মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আগামীকাল নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের আগে ২০২২ সালে সাফ জয়ের পর খেলোয়াড়দের নিয়ে ছাদখোলা বাসে ঘুরে উদ্যাপন স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার। প্রথমবারের মতো মেয়েদের সাফ জয়ের সেই কীর্তিতে এবার দায়িত্ব আরও বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি। দেশবাসীর জন্য আরও একবার উদ্যাপনের উপলক্ষ এনে দিতে এবার শিরোপাটা ধরে রাখতে চায় বাংলাদেশ দল।
২০২২ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালেও এই নেপালই ছিল বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। ৩–১ গোলের জয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সানজিদা–সাবিনারা। সেই ফাইনালের আগে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন সানজিদা। বেশ দীর্ঘ সেই স্ট্যাটাসের একটি অংশে লেখা ছিল, ‘ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়নের ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনীকে এক পাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। আমাদের এই সাফল্য হয়তো আরও নতুন কিছু সাবিনা, কৃষ্ণা, মারিয়া পেতে সাহায্য করবে। অনুজদের বন্ধুর এই রাস্তাটুকু কিছুটা হলেও সহজ করে দিয়ে যেতে চাই।’
সানজিদার সেই স্ট্যাটাস এবং বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাঁদের বরণ করে নিতে দেশে ছাদখোলা বাস প্রস্তুত করা হয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে সেই ছাদখোলা বাসে করে তাঁদের বাফুফে ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই বছর পেরিয়ে বাংলাদেশ টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে ওঠার পর ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে সেই সময় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সানজিদা।
আজ তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়, ‘২০২২ সালে ছাদখোলা বাসে উদ্যাপন করার এই দৃশ্য দেখাটা দেশবাসীর জন্য যেমন ছিল প্রথম, আমাদের জন্যও ছিল অসাধারণ এক অনুভূতি। আমাদের আবেগকে সম্মান দেখিয়ে রাতারাতি যে আয়োজন করা হয়েছিল, একই সঙ্গে তপ্ত রোদে দেশের ফুটবলপ্রেমী মানুষ রাস্তার চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য আমাদের আন্দোলিত করেছে।’
স্ট্যাটাসের পরের অংশে সানজিদা লিখেছেন শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ নেওয়ার কথা, ‘আগেরবার যেটি ছিল প্রথমবার অর্জনের চেষ্টা, সেটিই এবার ধরে রাখার মিশন। দায়িত্ব বেড়েছে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের কাজই এটা। স্বাগতিক প্রতিপক্ষ, সেই প্রতিপক্ষের মাঠ, আবার সেই প্রতিপক্ষের চেনা দর্শকদের সামনে আমরা খেলতে যাচ্ছি। অবশ্যই সেটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। তবে আমরা সদা আত্মবিশ্বাসী ও দেশমাতৃকার নিকট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
পোস্টের শেষ অংশে সানজিদা জানিয়েছেন, দেশের সংস্কারকাজে উদ্দীপনা জোগাতে ফাইনালটা জিততে চান, ‘দেশের সংস্কার ও নতুন জাগ্রত কর্মকাণ্ডের প্রেষণা দিতে আমাদের ভালো করাটা গুরুত্বপূর্ণ। ট্রফি ধরে রাখার মিশন ও দেশবাসীর জন্য আরেকবার উদ্যাপনের উপলক্ষ হতে আমরা এটি জিততে চাই। আর সেটি আমরা করে দেখাব ইনশা আল্লাহ্। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ফাইনালে মুখোমুখি হবে নেপাল ও বাংলাদেশ।