৯০ মিনিটের খেলায় ৬০ মিনিটই কাটল নীরবতায়; দুই দিক থেকে আক্রমণ হলো বেশ কয়েকটি, গোল হলো না একটিও।
কিন্তু শেষ আধা ঘণ্টায় যেন ‘অন্য’ ম্যাচ। একের পর এক আক্রমণে গোল হলো এক এক করে ৩টি। যেখানে কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলের সুবাদে দিন শেষে হাসি ফ্রান্সের।
ডেনমার্ককে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে জায়গা নিশ্চিত করল গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
ডেনমার্কের আগে অস্ট্রেলিয়াকে ৪–১ ব্যবধানে হারানোর সুবাদে ‘ডি’ গ্রুপে ফ্রান্সের পয়েন্ট এখন ৬। অস্ট্রেলিয়ার ৩ আর ডেনমার্ক ও তিউনিসিয়ার ১ করে।
ডেনিশদের পরের ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। তিউনিসিয়াকে ১–০ ব্যবধানে হারিয়ে পাওয়া ৩ পয়েন্টের সুবাদে শেষ ষোলোর স্বপ্ন দেখছে অস্ট্রেলিয়াও।
স্টেডিয়াম ৯৭৪-এর ম্যাচটিতে শুরু থেকে দাপট দেখিয়ে খেলেছে ফ্রান্স। অলিভিয়ের জিরু ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে প্রথমার্ধেই একাধিক সুযোগ তৈরি করে দেন উসমান দেম্বেল। দশম মিনিটে গোলের প্রথম সহজ সুযোগটি পান জিরু। গোলসংখ্যায় থিয়েরি অঁরিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা এই ফরোয়ার্ডকে বল পেয়েছিলেন গোলমুখের সামনে। কিন্তু বলে পা-ই লাগাতে পারেননি তিনি।
পরের ভালো সুযোগটি আসে মিডফিল্ডার আদ্রিয়াঁ রাবিওর সামনে। ২২তম মিনিটে ডান দিক থেকে ডি বক্সে ক্রস ফেলেন দেম্বেল। জায়গামতো থাকা রাবিও হেডও নেন ঠিকঠাকমতো। কিন্তু বলে চোখ রাখা কাসপার স্মাইকেল লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে শট রুখে দেন।
বল দখলে রেখে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে গেছে ডেনমার্কও। কিন্তু অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি, রাবিওদের কাছে মাঝমাঠেই আটকে যাচ্ছিলেন মিকেল ডামসগার্ড, ইয়েসপার লিন্ডস্ট্রমরা। যে কয়েকবার ফ্রান্সের রক্ষণ চিরে ভেতরে ঢুকতে পেরেছেন, সেটিও লম্বা পাসে অতর্কিতে। তবে ড্যানিশ রক্ষণে বারবার হানা দিয়ে ভালো সুযোগ তৈরি করছিল ফ্রান্সই। সেই ধারাতে ৪০তম মিনিটে ডান পাশ থেকে লম্বা করে ডি বক্সে সামনে বল বাড়ান দেম্বেল। অরক্ষিত অবস্থায় বল পেয়ে যান এমবাপ্পে। কিন্তু তড়িঘড়ি শট নিতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। প্রথমার্ধ শেষ গোলশূন্য সমতায়।
বিরতির পরও ডেনমার্ক গোছানো পাস ধরে খেলা শুরু করে। তুলনামূলক ধীর ডেনিশদের বিপক্ষে এমবাপ্পে, আঁতোয়ান গ্রিজমান, জিরুদের খেলা ছিল গতিময়। তবে ৬১ মিনিটে এমবাপ্পের গোলটি আসে স্থির হয়ে নেওয়া শটে। পাস দেওয়া-নেওয়া করে ড্যানিশ রক্ষণে ঢুকে পড়েছিলেন থিও হার্নান্দেজ। ছোট ডি বক্সের পাশ থেকে দারুণভাবে বল পাঠান এমবাপ্পের কাছে। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে ঠান্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে দেন পিএসজি ফরোয়ার্ড।
গোল হজমের পর যেন জেগে ওঠে ডেনমার্ক। খেলায় আনে গতিও। সেই সূত্রেই ৬৮ মিনিটে চলে আসে কাঙ্ক্ষিত গোল। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের কর্নার থেকে আসা বল ইওয়াকিম অ্যান্ডারসন হয়ে চলে যায় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টিনসেনের সামনে। খানিকটা মাথা ঝুঁকিয়ে কাছ থেকে বল জালে পাঠান বার্সেলোনায় খেলা সেন্টার ব্যাক।
তবে এই সমতা আর বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ডেনিশরা। ৮৬তম মিনিটে ডেনমার্ক ডি বক্সে মাপা ক্রস বাড়ান গ্রিজমান। সুযোগের অপেক্ষায় থাকা এমবাপ্পে গোললাইনের খুব কাছ থেকে বল জড়িয়ে দেন জালে। ফ্রান্সের হয়ে শেষ ১২ ম্যাচে এটি তাঁর ১৪তম গোল।
বাকিটা সময় রক্ষণে মনোযোগ বাড়িয়ে ডেনমার্ককে আটকে রাখে দিদিয়ের দেশমের দল। ২–১ স্কোরলাইন ধরে রেখে উঠে যায় দ্বিতীয় রাউন্ডে।