কয়েক দিন আগেও নিজ দেশের বাইরে সৌদি আরবের ক্লাবগুলোর পরিচিতি ছিল সামান্য। ফুটবলকেন্দ্রিক বাণিজ্য এবং চাকচিক্যের কেন্দ্র ছিল ইউরোপ। বিশেষ করে ইউরোপের শীর্ষ ৫ লিগ। তবে মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রোডলারের দাপটে গত দুই দশকে অর্থের ঢল দেখেছে ইউরোপিয়ান ফুটবল। এ বছর সেই আখ্যান পুরোপুরি বদলে দিয়েছে সৌদি আরব।
ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলোকে এখন চোখরাঙানি দিচ্ছে সৌদি প্রো লিগ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ইউরোপকেও যেমন ফুটবলারদের বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে সৌদি প্রো লিগের ধারেকাছে নেই অন্যরা। ফরাসি সংবাদমাধ্যম লা প্যারিসিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ক্লাবের কাছ থেকে পাওয়া বেতনের দিক থেকে শীর্ষ দশের আটজনই এখন সৌদি লিগের। ইউরোপ থেকে এ তালিকায় জায়গা পেয়েছেন শুধু একজন, আরেকজন মেজর লিগ সকারের (এমএলএস)।
জানুয়ারির শুরুতে দলবদলের বাজারে তোলপাড় তুলে সৌদি ক্লাব আল নাসরে যোগ দেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগিজ মহাতারকাকে দিয়েই মূলত সৌদি লিগের নবযাত্রা শুরু। ২০২৫ সাল পর্যন্ত করা এ চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মৌসুমের জন্য রোনালদো পাবেন রেকর্ড ২০ কোটি ইউরো করে। যা বেতনের দিক থেকে শীর্ষ স্থানে তুলে দিয়েছে রোনালদোকে। কিন্তু কে জানত, সেটা ছিল সবে শুরু।
এরপর নতুন মৌসুমের শুরুতে সৌদি ক্লাবগুলো অর্থের থলে হাতে নিয়ে একের পর এক খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে শুরু করে। যাঁদের তারা দিচ্ছে চোখধাঁধানো বেতনও। জুনের শুরুতে রোনালদোর সমান মৌসুমপ্রতি ২০ কোটি ইউরোতে বেনজেমাকে দলে ভেড়ায় আল ইত্তিহাদ।
রোনালদো ও বেনজেমার পরের স্থানটি নেইমারের। যদিও ব্রাজিলিয়ান তারকার বেতন শীর্ষে থাকা দুজনের অর্ধেক। আল হিলাল নেইমারকে বেতন দেবে ১০ কোটি ইউরো। রোনালদো আল নাসরে যাওয়ার পর মেসিকে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে আল হিলাল। সে সময় বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে মৌসুমপ্রতি ৪০ কোটি ইউরোর বেশি বেতন প্রস্তাব করার কথা শোনা গিয়েছিল। তবে মেসি আল হিলালকে ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান এমএলএসের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে।
মেসিকে না পেয়ে আল হিলাল হাত বাড়ায় কিলিয়ান এমবাপ্পের দিকে। ফরাসি তারকার জন্য তাদের প্রস্তাবিত বেতন ছিল ৩০ কোটি ইউরোর বেশি। কিন্তু এমবাপ্পে ইউরোপ ছেড়ে যেতে না চাওয়ায় নিরাশ হতে হয় আল হিলালকে। তবে পুরোপুরি দমে যায়নি তারা। এরপর নেইমারকে নেওয়ার চেষ্টা করে এশিয়ার সফলতম ক্লাবটি এবং সফলও হয় তারা। মৌসুমপ্রতি ১০ কোটি ইউরোতে নেইমারকে দলে টেনেছে ক্লাবটি। আল ইত্তিহাদে এনগোলো কান্তেও বেতন পান ১০ কোটি ইউরো।
কান্তের পরই আছেন ইউরোপ থেকে তালিকায় জায়গা পাওয়া একমাত্র ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে। যিনি পিএসজির কাছ থেকে পান ৭ কোটি ইউরো। আর ৪ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বেতন নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছেন ইন্টার মায়ামির মেসি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটিতে বেতনের বাইরেও বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা পাবেন মেসি। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়কের পর শীর্ষ ১০-এ আরও আছেন সাদিও মানে, জর্দান হেন্ডারসন, রিয়াদ মাহরেজ ও কালিদু কুলিবালি।