ব্যালন ডি’অর জয়ী রদ্রিকেও হারিয়েছেন গার্দিওলা
ব্যালন ডি’অর জয়ী রদ্রিকেও হারিয়েছেন গার্দিওলা

চোটে আসলেই চাপে গার্দিওলার ম্যান সিটি

‘আমরা সমস্যায় আছি।’ কয়েক বছর ধরে প্রায় প্রতি মৌসুমে এমন একটি সময় আসে, যখন পেপ গার্দিওলাকে কথাটি বলতে শোনা যায়। মূলত দলের চোটজর্জর অবস্থা নিয়েই কথাটি বলেন ম্যানচেস্টার সিটি কোচ।

চলতি মৌসুমে অবশ্য এ কথা বলার সময় বোধ হয় একটু আগেই চলে এল। অতীতে যদিও এই পরিস্থিতি পার করেই শেষ পর্যন্ত শিরোপা ঘরে তুলতে দেখা গেছে সিটিকে। তবে এবারের পরিস্থিতি খানিকটা ভিন্ন। গার্দিওলা নিজেও বলছেন, এবারের পরিস্থিতি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে খারাপ।

কারাবাও কাপে টটেনহামের বিপক্ষে হেরে বিদায়ের পর গার্দিওলা বলেন, ‘আমাদের এখন খেলোয়াড় আছে ১৩ জন, আমরা সত্যিই সমস্যার মধ্যে আছি। গত ৯ বছরের মধ্যে এমন পরিস্থিতিতে আমরা আর পড়িনি। অনেক কারণে অনেকেই চোটে পড়েছে। খেলোয়াড়েরা এখন এক ধাপ এগিয়ে এসেছে এবং তারা এখন আগের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ।’

চলতি মৌসুমের শুরুতে সিটির জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে রদ্রির চোট। গত কয়েক মৌসুমে সিটির মাঝমাঠের প্রাণভোমরা ছিলেন রদ্রি। তাঁকে ঘিরেই মাঠে পরিচালিত হতো সিটির খেলা। গত মৌসুমের সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ইতিহাসের প্রথম হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে ব্যালন ডি’অরও জিতেছেন এই স্প্যানিশ কোচ।

এমন একজন খেলোয়াড়কে হারানো সিটির জন্য যেকোনো বিবেচনায় বড় ধাক্কা। একইভাবে আরেক গুরুত্বপূর্ণ মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনার চোটও বড় ধরনের সমস্যায় ফেলেছে সিটিকে।

সিটির মাঝমাঠে অন্যতম ভরসার নাম ডি ব্রুইনা। তাঁকে না পাওয়ার অর্থ মাঝমাঠে দলটির একরকম নিয়ন্ত্রণ হারানো। এমনকি আর্লিং হলান্ডের সেরাটা পেতেও সিটির জন্য ডি ব্রুইনা সবচেয়ে বড় অস্ত্র। ট্রান্সফারমার্কেট বলছে, আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ডি ব্রুইনাকে পাবে না সিটি। যা গার্দিওলার জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। একইভাবে বিভিন্ন ধরনের এখন মাঠের বাইরে আছেন কাইল ওয়াকার, জ্যাক গ্রিলিশ, জেরেমি ডকু, অস্কার ববসহ বেশ কজন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার।

চোট নিয়ে বিপাকে কেভিন ডি ব্রুইনা

এই মুহূর্তে গার্দিওলা চোটমুক্ত হিসেবে যাঁদের সঙ্গে পাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন এদেরসন, স্তেফান ওর্তেগা, রিকো লুইস, জন স্টোনস, নাথান একে, মাতেও কোভাচিচ, ম্যাথুয়াস নুনেস, জেমস ম্যাকাতে, ইলকায় গুন্দোয়ান, ফিল ফোডেন, বের্নার্দো সিলভা ও আর্লিং হলান্ড। অর্থাৎ বেশ ঝুঁকি নিয়েই এখন পথ চলতে হচ্ছে গার্দিওলাকে।

এমনকি ঝুঁকি এড়াতে খেলোয়াড়দের বেছে বেছে খেলানোর কৌশলও নিতে হচ্ছে এই স্প্যানিশ কোচকে। হলান্ডকে ছাড়াই যেমন কারাবাও কাপে টটেনহামের বিপক্ষে খেলেছিল সিটি। যদিও সে ম্যাচে ফলটাও আর পক্ষে আসেনি। এই মুহূর্তে আর কেউ চোটে পড়লে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে ক্লাবটি।

পাশাপাশি এরই মধ্যে কারাবাও কাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় উদ্বেগও বেশ বেড়েছে দলের মধ্যে। প্রিমিয়ার লিগে ৯ ম্যাচ শেষে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকলেও ২২ পয়েন্ট নিয়ে ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে লিভারপুল। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লড়াইয়ে আছে আর্সেনালও। এমন পরিস্থিতিতে সামনের কয়েক ম্যাচে হোঁচট খেলে পথ হারানোর শঙ্কায় পড়তে হতে পারে সিটির। সব মিলিয়ে সময়টা গার্দিওলার জন্য খানিকটা জটিলই বলা যায়।