টমাস টুখেল, গ্রাহাম পটার, ব্রুনো সালতোর ও ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড—গত মৌসুমে চার-চারজন কোচের অধীন খেলেছে চেলসি, কিন্তু লাভ হয়নি। শিরোপা জেতা দূরে থাক, এ মৌসুমে কোনো ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নিতে পারেনি। লন্ডনের ক্লাবটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শেষ করেছে ১২তম অবস্থানে থেকে, যা ছিল এ শতাব্দীতে তাদের সবচেয়ে বাজে মৌসুম।
দুঃসময় ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে মরিসিও পচেত্তিনোকে নতুন কোচ বানিয়ে এনেছে চেলসি। প্রাক্-মৌসুম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত প্রিমিয়ার লিগ সামার সিরিজে পচেত্তিনোর অধীন ট্রফি জিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাসও দিয়েছে। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগের প্রথম দুই ম্যাচে আবার ছন্দপতন।
লিভারপুলের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়েস্ট হামের কাছে ৩-১ ব্যবধানে হার। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে চেলসির কোচ হিসেবে পচেত্তিনোর প্রথম জয়ের অপেক্ষা তাই বেড়েই চলেছিল।
চেলসি ও পচেত্তিনোর দীর্ঘ অপেক্ষা ফুরিয়েছে অবশেষে। ঘরের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে গত রাতে নবাগত লুটন টাউনকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে লন্ডনের ক্লাবটি। তিন গোলেই অবদান রাহিম স্টার্লিংয়ের। ইংলিশ এই ফরোয়ার্ড নিজে করেছেন জোড়া গোল, অন্যটি করিয়েছেন তরুণ সতীর্থ নিকোলাস জ্যাকসনকে দিয়ে।
এর মধ্য দিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ঘরের মাঠে মার্চের পর প্রথম জয় পেল চেলসি, সময়ের হিসাবে ১৭৩ দিন। সর্বশেষ গত ৪ মার্চ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে লিডসের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল চেলসি। সেই লিডস এবার অবনমিত হয়ে নেমে গেছে ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নশিপে, আর গত রাতের প্রতিপক্ষ লুটন টাউন এবারই প্রথম শীর্ষ স্তরে উঠে এসেছে।
ম্যাচের ১৭ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে চেলসিকে এগিয়ে দেন স্টার্লিং। মালো গুস্তোর কাছ থেকে বল পেয়ে লুটনের তিন ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়েন ডি বক্সে। এরপর বাঁ পায়ের শটে দুরূহ কোণ দিয়ে জাল খুঁজে নেন।
এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় চেলসি। এই ম্যাচ থেকে যে তারা অন্তত ১ পয়েন্ট তুলে নিচ্ছে, সেটাও তখন একরকম নিশ্চিত হয়। নিজেদের মাঠে প্রিমিয়ার লিগে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেছে, সর্বশেষ এমন ৯৯ ম্যাচে যে হারেনি তারা! কাল নিয়ে সংখ্যাটা ১০০-এর মাইলফলক (জয় ৮১, ড্র ১৯) ছুঁয়ে ফেলল।
দ্বিতীয়ার্ধে সেই স্টার্লিংয়ের গোলেই ব্যবধান ২-০ করে চেলসি। এবারও অ্যাসিস্ট করেন গুস্তো। ৬৮ মিনিটে তাঁর নিচু করে বাড়ানো ক্রস থেকে বল পেয়ে যান স্টার্লিং। এবার জাল কাঁপান ৮ গজ দূর থেকে।
৭ মিনিট পর আরেক গোল করে চেলসি। এ দফা গোলের জোগানদাতার ভূমিকায় স্টার্লিং। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে তিনি দারুণ ক্রস বাড়ান জ্যাকসনকে। লুটনের দুই ডিফেন্ডারের মাঝামাঝি থাকলেও বাঁ পায়ের টোকায় গোল করতে কোনো সমস্যা হয়নি সেনেগালের ফরোয়ার্ডের। চেলসির জার্সিতে এটাই তাঁর প্রথম গোল।