বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা

তপুর ফেরায় খুশি কাবরেরা, মোরছালিনকে লড়তে বললেন আরও

লম্বা ছুটি কাটিয়ে গত শুক্রবার ঢাকায় ফিরেছেন হাভিয়ের কাবরেরা। বড়দিন, নববর্ষ মিলিয়ে পরিবারের সঙ্গে সময়টা কেটেছে দারুণ। আজ বাফুফেতে এসে বললেন, সামনের চ্যালেঞ্জগুলোর আগে এ রকম একটা ছুটি দরকার ছিল তাঁর।

তবে ছুটির মধ্যেও কাবরেরার মাথায় বাংলাদেশের ফুটবলটা ছিল। আজ বাফুফে ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি বলেছেন, ‘আমি এই সময়েও প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ দেখেছি, ফেডারেশন কাপের খেলাগুলোতে চোখ রেখেছি। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আমাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, লেবানন আর ফিলিস্তিন এশিয়ান কাপে কেমন খেলছে, সে খোঁজখবরও রেখেছি।’

আগামী মার্চে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ঘরের মাঠে ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। খেলবে শারজায় লেবাননের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। লেবাননের বিপক্ষে গত নভেম্বরে কিংস অ্যারেনায় দারুণ খেলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। যদিও এর আগে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে ৭–০ গোলে

২০২৪ সাল বাংলাদেশের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং হবে বলে ধারণা কাবরেরার

ফিলিস্তিনের সঙ্গে মার্চে দেখা হওয়ার আগে এশিয়ান কাপে দলটাকে কেমন দেখলেন—জানতে চাইলে কাবরেরা বলেন, ‘ফিলিস্তিন খুবই ভালো দল, খুবই আগ্রাসী। তারা ভালো কিছু করতে চায়। ইরানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ফিলিস্তিন যা খেলেছে, সেটি অবিশ্বাস্য। আরব আমিরাতের সঙ্গে তো ড্রই করল। এখন হংকংয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি তাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মুখোমুখি হওয়াটা আমাদের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জের।’

মার্চের ম্যাচে ফিলিস্তিনের সঙ্গে কী প্রত্যাশা—জানতে চাইলে কাবরেরা বলেন, ‘আমরা জানি, ফিলিস্তিন ম্যাচটা খুব কঠিন হবে। তারা মোটেও ছেড়ে কথা বলবে না। আমরাও বলব না। আমরা ফিলিস্তিনের জন্য ম্যাচটা কঠিন করে তুলতে আত্মবিশ্বাসী। আমরা জানি, আমরা এ মুহূর্তে কতটা ভালো খেলছি। সেই খেলাটাই ধরে রাখতে হবে।’

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে কিংসের একাদশে ফিরেছেন জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তপু বর্মণ। অক্টোবর–নভেম্বরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রাথমিক রাউন্ড ও গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া ও লেবাননের বিপক্ষে চারটি ম্যাচে তপুকে পায়নি জাতীয় দল।

আগামী মার্চে দুই দফা ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ

কাবরেরা জানালেন, লিগে কিংসের হয়ে তপুর পারফরম্যান্সেও নজর ছিল তাঁর, ‘তপু বাংলাদেশ দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় অনেক দিন ধরেই। আমি বসুন্ধরা কিংসের হয়ে লিগে ও ফেডারেশন কাপে তপুর খেলা দেখেছি। সে নিয়মিত খেলছে, এটা খুব ভালো খবর। আমি আশা করি, ও নিজের সেরাটাই দেবে। অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে লড়াই করে দলে জায়গা করে নেবে।’

জাতীয় দলে কাবরেরার খুবই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র শেখ মোরছালিন। উদীয়মান এই ফুটবলার জাতীয় দলের হয়ে ৯ ম্যাচে ৪ গোল করে এরই মধ্যে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। কিংসের একাদশে অবশ্য তাঁর নিয়মিত সুযোগ হয় না।

স্প্যানিশ কোচ অবশ্য বল ঠেলে দিয়েছেন মোরছালিনের দিকেই। নিয়মিত একাদশে সুযোগ করে নিতে যে লড়াইটা প্রয়োজন, সেটিই করে যাওয়ার পরামর্শ তাঁর, ‘কিংসের প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়া কঠিন। তাদের বেশ উঁচুমানের বিদেশি ফুটবলার আছে। একাদশে সুযোগ পেতে হলে তাদের পেছনে ফেলতে হবে। আমি চাই মোরছালিন আরও লড়াই করুক। সে এখনো তরুণ, ওকে বুঝতে হবে এই লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তা। তাঁকে আরও পরিশ্রম করতে হবে।’

গত বছরটা মোটামুটি ভালো কেটেছে বাংলাদেশ দলের। তবে এ বছরটা যে চ্যালেঞ্জিং হবে, সেটা খুব ভালো করেই জানেন কাবরেরা, ‘আমাদের লক্ষ্য এ বছর আরও ভালো করা। আমি জানি, গত বছর ভালো করার পর এ বছর আমাদের ঘিরে আরও বেশি প্রত্যাশা তৈরি হবে। বছরটা আরও চ্যালেঞ্জিং হবে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা খুবই শক্তিশালী। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী আমরা ভালো করব। আশা করি, এবার আরও বড় সাফল্য আমরা উপহার দিতে পারব।’

উদীয়মান ফুটবলার শেখ মোরছালিনকে আরও পরিশ্রম করার পরামর্শ দিয়েছেন কাবরেররা

গত বছর জুনে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আগে সৌদি আরবে অনুশীলন করেছিল জাতীয় দল। এবারও তেমন কিছুই চান কোচ, ‘আমার প্রস্তাব গত বছরের মতোই। যদিও অনুশীলন ক্যাম্প নিয়ে এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। আমরা গত বছর যেমন সৌদি আরবে অনুশীলন করে বাকি বছরের পারফরম্যান্সের ভিত্তি গড়েছিলাম, এবারও তেমন কিছু করতে চাই। আমি জানি, বাফুফে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সৌদি ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে একটা সহযোগিতা চুক্তিরও চেষ্টা চলছে। আশা করি, ভালো কিছু হবে।’