বাড়ছে লিওনলে মেসির ইন্টার মায়ামির স্টেডিয়ামের আসনসংখ্যা
বাড়ছে লিওনলে মেসির ইন্টার মায়ামির স্টেডিয়ামের আসনসংখ্যা

মেসিকে দেখার সুযোগ দিতে ইন্টার মায়ামির উদ্যোগ

ইন্টার মায়ামিতে লিওনেল মেসির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল?

প্রশ্নটির উত্তর দেওয়ার আগে একটা ঘটনা বলা যাক। এক আড্ডায় একবার বাউল শাহ আবদুল করিম ভারতের প্রয়াত বাউলশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘ধরো, একটি আসরে তুমি গান গাইতে গেলে। সেখানে এক হাজার শ্রোতা গান শুনতে জমায়েত হতে পারে। কিন্তু তুমি দেখলে, তোমার গান শুনতে মাত্র তিনজন শ্রোতা এসেছে। তুমি গাইতে পারবে সেখানে?’ কালিকাপ্রসাদ এর উত্তরে বলেছিলেন, ‘না, আমি গাইতে পারব না। কিছুতেই সেখানে গাইব না।’ এই কথার পিঠে শাহ আবদুল করিম বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু গাইব। আমি বাউল, আমার কাজ গানে গানে বাউলের দর্শন প্রচার করা। আমি যদি আমার গানের কথা তিনটি মানুষকেও বোঝাতে পারি, ওই তিনটি মানুষকেও যদি আনন্দ দিতে পারি, সেটাই আমার সার্থকতা!’

তা মেসি যখন গত বছর ইন্টার মায়ামিতে নাম লেখান, অনেককেই প্রশ্নটি করতে শোনা গিয়েছিল, ক্যাম্প ন্যুয়ে প্রায় এক লাখ দর্শকের সামনে খেলা আর্জেন্টাইন তারকা মায়ামিতে ১৮–১৯ হাজার দর্শকের সামনে খেলার প্রেরণা কীভাবে পাবেন?
মেসি যখন বার্সেলোনায় ছিলেন, সে সময় ক্যাম্প ন্যুয়ের আসনসংখ্যা ছিল লাখের কাছাকাছি। আসন আরও বাড়াতে এখন সংস্কার চলছে বার্সেলোনার স্টেডিয়ামটির।

ইন্টার মায়ামির তিন মালিকের সঙ্গে মেসি

২০২১ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে মেসি পিএসজিতে নাম লেখান। প্যারিসের ক্লাবটির এস্তাদিও অলিম্পিকোর আসনসংখ্যাও ছিল ৫০ হাজারের বেশি। ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়জুড়ে লাখ লাখ দর্শকের সামনে খেলা একজনের জন্য কয়েক হাজার মানুষের সামনে খেলাটা একটু কঠিনই। যেমনটা কঠিন অল্প কজন শ্রোতার সামনে কালিকাপ্রসাদের গান গাওয়া।

দর্শক লাখ পেরিয়েছে, নাকি হাজার—এটা মেসির কাছে মুখ্য নয় বলে মনে হতেই পারে। যদিও এখানে টাকাপয়সার একটা ব্যাপার আছে। শাহ আবদুল করিম তো আর টাকার জন্য গান গাইতেন না। মেসির ইউরোপ ছেড়ে মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমানোর পেছনে যেখানে অর্থ এবং আরও অনেক বৈষয়িক লাভের প্রশ্ন জড়িয়ে। স্টেডিয়ামে কম দর্শকের সামনে খেলা নিয়ে আক্ষেপটা হয়তো এতেই ঢেকে রাখেন।

কিন্তু কম দর্শকে মেসির কিছু এসে না যাক, তাঁকে কাছ থেকে দেখতে না পাওয়ার আক্ষেপটা তো ফুটবলপ্রেমীদের হয়! সেই আক্ষেপ দূর করতেই মেসি নাম লেখানোর পর মায়ামি তাদের ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামের আসনসংখ্যা বাড়িয়েছিল। ১৯ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২১ হাজার।

পিএসজি থেকে মায়ামিতে নাম লেখানোর বছরে মেসি পুরো মৌসুম খেলতে পারেননি। যে কয়টি ম্যাচ খেলেছেন, টিকিট নিয়ে ছিল কাড়াকাড়ি। এবার মেজর লিগ সকারের পুরো মৌসুম খেলবেন, এরই মধ্যে মৌসুম–টিকিট শেষ হয়ে গেছে মায়ামির। কিন্তু মৌসুম–টিকিটিধারী ছাড়াও তো মায়ামি তথা মেসির ভক্ত–সমর্থক অনেক আছেন ফ্লোরিডায়। তাঁরা কি বঞ্চিত হবেন

এ কারণেই ইন্টার মায়ামি নতুন করে তাদের ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামের আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা–ও যে খুব বেশি, তা নয়। নতুন করে স্টেডিয়ামে ১২০০ আসন বাড়াবে মায়ামি। তা হোক না মাত্র ১২০০ আসন, বাড়তি কিছু দর্শক তো আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকরের জাদু সরাসরি উপভোগ করার সুযোগ পাবেন!