কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু বারবার বলছিলেন কথাটা—মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড কিংবা ফিলিপাইনের বিপক্ষে যে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২৩ দল জিততে পারে, সেটি যেন খেলোয়াড়েরা বিশ্বাস করেন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা দলের কোচ মনে করেন, ‘এই দলগুলো আমাদের সামর্থ্যের বাইরের কোনো দল নয়।’
৬ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের চনবুরিতে শুরু হবে এএফসি অনূর্ধ্ব–২৩ ফুটবলের ‘এইচ’ গ্রুপের বাছাইপর্ব। বাংলাদেশ গ্রুপসঙ্গী হিসেবে যে তিনটি দলকে পাচ্ছে, প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা বাংলাদেশের খুব অচেনা কেউ নয়। যদিও শক্তিতে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড কিংবা ফিলিপাইন যে এগিয়ে থাকছে, সেটি মোটেও অস্বীকার করেননি কোচ মিন্টু।
এই তিন দলের বিপক্ষেই অনূর্ধ্ব–২৩ পর্যায়ে বাংলাদেশের সুখস্মৃতি আছে। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে স্মৃতিটা বেশ টাটকাই। ২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়াডে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ১–১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। ১–০ গোলে এগিয়ে গিয়েও সেই লিড ধরে রাখতে না পারার আক্ষেপটাও অবশ্য সঙ্গী সে ম্যাচের। যদিও জাকার্তার সেই ম্যাচে তিনজন সিনিয়র খেলোয়াড় খেলেছিলেন।
মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের বিপক্ষে সুখস্মৃতি অবশ্য ৩২ বছর আগের। ১৯৯১ সালে অলিম্পিক বাছাইপর্বে ফিলিপাইনকে দুই লেগ মিলিয়ে ১১–০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সিউলের প্রথম লেগে এসেছিল ৮–০ গোলের জয়। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ জিতেছিল ৩–০ গোলে। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে সিউলের প্রথম লেগে ১–০ গোলে হারলেও কুয়ালামপুরে জিতেছিল ১–০ গোলে। ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব সিউলের ম্যাচে একাই করেছিলেন ৫ গোল। দ্বিতীয় লেগে তাঁর পা থেকে এসেছিল জোড়া গোল। সেবার গ্রুপের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ছিল থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া।
প্রসঙ্গক্রমে সেই স্মৃতি এলেও এবারের কাজ অনেকটাই কঠিন ইয়াসিন আরাফাতদের। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন—সবাই এখন অনেক এগিয়ে গেছে। গতকাল বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন একটা টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে না পাওয়ার হালকা আক্ষেপ ছিল কোচ মিন্টুর কণ্ঠে। শেখ মোরছালিন, দিপক রায়, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, মোহাম্মদ হৃদয়ের মতো হালের আলোচিত কয়েকজন প্রতিভাকে জাতীয় দলের জন্য যে ছেড়ে দিতে হয়েছে অনূর্ধ্ব–২৩ দলের কোচকে, ‘মোরছালিন, দিপক, ফাহিম—সবার বয়সই ২৩–এর নিচে। সুতরাং এদের পেলে অবশ্যই শক্তি অনেক বৃদ্ধি পেত। কিন্তু তাদের জাতীয় দলে বিবেচনা করা হয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচও গুরুত্বপূর্ণ।’
যদিও সিনিয়র জাতীয় দলে খেলেছেন, এমন খেলোয়াড় থাইল্যান্ডগামী দলে আছেন চারজন—ইয়াসিন আরাফাত তো দলকে নেতৃত্বই দেবেন। তিনি অবশ্য এএফসি অনূর্ধ্ব–২৩ বাছাইপর্বকে নিজের সিনিয়র জাতীয় দলে ফেরার মিশন হিসেবেই দেখছেন, ‘আমি দেশকে এই টুর্নামেন্টে নেতৃত্ব দিচ্ছি। এটা অনেক বড় গর্ব আমার কাছে। নিজের সেরাটা দিতে চাই। তাহলে আমি হয়তো অবশ্যই জাতীয় দলের জন্য আবার বিবেচিত হব।’
কোচ মিন্টু যে দল পেয়েছেন, সেটি দিয়েই লড়তে চান, ‘আমি থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের সাম্প্রতিক খেলাগুলো দেখেছি। আমি মনে করি, দলগুলো আমাদের সামর্থ্যের বাইরে নয়। আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে তাদের বিপক্ষে জিততেও পারি।’
থাইল্যান্ডের মাঠে সামর্থ্যের পুরোটা ঢেলে দেওয়াই এখন মিন্টুর দলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ!