ইংল্যান্ডকে ইউরোর ফাইনালে তোলার নায়ক ওলি ওয়াটকিন্স
ইংল্যান্ডকে ইউরোর ফাইনালে তোলার নায়ক ওলি ওয়াটকিন্স

‘সন্তানদের জীবনের শপথ’ নিয়ে ওয়াটকিন্স জানালেন, গোলটি তিনিই করতে চেয়েছিলেন

ইংল্যান্ডের এই দলে তারকার ছড়াছড়ি। তরুণ প্রতিভারও অভাব নেই। কেউ কেউ তো এই দলকেই ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা দাবি করছেন। কিন্তু এবারের ইউরোয় সেটার ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছিল না।

বিশেষ করে কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের কৌশলকে খোদ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোই কচুকাটা করে আসছিল। ফুটবল বিশ্লেষকদেরও মনে হচ্ছিল, সাউথগেট তাঁর খেলোয়াড়দের ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারছেন না। যাঁদের শুরু থেকে খেলানো উচিত, তাঁদের তিনি বসিয়ে রাখছেন; আর যাঁদের সুযোগ কম দেওয়া উচিত, তাঁদের ম্যাচের পর ম্যাচ খেলিয়েই যাচ্ছেন—সাউথগেটকে নিয়ে এমন অভিযোগও ছিল।

ওলি ওয়াটকিন্সের কথাই ধরুন না। অ্যাস্টন ভিলার হয়ে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটিয়ে ইংল্যান্ডের ইউরোর দলে জায়গা করে নিয়েছেন। গত মৌসুমে ভিলার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৭ গোল ও ১৩ অ্যাসিস্ট করেছেন। ৪১ বছর পর ক্লাবটিকে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে তুলতে বড় অবদান রেখেছেন। সেই ওয়াটকিন্সকেই ইউরোর আগের ৫ ম্যাচে মাত্র ২০ মিনিট খেলার সুযোগ দিয়েছেন সাউথগেট।

ডর্টমুন্ডের সিগনাল ইদুনা পার্কে গত রাতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও ওয়াটকিন্সকে বদলি নামিয়েছেন সাউথগেট। মাত্র ১৪ মিনিট (যোগ করা সময়সহ) খেলার সুযোগ পেয়েই ২৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড যা করলেন, তা চিরকাল মনে রাখার কথা ইংলিশ সমর্থকদের। শেষ মুহূর্তে তাঁর গোলেই টানা দ্বিতীয়বার ইউরোর ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। বিদেশের মাটিতে দলটি এবারই প্রথম ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে।

অন্য ম্যাচগুলোর মতো সেমিফাইনালেও শুরুর একাদশে জায়গা হবে না, তা ভালো করেই জানতেন ওয়াটকিন্স। তবে সুযোগ এলে গোল করবেন তা নাকি সতীর্থ কোল পালমারকে তিনি আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন। ওয়াটকিন্স–পালমার দুজনই বদলি হিসেবে নেমেছিলেন ম্যাচের ৮১ মিনিটে। ৯০ মিনিটে পালমারের বানিয়ে দেওয়া বল থেকেই জয়সূচক গোল করেছেন ওয়াটকিন্স।

ম্যাচ শেষে সে কথা জানাতে গিয়ে সন্তানদের জীবনের নামে শপথ করেছেন এই ফরোয়ার্ড, ‘আমার বাচ্চাদের জীবনের শপথ, কোলকে (পালমারকে) আমি বলেছি আজ (কাল) আমরা দুজনই খেলতে নামছি এবং তুমি আমাকে বল বানিয়ে দেবে আর আমি গোল করব।’

ওয়াটকিন্স–পালমার দুজনকেই বদলি নামিয়েছিলেন ইংল্যান্ড কোচ সাউথগেট

সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারাতেই বেশি আনন্দিত ওয়াটকিন্স, ‘ব্যাপারটা (তাঁর গোলে ফাইনালে ওঠা) আমার কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে। এই মুহূর্তের জন্য আমি সপ্তাহের পর সপ্তাহ অপেক্ষা করেছি। আজ আমি যে জায়গায় পৌঁছেছি, সেখানে আসতে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। সুযোগ দেওয়ায় আমি দলের প্রতি কৃতজ্ঞ। সুযোগটা আমি দুই হাতে লুফে নিয়েছি। আমি আনন্দিত।’

বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে আগামী রোববার রাতে ফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।