পয়েন্ট হারানোর হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছে নতুন রূপের পিএসজি
পয়েন্ট হারানোর হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছে নতুন রূপের পিএসজি

ফ্রেঞ্চ লিগ আঁ

নেইমার–এমবাপ্পেহীন পিএসজি শুধু খেলল, গোল পেল না

পিএসজি ০: ০ লোরিয়াঁ

লি কাং ইন, গনসালো রামোস, মার্কো আসেনসিও। মেসি, নেইমার, এমবাপ্পের জায়গায় তাঁদের খেলতে দেখে থাকলে যে কেউ বলতেন, এই পিএসজিকে চেনাই দায়!

শুধু লি, রামোস, আসেনসিওই নন; নতুন রূপের পিএসজিতে অভিষেক হয়েছে আরও ৩ জনের—মানুয়েল উগারতে, লুকাস এরনান্দেজ আর মিলান স্ক্রিনিয়ারের। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ বিবেচনায় আনলে অভিষেক হলো কোচ লুইস এনরিকেরও। কিন্তু পিএসজির নতুন প্রকল্প শুরুতেই ধাক্কা খেল। ফ্রেঞ্চ লিগ আঁ–তে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেইমার–এমবাপ্পেহীন পিএসজি লোরিয়াঁর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করল।

বলের দখল নিজেদের কাছে রেখে আক্রমণে ওঠা—স্পেনের কোচ হিসেবে এনরিকেকে যে কৌশলে দেখা গেছে, পিএসজির দায়িত্বে এসেও একই কৌশল অবলম্বন করলেন। ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে ৭৮% বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁর দলের। নতুন মোড়কের দলটা ম্যাচজুড়ে দাপটও দেখাল। শুধু জয়সূচক গোলটাই পাওয়া হলো না।

এনরিকের কোনো কৌশলই আজ কাজে আসেনি

মেসি না হয় চুক্তির মেয়াদ শেষে পিএসজি ছেড়েছেন। কিন্তু এমবাপ্পে ও নেইমার কাগজে–কলমে এখনো পিএসজির খেলোয়াড়। তবে এমবাপ্পে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে না চাওয়ায় ও নেইমার ক্লাব ছাড়তে চাওয়ায় বড় দুই তারকাকে এই ম্যাচের স্কোয়াডেই রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও স্কোয়াড ঘোষণার পর পিএসজি দাবি করে, নেইমারের ছোটখাট চোট থাকায় দলে রাখা হয়নি। যে কারণেই হোক, নেইমার–এমবাপ্পেকে না রাখার মাশুল দিতে হলো লিগ মৌসুমের শুরুতেই পয়েন্ট হারিয়ে।  

ক্লাবের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হলেও সতীর্থদের উজ্জীবিত করতে স্টেডিয়ামে এসেছিলেন এমবাপ্পে। সঙ্গে ছিলেন বার্সেলোনা ছেড়ে সদ্য পিএসজিতে যোগ দেওয়া উসমান দেম্বেলে। ম্যাচজুড়ে সতীর্থরা একের পর এক গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন। আর টিভি ক্যামেরা খুঁজে নিয়েছে ভিআইপি বক্সে থাকা এমবাপ্পেকে। কখনো তিনি হাসছিলেন; মনে মনে হয়তো বলছিলেন, ‘আমাকে বসিয়ে রাখলে দলের কী হাল হয় দেখো।’ কখনো আবার তাঁর চাহনিতে ছিল হতাশার ছাপ।

পিএসজির স্কোয়াড থেকে বাদ পড়লেও সতীর্থদের খেলা দেখতে এসেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে

নতুন রূপের পিএসজি পুরো স্কোয়াডকে তো ঢেলে সাজিয়েছেই, এমনকি নেতৃত্বেও বদল এনেছে। নিয়মিত অধিনায়ক মার্কিনিওসকে বসিয়ে রেখে অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী তুলে দেওয়া হয় দানিলো পেরেইরার হাতে। মার্কিনিওস মাঠে নামেন ম্যাচের একদম শেষ ভাগে এসে। কিন্তু লাভ হয়নি।

পিএসজি গোলের জন্য শট নেয় মোট ১৯টি, যার ৪টি ছিল লক্ষ্যে। আর লোরিয়াঁর ৪ শটের একটিও লক্ষ্যে ছিল না।

ম্যাচের ৮ মিনিটে প্রথম বলার মতো সুযোগ পায় পিএসজি। ডি বক্সের বাইরে থেকে অভিষিক্ত গনসালো রামোসের বাঁ পায়ের শট ঝাঁপিয়ে এক হাতে ফেরান লোরিয়াঁ গোলরক্ষক ভোন এমভোগো। ৩৬ মিনিটে প্যারিসিয়ানদের সামনে আসে আরেকটি দারুণ সুযোগ। এবার ডিফেন্ডার এরনান্দেজের ভলি উড়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।

পিএসজিকে রুখে দেওয়ার আনন্দ লোরিয়াঁর খেলোয়াড়দের। সে আনন্দে শামিল হয়েছিলেন ধর্ষণ মামলা থেকে রেহাই পেয়ে ফুটবলে ফেরা বেঞ্জামিন মেন্দিও

বিরতির পর নিজেদের আরও গুছিয়ে নেয় পিএসজি। ৭৬ মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল। এ দফায় স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফাবিয়ান রুইজের প্রচেষ্টা দারুণ দক্ষতায় ঠেকান এমভোগো। আর যোগ করা সময়ে কার্লোস সোলেরের দূর পাল্লার বুলেট গতির শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের।