দুই আর্জেন্টাইন তারকা মেসি ও মার্তিনেজ
দুই আর্জেন্টাইন তারকা মেসি ও মার্তিনেজ

‘মেসির উচিত ছিল মার্তিনেজকে নিষেধ করা’

বিশ্বকাপ ফাইনালে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের আচরণ ও উদ্‌যাপন নিয়ে কথা হয়েছে অনেক। শুধু ফাইনালেই নয়, বুয়েনস এইরেসের রাস্তায় ছাদখোলা গাড়িতে করা উদ্‌যাপন নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষককে।

এবার ‘মেসিয়ানিকো’ নামে এক বইতেও মার্তিনেজ-কাণ্ডের সমালোচনা করেছেন উয়েফা প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার সেফেরিন। তবে মার্তিনেজের পাশাপাশি লিওনেল মেসির ভূমিকা নিয়েও কথা বলেছেন সেফেরিন। বলেছেন, মেসির উচিত ছিল মার্তিনেজকে থামানো।

৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে আর্জেন্টিনা। স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ অপেক্ষার পর শিরোপা জিতে আবেগের চূড়ায় ছিলেন দেশটির খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা। তবে শিরোপা জয়ের পর যাঁদের উদ্‌যাপন বাঁধনহারা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গোলরক্ষক মার্তিনেজ। অবশ্য ফাইনালের টাইব্রেকার পর্ব থেকে শুরু হয় মার্তিনেজ-কাণ্ডের। ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের মনোযোগ নষ্ট করতে গিয়ে দেখেছেন হলুদ কার্ডও।

বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ‘গোল্ডেন গ্লোভস’ ট্রফি হাতে এমন অঙ্গভঙ্গি করে সমালোচনার শিকার হন মার্তিনেজ

এমনকি মার্তিনেজের কারণে পরবর্তী সময়ে পেনাল্টি আইনে পরিবর্তনও আনতে হয়েছে ফিফাকে। কিন্তু তাঁর আচরণ লাগামছাড়া হয়েছে শিরোপা জয়ের পর। ‘গোল্ডেন গ্লোভ’ হাতে দৃষ্টিকটুভাবে উদ্‌যাপন এবং পরে কিলিয়ান এমবাপ্পের পুতুল হাতে নিয়ে উদ্‌যাপন করে বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। এমনকি অনেকে সে সময় মেসির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। যেমনটা তুলেছেন উয়েফা সভাপতি সেফেরিন।

সেবাস্তিয়ান ফেস্ট ও আলেক্সান্দ্রে জুলিয়ার্ডের লেখা ‘মেসিয়ানিকো’ বইয়ে আলেক্সান্দার সেফেরিন বলেছেন, ‘মেসির উচিত ছিল তাকে কিছু বলা। তাকে থামতে বলা উচিত ছিল মেসির। কিছুটা সম্মান দেখানোর জন্য বলা উচিত ছিল।’ সেফেরিন মনে করেন, সতীর্থ এমবাপ্পের প্রতিও মেসির শ্রদ্ধার অভাব ছিল, ‘শেষ পর্যন্ত মেসিকে সারা বছর এমবাপ্পের সঙ্গে খেলতে হয়।’

উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন

মার্তিনেজের সমালোচনা করে সেফেরিন আরও বলেছেন, ‘পেনাল্টিতে তার আচরণ দেখলে আপনি অনেক কিছু বুঝবেন। আমি বুঝতে পারি না, কেন সে এমবাপ্পেকে নিয়ে মজা করবে। পুতুল নিয়ে যা করেছে, এসব মোটেই খেলোয়াড়সুলভ আচরণে পড়ে না; এটা আদিম। আমি একেবারেই পছন্দ করতে পারিনি। বিশ্বকাপ জেতার পর উচিত ছিল কিছুটা উদারতা দেখানো। এটা দেখানো যে আপনি আদিম নন। আপনি গোলরক্ষক হিসেবে নিখুঁত হতে পারেন, কিন্তু মানুষ হিসেবে নন।’

বিশ্বকাপের পর সমালোচনার মুখে এমবাপ্পেকে বিদ্রূপ করা নিয়ে মার্তিনেজ বলেছিলেন, ‘লকার রুমের ঘটনা কখনো বাইরে আসা উচিত নয়। তবু বলব, ২০১৮ বিশ্বকাপে আমাদের হারানোর পর ফ্রান্সও মেসিকে নিয়ে গান ধরেছিল। একইভাবে কেউ ব্রাজিলকে হারালে নেইমারকে নিয়ে গান ধরবে। এখানে এমবাপ্পের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো ঝামেলা নেই। আমি তাকে অতিশয় সম্মান করি। আমরা যদি তাকে অথবা নেইমারকে নিয়ে গান ধরি, সেটা তারা সেরা খেলোয়াড় বলেই করি।’