎ, দ্রুততম ৮০০ গোলের রেকর্ড এখন মেসির।

হাজার পেরিয়ে এক শর কাছে

কাতার বিশ্বকাপেই পেশাদার ক্যারিয়ারের এক হাজারতম ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন মেসি। আজ ১ হাজার ১৭তম ম্যাচে স্পর্শ করলেন ৮০০ গোলের মাইলফলক। ম্যাচপ্রতি গোলগড় ০.৭৮।

৮ শ–ছোঁয়া গোলটির সুবাদে আর্জেন্টিনার হয়ে গোলের সেঞ্চুরির কাছেও পৌঁছে গেছেন মেসি। জাতীয় দলের হয়ে তাঁর গোলসংখ্যা এখন ৯৯। বাকি গোলের মধ্যে বার্সেলোনার হয়ে ৬৭২ (৭৭৮ ম্যাচ), পিএসজির হয়ে ২৯ (৬৬) গোল তাঁর।

প্রথম তিন অঙ্ক যেখানে

৩৫ বছর বয়সে আর্জেন্টিনার মাটিতে এসেছে ৮০০তম গোল। মেসির ক্যারিয়ারের আগের সবগুলো শততম গোলই এসেছে বার্সেলোনার জার্সিতে।

এর মধ্যে এক শ–তম গোলটিকে বেশি স্মরণে থাকার কথা। মেসির ক্যারিয়ারের শততম গোলটি এসেছিল ২০০৯ চ্যাম্পিয়নস লিগে, দিনামো কিয়েভের বিপক্ষে।

শতকছোঁয়া পরের গোলগুলো এসেছিল যথাক্রমে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ২০০তম (২০১১), রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে ৩০০তম (২০১২), গ্রেনাডার বিপক্ষে ৪০০ (২০১৪), ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ৫০০তম (২০১৬), আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৬০০তম (২০১৮) এবং কোলচোনেরোর বিপক্ষে ৭০০তম (২০২০)।

ম্যারাডোনাকে ছাড়িয়ে

৮০০তম গোলের ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি দিন খেলার রেকর্ডও গড়েছেন মেসি। ছাড়িয়ে গেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে।

১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছিলেন ৬ হাজার ৩৫৭ দিন। আজ পানামার বিপক্ষে মাঠে নামার মাধ্যমে মেসির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার হয়ে গেছে ৬ হাজার ৪২৭ দিনের।

বার্সেলোনায় সবই তাঁর

পেশাদার ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটাই কাটিয়েছেন বার্সেলোনায়। মেসির ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ অর্জনও তাই স্প্যানিশ ক্লাবটিতেই। বার্সেলোনার ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি গোল (৬৭২), সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৭৭৮) খেলার রেকর্ড মেসির।

ক্লাব ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ৩৫টি মেজর ট্রফিজয়ী খেলোয়াড়ও এই আর্জেন্টাইনই।

লা লিগায় রাজা

১৭ বছর খেলেছেন লা লিগায়। স্পেনের শীর্ষ লিগের দারুণ সব রেকর্ডও মেসিরই। যার মধ্যে আছে লা লিগা ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোল (৪৭৪), এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল (৫০টি, ২০১১–১২), লিগে সর্বোচ্চ গোল–সহায়তা (১৯২), এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল–সহায়তা (২১টি, ২০১৯–২০)। লা লিগায় সর্বোচ্চ হ্যাটট্রিকের (৩৬) মালিকও মেসিই।

আবার লা লিগায় বিদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৫২০) আর সবচেয়ে বেশি লিগ শিরোপাও (১০) তাঁরই।

চ্যাম্পিয়নস লিগেও ‘প্রথম’

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৪০ গোল নিয়ে সবার ওপরে রোনালদো। ১১ গোল কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে মেসি। তবে ইউরোপ–সেরার প্রতিযোগিতায় শেষ ষোলো (২৯) ও গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ গোল (৮০) এবং সবচেয়ে বেশি ৪০টি ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গোলের রেকর্ড মেসিরই।

চ্যাম্পিনস লিগের এক আসরে এক ম্যাচে পাঁচ গোল করা প্রথম খেলোয়াড়ই মেসিই, যা করেছিলেন ২০১১–১২ মৌসুমের শেষ ষোলোয় লেভারকুসেনের বিপক্ষে।

এক বছরেই প্রায় এক শ

মেসির ক্যারিয়ারের ৮০০ গোলের প্রায় ১০০টিই এসেছিল ২০১২ সালে। সে বছর ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে ৯১ গোল করেছিলেন মেসি।

ফিফার পরিসংখ্যান অনুসারে, এটিই এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও এক বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ডটা মেসির।