শেষ পর্যন্ত কী লেখা আছে কিলিয়ান এমবাপ্পের ভাগ্যে! জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে লড়াইটা কি তিনি জিততে পারবেন? আপাতত কুমির, মানে পিএসজি লড়াই জিততে একটার পর একটা কৌশল ব্যবহার করে যাচ্ছে এমবাপ্পেকে দুর্বল করতে।
এমবাপ্পে যখন চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলেন যে শুরু হতে যাওয়া মৌসুমের পর আর চুক্তি নবায়ন করবেন না, পিএসজি তাঁকে বিক্রির জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কারণ, এবারের দলবদলে বিক্রি করতে না পারলে যে পরের মৌসুমে মুক্ত খেলোয়াড় হয়ে যাবেন এমবাপ্পে। তখন আর তাঁর বিনিময়ে ট্রান্সফার ফি পাবে না পিএসজি।
কিন্তু এমবাপ্পে চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ না করে পিএসজি ছাড়তে চান না। এরও কারণ আছে। চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করে পিএসজি ছাড়লেই যে তিনি আনুগত্য বোনাসের পুরোটা পাবেন। অন্যদিকে তিনি যেখানে যেতে চান, সেই রিয়ালও কোনো প্রস্তাব নিয়ে পিএসজির কাছে আসছে না। তারাও এমবাপ্পের মুক্ত খেলোয়াড় হওয়ার অপেক্ষায় আছে। তাহলে যে ট্রান্সফার ফি ছাড়াই বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে পাবে তারা!
এরপরই শুরু হয় পিএসজি–এমবাপ্পে লড়াই। সেই লড়াইয়ে এমবাপ্পেকে কাবু করতে একের পর কৌশল ব্যবহার করতে শুরু করে পিএসজি। যার প্রথমটি হলো, এমবাপ্পেকে প্রাক্–মৌসুম প্রস্তুতির এশিয়া সফরের দল থেকে বাদ দেওয়া।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই এমবাপ্পের জন্য পিএসজিকে ৩০ কোটি ইউরোর প্রস্তাব দেয় সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। কিন্তু এমবাপ্পে আল হিলালের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায়ই বসতে চাননি। তার ওপর তিনি আবার জানিয়ে দেন, মেয়াদ পূর্ণ না করে পিএসজি ছাড়বেন না।
এরপর পিএসজি তাদের দ্বিতীয় অস্ত্রটা প্রয়োগ করে এমবাপ্পের ওপর—তাঁকে মূল স্কোয়াড থেকে বের করে পাঠিয়ে দেয় বম্ব স্কোয়াডে। ফুটবলে ‘বম্ব স্কোয়াড’ কথাটার একটা বিশেষ মানে আছে। সাধারণত অতি বেতনের খেলোয়াড়, যাঁরা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেন না কিংবা ক্লাব আর যাঁদের দরকারি মনে করে না, তাঁদের যখন মূল দল থেকে আলাদা করে ফেলা হয়, তাঁদের ‘বম্ব স্কোয়াড’-এর সদস্য বলা হয়।
বম্ব স্কোয়াডে ঠাঁই হওয়ার পরও এমবাপ্পে তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। উল্টো পিএসজিকে নিয়ে ঠাট্টা করেন তিনি এই বলে যে লুইস এনরিকের মূল স্কোয়াডকে হারিয়ে দেবে তাঁর বম্ব স্কোয়াড। পিএসজির বম্ব স্কোয়াডে আগে থেকেই ছিলেন আর্জেন্টিনার লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও জার্মানির ইউলিয়ান ড্রাক্সলার।
ফ্রেঞ্চ লিগ ‘আঁ’র নতুন মৌসুম শুরু হয়েছে কাল। লোরিয়াঁর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পিএসজি মাঠে নামবে আজ। এর আগে এমবাপ্পে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি এ মৌসুমে পিএসজিতেই থাকবেন। এরপর পিএসজি আরেকটি কৌশল ব্যবহারের কথা ভাবছে—এমবাপ্পেকে নিজেদের স্টেডিয়ামে নিষিদ্ধ করতে পারে প্যারিসের দলটি! ইএসপিএনের সাংবাদিক হুলিয়েন লরেন্স এমনটাই বলেছেন। ক্লাবের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে তিনি নাকি এটা জানতে পেরেছেন।
এমবাপ্পেকে এ অবস্থা থেকে এখন হয়তো একমাত্র রিয়াল মাদ্রিদই বাঁচাতে পারে। রিয়াল যদি এই গ্রীষ্মেই এমবাপ্পেকে দলে ভেড়ায়, তাহলে সব সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে। রিয়াল কি সেটা করবে? ক্লাবটির একটি সূত্র স্পেনের সংবাদমাধ্যম স্পোর্তকে নাকি জানিয়েছে, রিয়াল সেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।