চলতি মৌসুমের সবচেয়ে আলোচিত তারকাদের অন্যতম খিচা কাভারাস্কেইয়া। দুর্দান্ত খেলে ‘নতুন ম্যারাডোনা’ তমকাটাও নিজের নামের পাশে লাগিয়ে নিয়েছিলেন এই জর্জিয়ান তরুণ। কিন্তু মৌসুমের সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে জ্বলে উঠতে পারলেন না কাভারাস্কেইয়া।
উল্টো ম্যাচের ৮২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন এই উইঙ্গার। যা শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে নাপোলির বিদায়ের কারণও হয়েছে। যোগ করা সময়ে ভিক্তর ওশিমেন গোল করলেও তা শেষ পর্যন্ত কোনো কাজে আসেনি। ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করেও দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নিয়েছে নাপোলি। প্রথম লেগে নাপোলি হেরেছিল ১-০ গোলে। এর ফলে প্রথমবারের মতো নাপোলির চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নটা অধরা থেকে গেল।
অন্য দিকে ১৬ বছর পর সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে এসি মিলান আবারও ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। মৌসুমের শুরুতে যে মিলানকে সবাই আন্ডারডগ বিবেচনা করে আসছিল তারাই এখন চমক দেখিয়ে চলে গেল শেষ চারে। তবে মিলানের সেমির পথে যাত্রাটা আরও সহজ হতে পারত। প্রথমার্ধে জিরু পেনাল্টি মিস না করলে হয়তো নিজেদের কাজটা আরও সহজে করতে পারত তারা।
নাপোলির ডিয়েগো আরামান্দো স্টেডিয়ামে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেওয়ার সুবর্ণ এক সুযোগ ২২ মিনিটেই পেয়ে গিয়েছিল মিলান। মারিও রুই ডি-বক্সের ভেতর রাফায়েল লেয়াওকে ফেলে দেওয়ায় পেনাল্টি পেয়েছিল অতিথিরা। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন অলিভিয়ের জিরু। তাঁর পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন অ্যালেক্স মেরেট। একটু পর জেলেনেস্কির শট একটুর জন্য জালের দেখা পায়নি।
২৮ মিনিটের মাথায় ফের জিরুকে নিরাশ করেন মেরেট। দারুণ আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে শট নেন জিরু। কিন্তু ফরাসি স্ট্রাইকারের শট ফের রুখে দেন মেরেট। ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিটে ম্যাচটাকে নাপোলির হাত থেকে বের করে নেওয়ার অন্তত দুটি সহজ সুযোগ পেয়েছিল মিলান। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় ৭ বারের ইউরোপজয়ীরা।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটের মধ্যে জোড়া বদল আনতে হয় নাপোলিকে। চোটে পড়ে নেমে যান রুই। তাঁর বদলে নামেন মাথিয়াস অলিভেরা। আর মাতেও পলিতানোর বদলে মাঠে নামেন হিরভিং লোজানো। ৩৮ মিনিটে দুর্দান্ত ট্যাকলে লোজানোকে ডি-বক্সের ভেতর শট নেওয়া থেকে রুখে দেন লেয়াও।
প্রথম দুই দানে না পারলেও তৃতীয় দানে ঠিকই এসি মিলানকে এগিয়ে দেন জিরু। ৪২ মিনিটে এই গোলের মূল কৃতিত্ব অবশ্য লেয়াওর। নিজেদের অর্ধ থেকে বল পেয়ে একক প্রচেষ্টায় তিন নাপোলি খেলোয়াড়কে পেছনে ফেলে দারুণভাবে প্রতিপক্ষ ডি-বক্সে ঢুকে বল বাড়ান জিরুর কাছে। ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে মিলানকে দুই লেগ মিলিয়ে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার। বিরতির আগে ওসিমেন বল জালে জড়ালেও সেটি বাতিল হয় হ্যান্ডবলের কারণে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বাঁ প্রান্ত দিয়ে দারুণভাবে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন নাপোলি তারকা কাভারাস্কেইয়া। কিন্তু কাছাকাছি জায়গা থেকে তাঁর নেওয়া শট শেষ পর্যন্ত জালের দেখা পায়নি। এরপর দুই দলই চেষ্টা করে যাচ্ছিল, কিন্তু গোল পাচ্ছিল না কোনো দল।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ম্যাচের ৮২ মিনিটে পেনাল্টি পায় নাপোলি। সেটিকে জালের ঠিকানা দেখাতে পারলে বদলে যেতে পারত ম্যাচের গতিপথ। কিন্তু কাভারাস্কেইয়ার শট ঠেকিয়ে দেন মিলান গোলরক্ষক। এরপর যোগ করা সময়ে ওসিমেন গোল করলেও তা নাপোলিকে সেমিতে নিতে যথেষ্ট ছিল না। বিদায়ের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় নেপলসের ক্লাবটিকে।